আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তুই নেই তাই.........(শেষ পর্ব সারাবেলা)

প্রথম পর্ব ২য় পর্ব তৃয় পর্ব চতুর্থ পর্ব সেলটা হাতে নিয়ে চুপচাপ বসে আছে মৌ। রুমের দরজা বন্ধ। এত সকালে ফুপির ঘুম থেকে জেগে ওঠার অভ্যেস নেই। এই অসময়ে মৌকে এ বাড়িতে আসতে দেখে পুরোনো দারোয়ান জমির আলি ঠিক যেমনটা অবাক হয়েছে, ততটাই অবাক হয়েছে রান্নার কাজে লাগা নতুন বুয়াটাও। কেউ কিছুই জিগাসা করেনি তাকে।

মৌও কিছু না বলে নিজের রুমে এসে ঢুকেছে। ভাবছে অফিসে কল করে জানিয়ে দেবে আজ সে আর যাচ্ছেনা। কিন্তু সেলটা হাতে নিয়ে চুপচাপ বসেই আছে মৌ। অনিচ্ছা স্বত্বেও বার বার সেল স্ক্রিনে চোখ যাচ্ছে তার। একরাশ অভিমানের পরেও দৃঢ় এক বিশ্বাস, একটা কাংখিত ফোন কলের বা একটা এস এম এস এর।

ওকে অবাক করে দিয়ে মিনিটের পর মিনিট ফোনটা নীরব থেকে যায়। বহু কাংখিত ফোনকল বা এস এম এস আসেনা। দুঃসহ এক অব্যাক্ত কষ্টে ভেঙ্গে যাচ্ছে বুকটা। নাহ উঠে দাঁড়ায় মৌ। ৮:২০ বাজে।

ডিসিশন চেন্জ করে সে। অফিস যাবার জন্য রেডী হতে পা বাড়ায় কাপড়ের আলমারীটার দিকে। এই সকাল ৯টাতেই রাজপথ মুখর হাজারো অফিসযাত্রী, বাস, প্রাইভেট কার পথচারী আর স্কুলগামী শিশুদের মুখরতায়। হকার, ভিক্ষুক প্রতিদিনকার নিয়মিত ব্যাস্ততা, জ্যাম এত সবকিছুর মাঝেও প্রথম সিগন্যালটাতেই ড্রাইভিং সিটে বসে মৌ এর মনে হয় ওর চারদিক ঘিরে এক সুবিশাল শুন্যতার হাহাকার। সবকিছু বুঝি চারিদিকে থমকে গেছে।

ওর চারিদিকে নেমে এসেছে এক গভীর বিষাদ। কোলাহলহীন এক প্রেত নগরীতে সে যেন বড় একা। দীর্ঘশ্বাস পড়ে। অস্ফুটে বলে, তুই নেই তাই এই ব্যস্ত শহর বড় নিস্তব্ধ লাগে তুই নেই তাই চারিদিক কোলাহল বড় স্তব্ধ লাগে........... অভিমানে গলার কাছটায় চাপ ধরা একরাশ ব্যাথা। সবুজ বাতিটা জ্বলতেই ফের গাড়িতে স্টার্ট দেয় মৌ।

চারিদিক ঝাপসা । জলে চোখ ভরে আসছে বার বার। অফিসে পৌছুতে বেশ লেট হয়ে যায় আজ। ওর দিকে তাকিয়েই শর্মী আপু চমকে ওঠে, - কি হয়েছে মৌ? শরীর খারাপ? -কিছু না আপু। আমি ঠিক আছি।

- ঠিক আছো মানে? তোমাকে এমন সিক দেখাচ্ছে কেনো? শর্মী আপু ওর দিকে এগিয়ে আসেন। ঝরঝর করে কেঁদে ফেলে মৌ। শর্মী আপু তাড়াতাড়ি ওকে ধরে চেয়ারে বসান। -বুঝেছি ফের ঝগড়া না? আচ্ছা মৌ তুমিই বলো রুমি কি বাচ্চা? ওকে কেনো তুমি বাচ্চাদের মত ট্রিট করো? আরে বাবা আজকাল দু বছরের বাচ্চারাও তো নিজেদের অমতে কিছুই করতে চায়না। - আচ্ছা দাঁড়াও এখুনি রুমিকে বকা দিয়ে দিচ্ছি।

