আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আওয়ামী-বাকশালীদের দাবী ছিলঃ হুমায়ুন আজাদকে জার্মানী জামাতীদের কাছে ঘুষ খেয়ে হত্যা করেছে

আমি চাই শক্তিশালী স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ ২০০৩ সালে পাক সার জমিন রচনা করে প্রয়াত ডঃ হুমায়ুন আজাদ লাইম লাইটে চলে আসেন। তাতে পাকিস্তান রাষ্ট্রের সমালোচনা করতে যেয়ে ইসলাম ও মুসলমানেরও বিষেদগার করেন আজাদ। তা নিয়ে জামাতের দেলোওয়ার হোসেন সাঈদী বইটির সংসদে সমালোচনা করলে তথাকথিত মূক্তমনারা লেখকের স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ, মৌলবাদী, পাকিস্তানী ও জামাতীদের প্রতিক্রিয়াশীলতার অভিযোগ আনে। বস্তুত ভারতীয় কংগ্রেসের ধর্মনিরপেক্ষতার মুখোশে উগ্র হিন্দুত্ববাদ(যা অমর্ত্যবাবুর মন্তব্যে প্রমাণিত) এর কারণেই উপমহাদেশের মুসলমানগণ আলাদা হয়ে দুই পাকিস্তান গঠন করে। যা পশ্চিম পাকি শাসকদের উপনেবেশিক ও বৈষম্য-শোষণের কারনে পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালীরা এক পাকিস্তানের জানাযা পরে সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করে।

আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করলেও আমাদের ইসলাম ধর্ম এবং মুসলমানিত্ব বর্জন করিনি। কিন্তু আজাদ অত্যন্ত ধুরন্ধর কূটকৌশলের মাধ্যমে ইসলামের মূল্যবোধেরও সমালোচনা করেন। তাতে জামাত কেন যেকোন প্রকৃত মুসলমানের রেগে উঠার কথা। বস্তুত এটাকে পুজি করেই আওয়ামী-বাকশালীরা ভারতীয় র এর সাহায্যে চক্রান্ত শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৪ সালের ২১শে বইমেলা চলাকালীন ২৭শে ফেব্রুয়ারীর রাতে আজাদ যখন বাসায় ফিরছিলেন তখন এক নির্জন স্থানে ঘাতকরা তাকে চাপাতি দিয়ে হামলা চালিয়ে মুখ মন্ডল ও শরীরের অন্যস্থানে আঘাত করে।

পরের দিন এই ঘটনার জের ধরে ঢাবি ক্যাম্পাস ও ঢাকা শহড়ের কয়েকটি স্থানে ব্যাপক ভাঙচুর ও জ্বালাও-পোড়াও করে। ঐ হামলার ঘটনায় বলা হয় জোট সরকারের জামাত এই হামলা করেছে। কয়েকটি হরতালও ডাকা হয়। যখন সিএমএইচে আজাদ চিকিৎসাধীন তখন আওয়ামীলীগার ফরিদুর রেজা সাগরের চ্যানেল আই টিভি মিথ্যা খবর দেয় যে হুমায়ুন আজাদ ক্লিনিকালী ডেড যাতে ঢাকা শহড়ে তার উপর প্রথম হামলার ঘটনার মতন আরো ভাঙচুর, জ্বালাও-পোড়াও হয়। পরে জানা গেল যে আজাদ জীবিত ও তার অবস্থা স্থিতিশীল।

