আমার বলার মতো কোন গুণ নেই কিন্তু অনেক মন্দ দিক আছে আহত দেড় বছর বয়সী সাফুয়ান হাসপাতালে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। অবুঝ শিশুটি কথা বলতে শেখেনি। তাই মাথা ঘুরিয়ে বারবার যেন তার মাকে খুঁজছিল। সাফুয়ান কী করে বুঝবে একই দুর্ঘটনায় তার মা মারা গেছেন। মুমূর্ষু বাবা হাসপাতালে লড়ছেন মৃত্যুকে জয় করার জন্য।
এমন মর্মস্পর্শী দৃশ্য চোখে পড়ে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে। সাফুয়ান হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক সালাউদ্দিন সালুর শিশুসন্তান। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নরসিংদীতে সড়ক দুর্ঘটনায় সাফুয়ানের মা কোহিনুর বেগম, নানি নূরজাহান বেগমসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়। মারাত্মক আহত হন বাবা সালাউদ্দিন সালু।
নরসিংদী সদর মডেল থানার সার্জেন্ট মনিরুজ্জামান বলেন, সাফুয়ান প্রাইভেট কারে চালকের পাশে দুই গৃহপরিচারিকার কোলে বসা ছিল।
দুর্ঘটনায় প্রাইভেট কারটি যাত্রীবাহী বাসের ভেতরে ঢুকে পড়ে। এতে দুই গৃহপরিচারিকার মধ্যে ইয়াছমিন আক্তার মারা যান, তবে বেঁচে আছেন বিলকিছ আক্তার। ঘটনার পরপরই উদ্ধার করতে আসা লোকজন সাফুয়ানকে দেখে জানালার কাচ ভেঙে উদ্ধার করে। সাফুয়ানকে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, সাফুয়ান একটু পরপর কেঁদে উঠছে।
এর পরই মাথা ঘুরিয়ে কাকে যেন খুঁজছে। সাফুয়ানের পাশে ছিলেন হাসপাতালের পরিচ্ছন্নকর্মী ফেরদৌসী আক্তার। তিনি শিশুটির শরীরে হাতের পরশ বুলিয়ে কখনো বা মাথায় হাত দিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন।
পরিচ্ছন্নকর্মী ফেরদৌসী আক্তার বলেন, 'শিশুটিকে কোনোভাবেই শান্ত রাখা যাচ্ছিল না। মাঝেমধ্যে একটু ঘুমালেও পরক্ষণেই আবার জেগে উঠে কী যেন খুঁজতে থাকে।
এই বয়সের বাচ্চারা কি মাকে ছাড়া থাকতে পারে?
মা ও বোনের মৃত্যুর সংবাদ শুনে জেলা হাসপাতালে ছুটে আসেন সাফুয়ানের মামা কামাল উদ্দিন। ভেঙে পড়েন কান্নায়। তিনিও যে সাফুয়ানের মতো মাকে হারিয়েছেন একই দুর্ঘটনায়!
নরসিংদী জেলা হাসপাতালের আবাসিক কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. মিজানুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, দুর্ঘটনায় শিশুটি শরীরে আঘাত পেয়েছে। এতে তার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। বিকেল ৩টার দিকে আহত বাবার পাশাপাশি শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।