শর্মী আপু ফোন দিতে চায় রুমিকে। - না আপু প্লিজ কোনো দরকার নেই । আমি ওর সাথে কোনো কথাই বলতে চাচ্ছিনা এখন। শর্মী আপু হাসতে থাকেন। বলেন, - মাঝে মাঝে মান অভিমান ভালো বুঝলে? নাহলে ভালোবাসাটা ঠিকঠাক জমেনা।

শর্মী আপুর হাজার হাজার উপদেশ বা ভালোবাসার বাণী কানে পৌছোয় না মৌমিতার। চোখে মুখে পানি দিয়ে, অশান্ত মন নিয়েই শান্ত হয়ে কাজে মন দেবার চেষ্টা করে সে। ব্যাংকের কাজে একটু অমনোযোগী হবার সুযোগ নেই। সব সময় ১০১% মন দিয়েই কাজে লেগে থাকতে হয়। তবুও এরই মাঝে মৌ বার বার সেলটা চেক করে।

আর বার বার হতাশ হতে হতে অভিমানে বুকটা ভেঙ্গে যেতে চায়। ফাইল দেখছে, কম্পুটারে হিসেব নিকেষ, সিড়ি ভেঙ্গে উঠছে নামছে সবই যেন যন্ত্রের মত করে চলেছে সে। মাঝে মাঝেই বুক ভাঙা দীর্ঘশ্বাস চেপে ফেলে সে ছোট্ট করেই। কানের মধ্যে বেজে চলে একটাই গানের সূর আর কথাগুলো। সবকিছু বড় এলোমেলো আর শূন্য লাগে।

তুই নেই তাই পুরোনো শহর ঝা চকচকে তুই নেই তাই এই লোকগুলো বড় বাজে বকে তুই নেই তাই রোদ পিঠে দিয়ে দুপুর গড়ায়ে তুই নেই তাই শীতের সকাল জ্যোসনা ছড়ায়ে। তুই নেই তাই.......... তুই নেই তাই ................ রাত ৩:৪০। সেই সন্ধ্যে থেকেই মেসেন্জার খুলে বসে আছে মৌ চুপচাপ। আকুল দৃষ্টি মনিটরে। রুমি মেসেন্জারে অনলাইন।

তার আইডল আইডিটা জ্বলজ্বল করছে । মাঝে মাঝে আইডল সাইনটা চলে যাচ্ছে। সাথে সাথেই হার্টবিট বেড়ে যাচ্ছে মৌ এর। নড়েচড়ে বসছে সে। এই বুঝি বলে উঠবে রুমি।

-কথা বলিস না কেনো? আমি তোর কেউ না না ? অথবা ভালোবাসিস না আমাকে একটুও । কেমন করে চলে গেলি আমাকে ফেলে? অথবা হঠাৎ একটা BUZZ আর তারপর, - আমি জানি তুই অনলাইনেই আছিস। কথা বল মৌ। আই এ্যাম স্যরি। আর করবোনা, দেখিস এবার ঠিক ঠিক।

কিন্তু আবারও ওকে হতাশ করে দিয়ে রুমির আইডিটা আইডল হয়ে যাচ্ছে। ভীষন কান্না পাচ্ছে ওর। ইচ্ছে করছে রুমিকে শেষ করে ফেলতে। অবাক হয়ে ভাবছে কি করে এমন হয় মানুষ। এই সেই রুমি যাকে কিনা সে তার জীবনের চাইতেও বেশী ভালোবাসে।

বসে বসে লিখে মৌ। তুই নেই তাই ক্লান্ত দুচোখ, তবু রাত্রী জাগে তুই নেই তাই এই পৃথিবীটা বড় শূন্য লাগে। নাহ জোর করে হলেও ঘুমাতেই হবে একটু। নয়তো কাল অফিস যেতেই পারবেনা সে। বিছানায় গিয়ে চোখ দুটো বন্ধ করতেই ফুলে থাকা চোখের জলে বালিশ ভিজে যায়।