তারপর সুস্থ হয়ে বাড়ী ফিরলে জনকন্ঠ, ভোরের কাগজ, আজকের কাগজ(বর্তমানে বন্ধ) নিয়মিত প্রোপাগান্ডা করা হত তাকে ফোনে এবং তার মেয়ে মৌলিকে ও ছেলেকে জামাতীরা নাকি রাস্তায় বিভিন্ন সময় চড়-থাপ্পর মারে ও শাসায় যে তোর বাপকে দেখে নেব। এরই মাঝে পেন(ইন্টার ন্যাশনাল লেখক সমিতি) জার্মানির স্কলারশিপে মিউনিখ যাওয়ার পথে জিয়া বিমান বন্দরে নিজামীর সাথে দেখা হয়। আজাদের কাছে এসে কুশল বিনিময় এবং কোথায় যাচ্ছেন তা নাকি জানতে চান এবং তিনি তা বলেনও। মজার কথা হল আজাদ পেন-স্কলারশীপে জার্মানীতে গেলেও যা নিজামী জানে তারপরেও জনকন্ঠ, ভোরের কাগজ, আজকের কাগজ প্রায়ই খবর দিত যে জামাতীরা আজাদ সন্তানদের প্রহার ও ফোনে ধমকি দিয়ে নাকি জিজ্ঞাসা করত যে ডঃ আজাদ কোথায়। এই ভাবে যখন ১১ই আগষ্ট বৃহস্পতিবার ২০০৪এ জার্মানির মিউনিখে হঠাৎ নিজ এপার্টমেন্টে আজাদের স্বাভাবিক মৃত্যু হয় ঢাকাস্থ জার্মান দূতাবাসের প্রেসের বাংলাদেশী কর্মকর্তা জনাব মোর্শেদ তার ঢাবি শিক্ষকদের কোয়ার্টারে গিয়ে দেখেন তার বাসায় স্রেফ ছোট সন্তান আছে।

তাই তিনি সেদিন তাকে কিছু না জানিয়ে পরের দিন নিজে তার স্ত্রীকে জানাবেন। এখানে বলে রাখা ভাল ২০০০ সালে একটি কারণে জার্মান দুতাবাসে গেলে জনাব মোর্শেদের সাথে আমার পরিচয় ঘটে। উনি একজন অত্যন্ত ভদ্রলোক, সদালাপী(মৃদু ভাষায় কথা বলে), বিনয়ী। পরের দিন ১২ই আগষ্ট শুক্রবার সকালে উনি আজাদের বাসয় গিয়ে উনার স্ত্রীকে যেই জানালেন মৃত্যুর খবর সে সহ তার বড় মেয় ও বড় ছেলে জনাব মোর্শেদের উপর হামলে পড়ল। চিৎকার করে বলল তোর জার্মান সরকার জামাতের টাকা খেয়ে আমার স্বামী/আব্বুকে মেরে ফেলেছিস।

এই খবর ঢাবিতে প্রচার হওয়া মাত্র ছাত্রলীগ ও তাদের উস্কানিতে বামপন্থী ছাত্র সংগঠন টিএসসিতে ভাঙচুর চালিয়ে প্রোপাগান্ডা করে জার্মানীতে জামাতীরা আজাদকে গুলি করে হত্যা করছে। অথচ বিবিসি, রয়টারের খবরে প্রকাশ জার্মানির পুলিশ ও ডাক্তারগণ জানান যে এটা স্বাভাবিক হার্ট এটাক। তারপরেও জার্মান সরকার এটার যথাযথ তদন্ত করে আজাদের লাশ বাংলাদেশে তার পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দিবে। জার্মান রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আজাদ হত্যার অভিযোগ তদন্তের দাবী আজাদ মিউনিখে মারা যাওয়ার ঘটনা জানার পর পরই ১২ই আগষ্টে তার বাসায় এসে যতটা না তার পরিবারকে সান্তনা দিবে তার চেয়ে রণ হুংকার দেয় আম্লীগের সাধারণ সম্পাদক জলিল, তোফায়েল এবং ওয়ার্কাস পার্টির মেনন ও জাসদের ইনু। জলিল বলেন যে আমরা আজাদের এই মৃত্যুকে স্বাভাবিক মৃত্যু বলে মেনে নিতে পারছি না।

