জীবনটা যেন এক বর্ণীল প্রজাপতি নদী ও নৌকা (শিশুদের আঁকা)
পরশু আপু ফোন করে জানিয়েছে ওনার “ফার্স্ট ইয়ার এ-সেকশন” ক্লাসটা যেন আমি নিই। এ মাসের প্রথম সপ্তাহে বি-সেকশন এর ক্লাস নিতে গিয়েই জানতাম থার্ড অথবা ফোর্থ উইকে ক্লাস নিতে হবে। শুধু নিশ্চিত হবার জন্য আবারো ফোন করে জেনে নিতে হবে। আমি ফোন করে জেনে নেবো ভাবছিলাম, তার আগেই আপু নিজেই জানিয়ে দিয়েছেন।
পরশু কথা দিয়ে ফেললেও কাল রাত হতে আমার খুব জ্বর।
তারপরেও রাতে তো বটেই সকালেও সকাল সকাল উঠেছি ক্লাস নেবার উছিলাতেই। হাজার হোক, কথা দিয়ে ফেলেছি আপুর ক্লাসটি নেবো। উনিতো আমার উপর দায়িত্ব দিয়ে নিশ্চিন্ত হয়েই ওনার জরুরী কাজে গিয়েছেন। সুতরাং...
আজ দিন ছিলো ফকফকা। রোদেলা।
উজ্জ্বল। তবুও বুদ্ধি করে ছাতা সাথে নিয়েই নিয়েছি। ক্যামেরাটাও নিয়ে নিয়েছি; বড় সাইজের ভেনিটি ব্যাগেই সবকিছু ভরে নিলাম।
আজ ক্লাস নিতে গিয়ে ফাঁকে ফাঁকে জিজ্ঞেস করে জেনে নিলাম, কে কোন্ ক্লাসে পড়ে। কোন্ স্কুলে পড়ে।
খাতায় লেখা ৩৮ জনের মধ্যে আজ উপস্থিত পেয়েছি ২২জনকে; তার ভেতরে নাম প্রেজেন্ট করেছে ১৮জন। বাকিদের কে কে রোল কল এর সময় বলেনি, তা বার বার জিজ্ঞেস করেও হদিশ করা গেলো না। উপস্থিত পিচ্চিগুলোর কিছু ওয়াইডাব্লিউসিএ স্কুলে পড়ে; কিছু রাজাবাজার স্কুলে, কিছু অন্যান্য স্কুলে। বেশিরভাগই পড়ে “কেজি-ওয়ান”-এ; একজন আছে নার্সারীর ছাত্র; আর একজন আছে ক্লাস ওয়ানে পড়ে।
আপু আমাকে বলে দিয়েছিলো নিজের মত করে যেন ক্লাসটা নেই।
আমি বাসায় বসে ভাবছিলাম, কি করতে দেবো ওদেরকে। পরে ক্লাসে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, ওরা কি কি এঁকেছে এই পর্যন্ত। জিজ্ঞেস করার সময়েই কারো কারো বাড়ির কাজে দেখতে পেলাম, নদী ও নৌকা আঁকা। আমি জিজ্ঞেস করে জেনে নিলাম, তাদেরকে ওটা করানো হয়েছিলো কিনা। তারপরে, ঐটাই দিলাম আঁকতে আর বললাম, “কেমন আঁকতে পারো দেখাও আমাকে!”
সাত বছরের চেয়ে কমবয়সী বাচ্চাগুলো সোৎসাহে নিজেদের কাজ শুরু করে দিলো।
আমিও হেঁটে হেঁটে একেক জনের কাছে গিয়ে অথবা দূর থেকে উৎসাহ দিতে থাকলাম।
{ আজ কি কারনে যেন যে কক্ষতে সবসময় ওদের ক্লাস হয় তা থেকে সরিয়ে আরেক কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সবাইকে। এই পিচ্চিটা এসে প্রথমে নিজের ক্লাসরুম খুঁজে পায়নি। তার উপর নিজেদের নিয়মিত টিচারকেও দেখছেনা। এই কারনে কান্না জুড়েছে।
মাসি পিচ্চিটাকে আমার কাছে নিয়ে এসে দেখিয়ে দিলো, "এই যে তোমার মিস। আর উপস্থিত বাচ্চাদেরকে দেখিয়ে বললো, এই যে তোমার বন্ধুরা। " আমি পিচ্চির কান্না থামানোর জন্য মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললাম, "তোমার টিচারের অসুখ করেছে তো, তাই আজ আমি এসেছি। কান্না করোনা, কেমন?" আমার কথায় কাজ হলো।
আজকে এই পর্যন্তই।
আবার জ্বর আসতেছে। আর ভাল্লাগছেনা!! ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।