সময় গড়িয়ে যায়। মৌ রাত জাগতে পারেনা বলে রুমি কত যে খেপিয়েছে ওকে আর সেই মৌ আজ প্রায় সারারাত পার করে দিলো বলতে গেলে না ঘুমিয়েই। মনে পড়লো সে সন্ধ্যা থেকে কিছুই খায়নি। রুমিটাই বা কি করছে কে জানে? রুমির খিধা তো মৌকেই লাগাতে হয়। -কিরে না খেয়েই ঘুমাচ্ছিস? -হুম খুবই ঘুম পাচ্ছে খেতে পারবোনা।

এখন আমি ঘুমাবো। -হুম। অবশ্য না খাইলেই ভালো। বেশী মটু হয়ে গেলে তোমাকে আমার আর ভালো লাগবেনা। তখন কই থেকে আবার আরেকটাকে যোগাড় করবো! হেসে ফেলে মৌ তন্দ্রাছন্নতার মাঝেও।

কত কথাই না মনে পড়ে। অসহ্য লাগছে পৃথিবীটাকে। সারাটাক্ষন মাথার ভেতর রুমিই ঢুকে আছে। খুব ভোরে উঠে সেলটা চেক করে মৌ। নিজের চোখকেও বিশ্বাস হয়না।

নো এস এম এস নো মিসকল। চুপ করে বসে থাকে বারান্দার দোলনাটায়। সেই উনিশ বছর বয়স থেকেই বাবা মা সবাইকে ছেড়ে ফুপির কাছে মৌ। যে কোনো সুখে ও দুঃখে সে এইখানেই নিবিষ্ঠে বসে পার করে দিতে পারে ঘন্টার পর ঘন্টা। হঠাৎ ফুপি উঠে আসে।

এত সকালে ফুপিকে দেখে মৌ ভীষন অবাক হয়! - তুমি এত ভোরে উঠলে যে আজ ফুপী? সেকথার উত্তর না দিয়ে ফুপি জানতে চান। - কি হয়েছে তোর? এমন মন মরা হয়ে আছিস। রুমি কোথায়? কাল থেকে তো একবারও তোকে ফোনেও কথা বলতে দেখলাম না ওর সাথে। কি হয়েছে ঠিক ঠাক বল । - কিছু হয়নি ফুপি।

হাসবার ব্যার্থ চেষ্টা করে মৌ। কিছুক্ষন ওর দিকে সন্দিহান দৃষ্টি মেলে উঠে যায় ফুপি । নিশ্চুপ সেলটা হাতে নিয়ে বসে থাকে মৌ। নো এস এম এস , নো মিসকল। চুপি চুপি অস্ফুটে নিজের মনেই বলে, তুই নেই তাই ভোর গুলো সব বর্ণ বিহীন তুই নেই তাই এই ক্ষণগুলো আজ স্বপ্নবিহীন।

http://www.youtube.com/watch?v=etWC5zSADuo অজস্র দিন হেঁটে চলে যায় জেগে থাকা রাত দুর্বিসহ চুপ করে যাওয়া খাম খেয়ালী। নিভে যায় সব তারা অহরহ। দু সপ্তাহ পার হয়ে গেলো। অথচ মৌ এর মনে হয় কত শত বছর পার হয়ে গেছে রুমিকে দেখেনা সে। মৌ এর কাছে সবকিছু স্বপ্ন স্বপ্ন লাগে।

রুমি একটাবার কল করেনি। একটা এসএমএসও না। একটা অফলাইন মেসেজ বা ইমেইল ও না। খুব আশ্চর্য্য লাগে ওর সবকিছু। এর নাম কি ভালোবাসা? এই বেইমান ছেলেটাকে এইভাবে ভালোবেসেছিলো সে! রাজপথটাও এঁদো গলি আজ ভুতড়ে বাড়িটা আলো ঝলমল।

নেই কোনো আর ভুলে যাওয়া কাজ কোত্থাও নেই ছুটির মেজাজ। তুই নেই তাই............ অফিসের দিন গুলো যাওবা কাটে ছুটির দিন গুলো কাটতেই চায়না। মনে পড়ে প্রতি ছুটির দিনে নতুন নতুন সব প্ল্যান প্রগামে অস্থির করে তুলতো সে রুমিকে। রুমি বিরক্ত হতো বা বিরক্তি দেখাতো ঠিকই কিন্তু সব কাজেই সব সময় পাশে পাশেই থাকতো তার। আসলেই রুমিকে সেও কম জ্বালায়নি।

