বর্তমানে আন্তরিকতার চেয়ে কৃত্রিমতাই অধিক ফলপ্রদ বলে কেউ ভাবলে খুব বেশি দোষের হবেনা। আমাদের যাপিত জীবন ও পারিপার্শ্বিক বাস্তবতার আলোকে এটা প্রমাণ করা খুব কঠিন হবেনা যে মানুষ জটিল থেকে আরো বেশি জটিলতর হচ্ছে। সহজ সরল আন্তরিক মানুষগুলোর সংখ্যা খুব কম হওয়ায় তারাই বেশি প্রতারিত হচ্ছে। তাই হৃদ্যতা ও দরদের ক্ষেত্রে অতি আবেগপ্রবণ না হয়ে বাস্তবিক হওয়াটাই যৌক্তিক হয়ে পড়েছে। আবেগ কমিয়ে যুক্তি বাড়ালে যে সবক্ষেত্রে ইতিবাচক ফল আসবে তা নাও হতে পারে।
তবে শুধু ঐতিহ্য রক্ষায় স্বাভাবিক চর্চার সাময়িক ফলাফল ভাবনার চেয়ে ভবিষ্যত ভাবনাটাই অধিকতর শ্রেয়।
পাশ্চাত্য আজ এগিয়ে বলেই আগামীতে প্রাচ্য এগিয়ে থাকবে এসব কথা যেমন অর্থহীন শিক্ষা,স্বাস্থ্য,সেবাসহ সকল সেক্টরকেই বাণিজ্যিকীকরণ ভবিষ্যতে মারাত্মক কুফল বয়ে আনবেনা একথাও তেমনি অযৌক্তিক হবে। কোচিং সেন্টার আর প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষাকেও আজ পণ্যে পরিণত করছে। চাকুরীর নেশা শিক্ষার মৌলিক উদ্দেশ্যকে পদদলিত করে সার্টিফিকেট প্রাপ্তিকেই বড় করে তুলেছে। বাড়ছে স্বার্থপরতা যেন নি:স্বার্থভাবে পরের জন্যে কিছুই করার দায়িত্ব নেই।
সামরিক আধিপত্যের চেয়েও অর্থনৈতিক আধিপত্য যে বেশি ভয়ংকর ও বিপদজনক এটা অস্বীকার করার কোনই সুযোগ নেই। বহুজাতিক কম্পানিগুলোর সচেতনতামূলক কার্যক্রমে অর্থায়ন একভাবে পণ্য বিক্রয়ের বিজ্ঞাপনের কর্মসূচিরই নামান্তর।
প্রবীণদের রক্ষণশীল মনোভাবই নবীনদের অশ্লীলতা প্রীতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছে। বিদেশী সংস্কৃতির অনুকরণ এবং নতুন ফ্যাশনাসক্তি আমাদের সাংস্কৃতিক দারিদ্রতাকে প্রকট করে তুলেছে। অপরদিকে গ্রামীণ অর্থনীতিতে এনজিওগুলো পরনির্ভরশীলতার মাত্রা না কমিয়ে নতুন ধরণের সংকট সৃষ্টি করেছে।
গণতন্ত্রের পাশ্চাত্যের পুজিবাদী ছাঁচকে অনুসরণ দরিদ্র দেশগুলোর জন্য বিপজ্জনক হয়ে দেখা দিয়েছে। কেউ যদি প্রশ্ন করেন ব্যক্তির ব্যক্তিত্বই কি সামাজিকীকরণের অন্যতম উপাদান নাকি সামাজিকীকরণই ব্যক্তির ব্যক্তিত্বকে গঠন করে-তবে সহজ উত্তর দেয়া কঠিন হবে। তারপরও বলব আত্মনির্ভরশীল জাতিই প্রকৃত সম্মান লাভের উপযুক্ত। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।