গত এক যুগ ধরে সৃষ্টিকর্তার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন নব্বই দশকের পর্দা কাঁপানো বলিউডের অভিনেত্রী মমতা কুলকার্নি। দীর্ঘ এ সময়টাতে রূপচর্চা তো দূরের কথা, আয়নায় নিজের মুখটিও দেখেননি তিনি। ‘অটোবায়োগ্রাফি অফ অ্যান যোগিনী’ শিরোনামে আধ্যাত্মিক একটি বইও লিখেছেন ৪১ বছর বয়সী এ তারকা অভিনেত্রী।
দীর্ঘদিন লোকচক্ষুর অন্তরালে ছিলেন মমতা। এর পেছনের কারণ সম্পর্কে সম্প্রতি এক সাক্ষাত্কারে তিনি জানান, ‘গত ১২-১৩ বছর আমি কোথায় ছিলাম, কী করেছি— তা আমার পরিবারের সদস্যেরাও জানতেন না।
তারকাদের ঝলমলে রঙিন জীবন ছেড়ে আমি যে পুড়ে পুড়ে ছাই হচ্ছিলাম, তা তাঁরা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি। আধ্যাত্মিক জগতের নিয়ম পালন করতেই লোকচক্ষুর অন্তরালে থাকতে হয়েছে আমাকে। ’
মমতা আরও বলেন, ‘আমি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৮ ঘণ্টাই ঈশ্বরের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছি। বাইরের জগতের সঙ্গে যোগাযোগের ফুরসতই মেলেনি। এক যুগ আমি কোনো ছবি দেখিনি, বিউটি পার্লারে যাইনি, মেকআপ করিনি।
এমনকি আয়নায় নিজের মুখটিও দেখিনি। ’
বলিউডে তুমুল জনপ্রিয়তা পাওয়ার পরও কেন রুপালি জগেক বিদায় জানিয়েছিলেন—এমন প্রশ্নের জবাবে মমতার উত্তর, ‘কেবল পার্থিব জগতে বিচরণের জন্যই নয়, ঈশ্বরের সেবায় নিয়োজিত হওয়ার জন্যও কেউ কেউ জন্ম নেয়। ’ সম্প্রতি এক খবরে এমনটিই জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।
বলিউডে প্রত্যাবর্তনের পরিকল্পনা আছে কি না জানতে চাইলে স্মিত হেসে মমতা বলেন, ‘দুধ থেকে ঘি তৈরি করা সম্ভব। কিন্তু ঘি থেকে কি আর দুধ পাওয়া যায়? একটা সময়ে আমার আরাধ্য ছিলেন শাহরুখ খান, সালমান খান এবং আমির খানের মতো তারকারা।
কিন্তু এখন আমি শুধুমাত্র ঈশ্বরের আরাধনা করি। ’
এক সময়ের কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী ভিকি গোস্বামীর সঙ্গে মমতার বিয়ের খবর চাউর হয়েছিল গত মে মাসে। কিন্তু নিজেকে অবিবাহিত দাবি করেছেন মমতা। এ প্রসঙ্গে তাঁর ভাষ্য, ‘এখন পর্যন্ত কারও সঙ্গে আমার বিয়ে হয়নি। আমি ভিকিকে ভালোবাসি।
কিন্তু সেও জানে, আমি ঈশ্বরকেই সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি। আমার প্রায়শ্চিত্ত শেষ হওয়ার পর ভিকি মুক্ত জীবন ফিরে পেয়েছে। এটাই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া। ’
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন লোকচক্ষুর অন্তরালে থাকার পর হঠাত্ করেই গত মে মাসে খবরের শিরোনামে আসেন মমতা কুলকার্নি। প্রকাশিত খবরে বলা হয়, দুবাইতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত মাদক ব্যবসায়ী ভিকি গোস্বামীকে মুক্ত করতে ২০১২ সালের নভেম্বরে তাঁর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন মমতা।
বিপুল পরিমাণ মাদক পাচারের সময় দুবাইতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন ভিকি। ১৯৯৭ সালে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় তাঁকে। দুবাইতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত কোনো আসামিকে ২৫ বছর জেল খাটতে হয়। তবে ভালো আচরণসহ আরও কিছু শর্তপূরণ সাপেক্ষে নির্ধারিত সময়ের আগেই মুক্তি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে সেখানে। গত বছর ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলামি রীতি অনুযায়ী মমতাকে বিয়ে করেন ভিকি।
এর পরপরই তিনি মুক্তি পান। তাঁকে মুক্তি দেওয়ার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়, তিনি বদলে গেছেন এবং ভালো মানুষে রূপান্তরিত হয়েছেন। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।