রুমি সব সময় মেনে নিয়েছে ওর যত অন্যায় আবদার। রুমি খুবই ফ্রেন্ডলী একটা মানুষ পক্ষান্তরে মৌ খুব স্বার্থপর । সব সময় শুধু রুমিকে ভেবেছে তার পারসোনাল প্রোপার্টি। ওর সব অন্যায় অপবাদ মেনে নিয়েছে রুমি বার বার। ফ্রাইডেজ এর গ্লাস উইন্ডোটার ধারে চুপচাপ বসে থাকে মৌ।

পার্কিং এ ঠিক রুমির ফিল্ডারটার মতই একটা টিনড গ্লাস গাড়ি এসে দাঁড়ায়। অস্থির হয়ে ওঠে মৌ। এটা কি রুমির গাড়ি? উকিঝুঁকি দিয়ে দেখতে চেষ্টা করে সামনের গ্লাসটায় কোনো স্নুপি স্টিকার দেখা যায় কিনা। লেখা আছে নাকি রুমির নাম গাড়িটার গায়? নাহ হতাশ হয় আবারও । এটা অন্য কারো গাড়ি।

গাড়ি থেকে নামে লম্বা চুলের তিনটা ছেলে। একটা ছেলের হাতে ঠিক রুমির মতই গোল্ড ব্রেসলেট। কিন্তু এদের মাঝে কোথাও রুমি নেই। আবারও একটা দীর্ঘশ্বাস গোপন করে ফেলে মৌ....... তুই নেই তাই....... তুই নেই তাই........... সকাল থেকেই আজ ভয় হচ্ছে ওর। এমনিতেই সাপ্তাহিক ছুটির দিন গুলো অসহ্য লাগে।

আজ আবার এর মাঝে সরকারী ছুটি। দম বন্ধ হয়ে আসছে যেন। দশটা বাজতেই বেরিয়ে পড়লো মৌ। এই মার্কেট ঐ মার্কেট ঘুরে দুপুর বানিয়ে বসলো গিয়ে মুভেন পিকে । ওর পাশের টেবিলটাতে ফুটফুটে একটা বাচ্চা মেয়ে।

নাকে মুখে আইসক্রিম লাগিয়ে মনের সুখে খেয়ে চলেছে। সেইদিকে তাকিয়ে মনে পড়ে মৌ এর এমনি এক ফেলে আসা দিনের কথা। -দেখ দেখ কি সুন্দর! আমারও এমনি একটা মেয়ে চাই। - খবরদার। -কেনো খবরদারের কি? -মেয়ের কোনোই দরকার নেই।

ছেলে চা। একদম আমার মত স্বর্গের দেবদূত। (গর্বের হাসি রুমির মুখে। ) - এহ! স্বর্গের দেবদূত না তো আরও কিছু! ভেংচি কাটে মৌ। - নাতো কি? - নরকের বান্দর! -ঐ ভালো হবেনা কিন্তু।

হি হি হাসতে থাকে মৌ। - আচ্ছা যা ফার্স্ট টাইম ছেলে হলে ঐটা আমার। -চোপ। -সেকেন্ড টাইম ছেলে হলে ঐটাও আমার। দেন থার্ড টাইম...... কত বার আর ছেলে হবে তাইনা? যতদিন না মেয়ে হয় ততদিন....... -খবরদার।

চোখ দিয়ে আগুন বের হয় মৌ এর । একদম গলা টিপে দেবো। - আরে!!! কি করলাম আবার আমি! কপট বিস্ময় ঝরে পড়ে রুমির চোখে মুখে। ফের ছোট্ট একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে। তুই নেই তাই তুই নেই তাই ........... টিভিতে নাটক চলছে।

ফুপির জ্বালায় এমনিতে স্টারপ্লাস আর জি সিরিয়াল ছাড়া টিভিতে চোখ রাখবার উপায় নেই। কাজের মানুষগুলোও সব হয়েছে একি। ভাগ্যক্রমে আজ ফুপির একটা বিয়ের দাওয়াৎ আছে। মৌও ছিলো ইনভাইটেড কিন্তু এই ভীষন রকম মন খারাপ নিয়ে ওর যেতে ইচ্ছে করেনা আজকাল কোথাও। বান্দরবনের নীলগিরি।

