আমি পড়তে ও লিখতে ভালবাসি ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক অধ্যায় হলেও তা আজ পর্যন্ত জনগণকে কিছুই দিতে পারেনি। বরং দুই প্রধান দল আওয়ামীলীগ ও বিএনপিকে আপাত ভাবে দেশ চালানোর চিরস্থায়ী ক্ষমতা দিয়েছে। বাংলাদেশ আজ ৩ জুলাই তেল গ্যাস কমিটির হরতালে আরেকটি মুক্তিকামী অধ্যায়ে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। আমাদের তরুন প্রজন্ম ও সকল দেশবাসীর সকল ক্ষোভ,প্রতিবাদ এই আন্দোলনে প্রতিফলিত হওয়ার বিদ্যমান নানাবিধ কারণেঃ
১। এত বছর আমরা দেশের এত সমস্যা মোকাবিলার ক্ষেত্রে দুই প্রধান দলের ব্যর্থতা মেনে নিয়েও বারবার ভোট দিয়েছি দেশ শাসন করার জন্য।
প্রতিবারি জনগন দিনে দুপুরে প্রতারিত হয়েছে। কিন্ত দুই দলের অভিন্নতা কেউ ধরতে পারেনি। এই ইস্যুতে পরিষ্কার যে, তারা দেশের স্বার্থ সম্পর্কে কত বেহায়াপনা দেখিয়ে দেশবিরোধী চুক্তিতে সমর্থন জানাতে পারে। শেখ হাসিনা তার দেশপ্রেম নিয়ে যে লাফালাফি করছেন,তিনি কি জানেন,তার বাবা কি করেছিলেন???
“তাজউদ্দীন আহমেদের ভাষ্য অনুযায়ী,তিনি যখন তাঁকে বললেন, ‘মুজিব ভাই,এটা আপনার বলে যেতেই হবে,কেননা কালকে কি হবে,আমাদের সবাইকে যদি গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়,তাহলে কেউ কি তাদের করতে হবে। এই স্বাধীনতার ঘোষণা কোন না কোন জায়গা থেকে কপি করে আমরা জানাব।
যদি বেতার মারফত কিছু করা যায় তাহলে সেটিই করা হবে’। শেখ সাহেব তখন উত্তর দিয়েছিলেন, ‘এটা আমার বিরুদ্ধে একটা দলিল হয়ে থাকবে। এর জন্য পাকিস্তানীরা আমাকে দেশদ্রোহের জন্য বিচার করতে পারবে’। এ কথার পরপরই তাজউদ্দীন অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়ে সংগে সংগে রাত নয়টার পরপরই ৩২ নম্বর ছেড়ে চলে যান” (মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাপরঃকথোপকথন, এ কে খন্দকার এস আর মীর্জা মঈদুল হাসান, পৃষ্ঠাঃ২৮)
ঐ শেখ মুজিব এর সাথে এই শেখ হাসিনার কোন পার্থক্য নাই। চরিত্রে কোন পার্থক্য নাই।
দুজন ই ভীরু অপর শক্তির কাছে। পার্থক্য শুধু সময়ে। অথচ দেশপ্রেমিক এর আসল নজির দেখাতে শেখ হাসিনাকে দেখাতে হত তিনি কিভাবে কোনাকো ফিলিপস কে না করতে পারেন। এই সাহস হাসিনা জন্মগত,পরিবারগত,শ্রেণীগত,দলগত কোন দিক দিয়েই পাননি। বিএনপি ও আ।
লী মনে করে দল তাদের দেশ ও বিদেশ তাদের ঈশ্বর। তাইতো তারা বিদেশ সফরে যায় প্রভুদের কাছে অপর পক্ষের অভিযোগ করতে।
২। এই চুক্তিতে লাভ হবে কাদের? এর সহজ উত্তরঃ সরকারী/বেসরকারী কনসালটেন্ট, এম পি,মন্ত্রী। তাই তো,শামসুল হক টূকু মদ্যপ বেসামাল এর মত বলে ফেলেনঃ “বিদেশি স্বার্থ রক্ষার জন্য তেল গ্যাস কমিটি হরতাল ডেকেছে”।
এত বড় লাভের ভার সামলাতে না পেরে এই ডাম্ব হেডেড নিজেদের দালালি কমিটির উপর চাপাল।
৩। শেখ হাসিনা এখনও মাঝে মাঝে নিজের গান গাইতে থাকেন এই বলেঃ “বিদেশীদের মুচলেকা দেইনি বলে,২০০১ সালে ক্ষমতায় আসতে পারিনি। এখন এটার কোন উত্তর দিচ্ছেন না কেন?
