আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এতো লাশ নয়, এ আমাদের দুঃস্থ, রুগ্ন মানবতা.....................।

অন্তহীন পথে আমার নিরন্তর ছুটে চলা...... দীর্ঘ ১২ ঘণ্টা ধরে দায়িত্ব এড়ানোর নাটকীয়তা শেষে নরসিংদীর বেলাব ও কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া পুরনো ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে দুই ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করেছে রায়পুরা থানার পুলিশ। জানা যায়, বুধবার বিকেল ৪টার দিকে স্থানীয় লোকজন ব্রহ্মপুত্র নদে মৃতদেহ দুটি ভেসে থাকতে দেখে ভৈরব থানার পুলিশকে খবর দেয়। কিন্তু মৃতদেহগুলো বেলাব থানার জলসীমায় পড়েছে_এমন অজুহাত দেখিয়ে উদ্ধার না করেই ফিরে যায় ভৈরব থানার পুলিশ। পরে রাত ১০টার দিকে বেলাব থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই স্থানকে রায়পুরা থানার এলাকা বলে দাবি করে। খবর পেয়ে রাতেই রায়পুরা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তা বেলাব থানার এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করলে তিন থানার কর্মকর্তাদের মধ্যে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়।

বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা তৎপর হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে গতকাল ভোর ৪টার দিকে রায়পুরা থানার পুলিশ মৃতদেহগুলো উদ্ধার করে। পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা গতকাল কালের কণ্ঠকে জানান, যে থানার সীমানায় লাশ পাওয়া যায়, এর দায়দায়িত্ব ওই থানার ওপর পড়ে। নিজেদের দায়িত্ব এড়াতেই হয়তো দীর্ঘ ১২ ঘণ্টার নাটকীয়তার জন্ম দিয়েছে তিন থানা। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বেলাব উপজেলার ইব্রাহীমপুর ও ভৈরব পৌর শহরের জগন্নাথপুর কাদির বঙ্ সরকারের ঘাটের পাশ দিয়ে প্রবাহিত পুরনো ব্রহ্মপুত্র নদে প্রথমে লাশ দুটি ভেসে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন ভৈরব থানায় খবর দেয়। পরে ভৈরব থানার এসআই আবু ফরহাদের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ছোট ডিঙি নৌকা দিয়ে একটি লাশ ভৈরবের জগন্নাথপুর মহল্লার কাদির বঙ্ সরকারের ঘাটে টেনে নিয়ে আসে।

কিন্তু মৃতদেহগুলো উদ্ধার না করে আবার নদীর মধ্যে ভাসিয়ে ফিরে যায় তারা। ফলে লাশগুলো ভেসে নদীর নরসিংদীর অংশে এসে আটকে থাকে। লাশ উদ্ধার না করা প্রসঙ্গে ভৈরব থানার ওসি শাহজাহান কবির জানান, লাশ দুটি বেলাব থানার জলসীমায় পড়ায় তা উদ্ধার করা হয়নি। এদিকে রাত ১০টার দিকে গণমাধ্যমকর্মীরা বেলাব থানার ওসির কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি জানান, এ ধরনের কোনো সংবাদ তাঁর জানা নেই। বিষয়টি নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিজয় বসাককে অবহিত করলে তিনি বেলাব থানার ওসিকে ঘটনাস্থলে যাওয়ার নির্দেশ দেন।

ওসি ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই স্থানকে রায়পুরা থানার নামাপাড়া এলাকা বলে দাবি করেন। খবর পেয়ে রায়পুরা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তা বেলাব থানার ইব্রাহীমপুর এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করেন। এ নিয়ে তিন থানার উপস্থিত কর্মকর্তাদের মধ্যে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়। এ অবস্থায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিজয় বসাক তিন থানার সঙ্গে আলোচনা করে রায়পুরা থানার পুলিশকে লাশ উদ্ধারের নির্দেশ দেন। পরে গতকাল ভোরে লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।

রায়পুরা থানার পুলিশ জানায়, দুটিই পুরুষের লাশ। তাদের বয়স ৩৫ থেকে ৪০-এর মধ্যে। তাদের একজনের পরনে ছিল লুঙ্গি, অন্যজনের লুঙ্গি ও গেঞ্জি। তবে কারো গায়ে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। লাশে পচন ধরে গেছে।

ধারণা করা হচ্ছে, দুই থেকে তিন দিন ধরে লাশ দুটি নদীতে ভাসছিল। এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুত পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা জানান, লাশ দুটির ময়নাতদন্তে যদি হত্যার প্রতিবেদন আসে, তাহলে সংশ্লিষ্ট থানায় হত্যা মামলা রেকর্ড করা হবে। এতে থানায় মাসিক প্রতিবেদনে হত্যা মামলার সংখ্যা বেড়ে যাবে। পাশাপাশি অজ্ঞাতপরিচয় লাশের ময়নাতদন্ত ও দাফনে সরকারি নগণ্য বরাদ্দ দেড় হাজার টাকা হওয়ায় কোনো পুলিশ দায়িত্ব নিতে চায় না। এসব কারণে থানাগুলো মৃতদেহ উদ্ধার করেতে চায়নি।

click ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।