হানীমুনে এসেছে নায়ক নায়িকারা। এবারের ছুটিতে ওদেরও বান্দরবন যাবার কথা ছিলো। মনে পড়ে মৌ এর। -তুই বান্দরবন গেছিস? - না তুই গেছিস? -গিয়েছিলাম ৬ বছর আগে। -আমাকে ছাড়া কেনো গেলি? - আরে তখন তোকে চিনতাম নাকি! অবাক হয় মৌ রুমির এমন ছেলেমানুষী কথা শুনে।

-তুই যাবি কেন? তোর সাথে কোনো কথা নাই। - হা হা হা আচ্ছা এবার আমার ছুটি হলেই যাবো ওকে? -কই যাবি? -তোমাকে নিয়ে দাবো বান্দরবন। ওকে বাবু? হা হা হা -প্রমিজ কর নিয়ে যাবি। - আরে প্রমিজের কি? নিবোই তো। আর তারপর .... -কি? - পাহাড়ের উপর নিয়ে গিয়ে ধাক্কা দিয়ে উপর থেকে নীচে ফেলে দেবো।

হা হা হা হা । চোখ দুটো জলে ভরে ওঠে মৌ এর । টিভি রিমোর্টের সুইচটা অফ করে দেয়। সন্ধ্যার অন্ধকার ছেয়ে আসছে চারিপাশে। ছাদের রেলিংটার ধারে চুপচাপ বসে আছে মৌ।

এমনি এক সন্ধ্যায় ওর অনেক অনেক প্রিয় এক বন্ধু রুমিকে আপন করে নিয়েছিলো সে একদিন। কফি হাউজে মুখোমুখি বসেছিলো ওরা। রুমি একাই বক বক করে যাচ্ছিলো । মৌ ছিলো নির্বাক। অবাক হয়েছিলো সেদিন সে এই অশান্ত, অবাধ্য, দুর্বোধ্য আর জীবনের প্রতি উদাসীন এই ছেলেটার এমন শান্তভাবে বলে যাওয়া কথাগুলো শুনে।

-আমি সব সময় কি ভাবি জানিস? কতকিছু না পাওয়ার অপূর্নতা নিয়েই আমাকে চলে যেতে হবে। এই দুঃখ তো শেষ হবার না। কাজেই যতটুকু পাই তাই আমি মিস করতে চাইনা ইয়ার। হাসবার চেষ্টা করে রুমি। তুমি আমার কেউই না ।

বাট আমার জীবনের কত বড় পার্ট তুমি। ইগনোর করতে পারছিনা। কতকিছু যেন তোমার সাথেই জড়িয়ে আছে। বাট বুঝতেসি না কি কি? এই জড়ানো জিনিসটা আমি যতই চাই খুলে নিতে পারবো না তো। পড়ে গেছি আমি ফাঁদে।

ভেরী ব্যাড ট্রাপ! মাঝে মাঝে ভাবি, কখনও যদি তুমি চলে যাও আর এই জড়ানো জিনিসটা যদি তোমার সাথেই চলে যায় আর আমার যদি কখনও সেটা অন্য কাউকে দিতে ইচ্ছা করে তখন তো আমি আর কাউকেই তা দিতে পারবোনা। ওর কথা গুলো শুনে সেদিনও চোখের জলের বাঁধ ভেঙ্গেছিলো মৌ এর। আজও ঠিক তাই। চাপা দীর্ঘশ্বাস- তুই নেই তাই....... তুই নেই তাই........ তুই কেনো নেই তাই ভেবে ভেবে বছর ঘোরে তুই কেনো নেই? যেন গায় সেই সব কথা কেনো যে এই সব প্রশ্ন পোড়ায় এ দুচোখ তোর কাছে আজ যাবো উড়ে বলবি অযথা.......... যা বলে বলুক রুমি। ওকে বেহাইয়া, ছোটলোক, নির্লজ্জ যা খুশী তা ভাবুক।

ওকে ভালো থাকতে হলে রুমিকেই চাই ওর। যেই ভাবা সেই কাজ। সবকিছু ঝেড়ে ফেলে এক সকালে নেমে আসে মৌ ফুপির বাসা থেকে। ঠিক যেমন ঝড়ের বেগে বেরিয়ে এসেছিলো একদিন সেভাবেই ফিরে যেতে পা বাড়ায় আজও। গাড়িতে উঠতে গিয়ে থমকে দাঁড়ায়।