৪। ফুলবাড়িতে জনতার প্রতিবাদে কেয়ার্ন এনার্জী কে তাদের খনন থামাতে হয়েছিল ৩ শহীদের প্রাণের বিনিময়ে।
এটার সাথে ফুলবাড়ির কোন পার্থক্য নেই। ভূমি আর সাগর। আর এই পার্থক্য টাই যত সব টেকনিক্যাল বিষয় হাজির করেছে যা সরকার ও তলাবিহীন প্রচার মাধ্যম গুলো নিজেদের সুবিধামত এই চুক্তির পরিসংখ্যান ব্যবহার করছে।
৫। এটা পরিষ্কার যে, লাভ হবে শুধু দালাল আর মন্ত্রীদের।
আর কার???কারো না। পরিসংখ্যান আর দার্শনিক বিতর্ক অনেক ভাবেই দেখাতে পারবে,এই চুক্তি দেশবিরোধী। তাই, দেশের স্বার্থ ও নিজের স্বার্থের কথা ভেবে এই আন্দোলনকে রাজনৈতিক রূপ দেয়া উচিত।
ঢা বি তে এরকম একটা তেল গ্যাস চুক্তি বিরোধী সমাবেশ এ অপরাজেয় বাংলায় মাইকিং হচ্ছিল। আমি ছিলাম সেই সমাবেশ এ।
আমার পাশে এক ভাই ছিল,উনাকে তার এক বন্ধু এসে বলছিলেন,এরা সারাদিন এত চিল্লাচিল্লি করে কি জন্য??
ঐ ভাইয়ের উত্তরঃ “ধর, তোর বাসায় একটা আম গাছ আছে,গ্রীষ্ম ঋতুতে ঐ গাছে ১০০ টা আম ধরল। হঠাত এক বহিরাগত এসে বললঃ আপনার গাছ থেকে আমি আম পাড়ব, আপনি আমাকে মই দিয়ে সাহায্য করবেন। আপনি আম পাবেন ২০ টা, আমি নিয়ে যাব ৮০টা”
ভাইয়া বললঃ এই টা তুই মেনে নিবি? তার বন্ধুর নির্দিধ্বায় উত্তরঃ কখনো না না না না…
৭১’ এও পশ্চিম পাকিস্তনের বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়েছিলাম আমরা, আজো ঠিক একি পরিস্থিতি। আমাদের ভুখন্ডের উপর আমাদের কোন ক্ষমতা নেই। আমাদের সম্পদের হিসাবে আমাদের কোন অধিকার নেই।
এভাবে চলতে দিলে নিজের শরীরের উপরও দখল চলে আসবে। তখন অনেক দেরী হয়ে যাবে। এখনই সময় প্রতিবাদের…
চুক্তি ও নানা রিপোর্টের লিংক সমূহঃ
১। http://opinion.bdnews24.com/bangla/2011/07/02/সমà§à¦¦à§à¦°à§-à¦à¦¨à¦à§à¦«à¦¿à¦²à¦¿à¦ªà¦¸-à¦à¦°-à¦à§/
২। http://www.prothom-alo.com/detail/date/2011-06-24/news/164771
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।