আমরা জাতিসংঘ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মাধ্যমে তদন্ত চাই। তথা জলিল ও আওয়ামী-বাকশালী এবং বামদের জার্মানীর বিরুদ্ধে তদন্তের দাবী জানায়। আজাদের স্ত্রী এই ঘটনার পর জানান মিউনিখে ফ্লাইটের পূর্বে নিজামীর সাথে তার স্বামীর জিয়াতে সাক্ষাতের কথা প্রকৃত অর্থে বাংলাদেশের সিংহভাগ লোকই জানত না যে আজাদ আদৌ দেশে আছেন অথবা পৃথিবীর কোথাও গেছেন। অথচ সেই ২০০৪ এর জুলাই ও আড়ষ্টের মারা যাওয়ার মাত্র কয়েকদিন আগেও প্রচার করা হয় ফোনে হুমকি-ধমকি এমনকি আজাদের পুত্রকে জামাতিদের অপহরণের ঘটনাও সেই আওয়ামী ত্রিরত্ন পত্রিকায় ফলাও করেও প্রচার করা হয়; His son was kidnapped on 24 July 2004 but escaped after two hours. The following day, Dr Azad received a death threat by telephone: the caller threatened to bomb his house. http://www.ntpi.org/html/humayunazad.html যদি আজাদ জার্মানী যাওয়ার পূর্বে নিজামীকে বলেই থাকেন যে তিনি কোথায় যাচ্ছে তারপরেও কেন জামাতীদের ক্যাডাররা তার পুত্রকে অপহরণ করবে? স্পষ্টতই এটা এক ধরণের ইদুর-বিড়াল খেলা। সবচেয়ে বড় কথা হল জার্মানী সরকার পরিস্কার ভাবে জানিয়ে দেয় তার দেশের সুরাহাতাল তথা ময়না তদন্তের বাইরে আর কাউকে তদন্ত করার সুযোগ দেওয়া হবে না।

তার কয়েকদিন পর আওয়ামী-বাকশালীরা কাচু-মাচু করে চুপ মেরে যায়। জার্মান সরকারের রিপোর্ট স্রেফ আজাদের স্ত্রীর কাছেই দেওয়া হয়। তাতে জোর গুজব যে দূর্বল শরীরে ভায়াগ্রা সেবনের কারণেই তার হার্ট এটাক ঘটে মূলত ডঃ আজাদ ছিলেন আওয়ামী-বাকশালীদের জন্য নিবেদিত প্রাণ। তিনি যতটা না নাস্তিক ছিলেন তারচেয়েও বেশী রাজনৈতিক ভাবে ভন্ড। আলীগ ও ভারতের প্ররোচনায় জোট সরকারের সময় দেশে অহেতুক ধর্মীয় উত্তেজনা সৃষ্টি করে হাসিনাকে রাজনৈতিক ইস্যু দেওয়া।

যাতে তিনি জোট সরকারের মেয়াদের আগেই পতন ঘটাতে পারতেন। কিন্তু আল্লাহর অপার রহমত যে হাসিনার চাল ও তার রাজনৈতিক দাবার ঘুটি আযাদ চরম ভাবে ব্যার্থ হয়েছেন। এমন দেশ তথা জার্মানীতে আজাদের মৃত্যু হয়েছে তা স্রেফ বাংলাদেশে আওয়ামী-বাকশালী ও নাস্তিকের ভেকধারী উগ্র ইসলাম বিদ্বেষী ছাড়া পৃথিবীর অন্য কোন দেশ দুরে থাকুক কোন বিবেকবান মানুষও বিন্দুমাত্র সন্দেহ করতে পারবে না। এমনকি ভারতীয়রাও জার্মানীর বিরুদ্ধে প্রশ্ন করতে লজ্জা পাবে। আর আজাদ একজন কপট নাস্তিক ছিলেন।

তা এ কারণে ডঃ আহমদ শরীফ যদি প্রকৃত নাস্তিকদের আদর্শ, ডঃ আজাদ তার তুলনায় অনেক অনেক প্রশ্নবিদ্ধ। শেষমেশ আজাদের জানাজা করিয়ে তাকে মুসলিম কায়দায় দাফন করা হয়। যেখানে এখনও আজাদের মৃত্যু বার্ষিকিতে মিলাদ মহফিল আয়োজন করা হয় তাই আওয়ামী-বাকশালী গংরা এখান থেকে কোন শিক্ষা নিবে কি? বিঃদ্রঃ এটা কোন নাস্তিক-আস্তিক ক্যাচাল পোষ্ট নয়। এটা মূলত রাজনৈতিক পোষ্ট। আজাদকে নিয়ে আওয়ামী-বাকশালী গোষ্ঠী ঘৃণ্য রাজনীতি করতে গিয়ে চরম ভাবে ব্যার্থ হয়েছে।

 ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।