গেইটের কাছে হর্নের শব্দ। বহু পরিচিত, বহু কাংখিত সেই শব্দটা। বুড়ো দারোয়ানভাই গেইট খুলে সালাম দেয় রুমিকে। রুমি নেমে আসে। ওর দিকে তাকিয়ে এক চোখ ছোট করে।

মুখে মিটিমিটি হাসি। - কিরে ডেটে যাস? মৌ নিশ্চুপ। কাছে এগিয়ে এসে ওর হাতটা ধরে রুমি। - চল কোন বয়ফ্রেন্ডের কাছে যাবি? তোকে নামায় দিয়ে আসি। মৌ এর চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।

রুমি এক হাতে ওর চোখের জল মুছিয়ে দিয়ে ওকে গাড়িতে উঠায়। মৌ একটা কথাও বলতে পারছেনা। অনেক অনেক অভিমানে আর অপ্রতিরোধ্য কান্নায় গলা বুজে আসছে ওর। প্রায় ঘন্টা খানেক হয়ে গেছে। এ সতেরো দিনে মৌ এর সাধের সাজানো গুছানো বাড়ির সতেরো দুগুনে চৌত্রিশটা বাঁজিয়েছে রুমি।

একগাঁদা পেপার, চিপসের প্যাক, বিস্কিটের কৌটার মাঝেই লিভিং স্পেসটায় নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে মুখোমুখি বসে আছে ওরা। কারণ মৌ মাঝে মাঝেই হাতের কাছে যা পাচ্ছে ছুড়ে মারছে রুমির দিকে। বাপরে! যে পাগলী বলাও যায়না ছুড়ে মারার সময় তো তাকিয়েও দেখবে না হাতে কি আছে। চোখের জল এখনও বাঁধ মানছেনা মৌ এর। তারই সাথে বুঝি বাঁধ ভেঙ্গেছে ওর মুখেরও আজ।

যা মুখে আসে তাই বলে যাচ্ছে সে এই একঘন্টা পাঁচ মিনিট ধরে। -হারামির বাচ্চা। বেহাইয়া লজ্জা করেনা তোর..........কুত্তা কোথাকার....নেমক হারাম। এই তোর ভালোবাসা? হারামি তোকে আমি শেষ করে ফেলবো........খুন করে ফেলবো তোকে.......তোকে আমি .........তোকে আমি......... - ওকে, যা করার তাড়াতাড়ি কর । লেট করতেসিস কেন? -চোপ।

একদম চুপ থাক। চোরের মার বড় গলা। আবার বেহাইয়ার মত কথা বলিস..... -তুই কিন্তু আমাকে তুই তুই করতেসিস অনেকক্ষন যাবৎ। আর আরেকটা কথা চোরের মা না চোরের বাবা। হে হে হে - আবার???ভালো করতেসি!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!! হারামি........বেহাইয়া .......কুত্তা.... রুমি আর সহ্য হয়না বুঝি।

কিছু না বলে উঠে গিয়ে জাস্ট মৌ এর মুখটা বন্ধ করে দেয় ওর নিজস্ব স্টাইলে। খানিকপরে ছাড়া পেয়ে চোখ রাঙ্গিয়ে মৌ বলে ওঠে......... বিপ বিপ বিপ.......... তারপর দুজনেই হাসতে থাকে........... To be completely honest It scares me to imagine What life would be without you And for this very reason I ask you to forgive me For what I'm putting us through Although there are so many things Against us, I've decided That I'm not giving you up, no... Thinking back, I see what we have Is something different I think we've known all along So how fair would it be To divide this love's existence Between what's right and what's wrong And you, always wondering if we'll make it Time will tell you That I'm not giving you up, no, no... We'll find a way to be together However long it takes, wherever If it means having you for only a moment A moment just might be enough I'm not giving you up, no No I'm not giving you up, no Screaming in the silence the promises we've spoken Come back to haunt me, false and broken Quiet desperation to see we're lost forever Searching for water in the desert No, I refuse to have to do Without your kisses I'm not giving you up, no, no We'll find a way to be together However long it takes, wherever If it means having you for only a moment A moment just might be enough I'm not giving you up, no No I'm not giving you up, no No I'm not giving you up Click This Link  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।