আমি খুবই সাধারণ
ডা. জাকির নায়েক একজন দায়ী। অমুসলিম ও মুসলিমদের মাঝে দাওয়াত দানে তিনি রত রয়েছেন। তাঁর এই মহতি কর্মে অনেকেই তাঁর প্রশংসা করলেও কিছু জ্ঞানপাপী তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচারে নিয়োজিত রয়েছেন এবং তারা তার নামে অনেক কুটসা রটাচ্ছেন। তবে এরা পিছনেই কুটসা রটেই ব্যস্ত কোনরুপ নির্দিস্ট অভিযোগ করছেন না। যেগুলো করছেন তার কোন প্রমাণও দিতে পারছেন না।
তাদের অভিযোগ ও কুটসা রটানোর কারণগুলো হলো তাদের মতের বিরোধী হওয়া। তাদের মতের বিরুদ্ধে কথা যেতেই পারে এজন্য তাদের প্রমাণ করার উচিত যে তাদের মত সঠিক । কিন্তু তারা তাও করতে পারছে না। কারন কুরআন ও সহীহ হাদীস অনুসারে তাদের মত দেখতে গেলে তাদের মত ভ্রান্ত প্রমাণিত হবে।
আমি এ ব্যাপারে কিছু কথা লিখবো ইনশাআল্লাহ।
প্রথমই আমি জানাবো যে, তারা কেন ডা. জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে লেগেছে।
প্রথমত. ঈর্ষা । তাঁর বিপুল জনপ্রিয়তায় তারা ঈর্ষান্বিত হয়েছেন তাই তাদের এই কুটসা রটানো।
দ্বিতীয়ত. কুরআন ও সহীহ হাদীস অনুসরণ:
তিনি তো বিভিন্ন মত অনুসরণ করছেন না, বরং কুরআন ও সহীহ হাদীসের কথা বলছেন তাই তারা তাঁর পিছনে লেগেছে। কারণ কুরআন ও হাদীসের কথা বললে ঠিক আছে কিন্তু সহীহ হাদীস ? তাহলে তো আমাদের গোমর ফাঁস হয়ে যাবে।
আমাদের মতের অধিকাংশই জাল যইফ হাদীস অনুযায়ী। তাহলে তো আমাদের বাপ-দাদাদের পথ ত্যাগ করতে হবে।
তৃতীয়ত. শিরক বিদআতের কথা বলা
তিনি তেমন জোরালোভাবে শিরক বিদআতের কথা না বললেও কবর পুজা ও আল্লাহ ছাড়া অন্য কারও কাছে চাওয়া যাবে না বলাত কবর পুজারী ও বিদআতীরা তাঁর বিপক্ষে লেগেছে।
চতুর্থত.সুনির্দিষ্ট কোন মাযহাব না মানা
সম্ভবত এটাই সর্বাধিক গুরুতর অভিযোগ । এটাই এদের বিরোধিতা মূল কারণ।
কারণ তিনি কোন একটি মাযহাবের মতের উপর থাকেন নি । বরং সকল মাযহাবের বর মাযহাব নাবী কারীম সা: এর মাযহাব অনুসরণ করেছেন এবং তাই করতে বলেছেন। এটা তো মহা অপরাধ! অথচ তিনি ঈমামদের ব্যাপারে কোন নেতিবাচক কথা বলেন নি। যেহেতু আমাদের উপমহাদেশে আলেমরা যতটা না কুরআন ও সহীহ হাদীস জানে তার চেয়ে বেশী জানে বিভিন্ন মাযহাবের কিতাব। তাই তাদের এই মাযহাবী ব্যবসায় বাধা হওয়ায় এ বিরোধিতা ও কোন ইমাম অনুসরণ না করার অভিযোগ।
কে বলল, তিনি ইমাম অনুসরণ করেন না। তিনি সকল ঈমামের ইমাম মুহাম্মাদ (সা) এর অনুসরন করেন। আর প্রত্যেক ইমামই বলেছেন যখন সহীহ হাদীস পাবে সেটাই আমার মাযহাব (মত)।
দলাদলী বিহীন ইসলাম প্রচার:
তিনি ইসলামে দলাদলি না করে এক তাওহীদের উপর দাড়ানোর আহবান জানিয়েছিন। তিনি মুসলিমকে শিয়া, সুন্নী, হানাফী, শাফেয়ী, হাম্মলী প্রভৃতি নয়, বরং মুসলিম হতে বলেছেন, মুসলিমের পরিচয় এটাই।
এটা বলাও তাঁর একটি অপরাধ ! কারণ উপমহাদেশে একশ্রেণীর নামধারী আলেম আছেন যারা দলাদলী করতে খুব মজা পায় । এটাকেই ইসলাম বলে।
ডা. জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয় সেগুলো উল্লেখ পূর্বক জওয়াব নিচে দেওয়া হলো:
প্রশ্ন ১. তিনি কোন ইমামের অনুসারী? সোজা বাংলায় কোন মাযহাবের অনুসারী?
উত্তর: তিনি সকল মাযহাবের অনুসারী। কারণ সকল ইমামরাই একমত যে যখনই সহীহ হাদীস পাবে সেটাই আমার মাযহাব। অতএব তিনি সকল মাযহাবের অনুসারী।
প্রশ্ন ২. তিনি কেন টাই পড়েন ? এটা তো পড়া হারাম?
উত্তর: ইসলামে পোশাকের মূলনীতি দেয়া আছে। আমি তার কয়েকটি সংক্ষিপ্ত আলোচনা করছি।
১. নারীদের সারা অঙ্গ ঢাকতে হবে। কিন্তু পুরুষের সতর নাভী থেকে হাটু পর্যন্ত। এবং সলাত আদায় করার সময় কাঁধে কাপড় না থাকলে সলাত আদায় হবে না।
২. নারীরা গিরার নিচেও কাপড় পরিধার করতে পারবে কিন্তু পুরুষদের জন্য এটা নিষেধ।
৩. নারীরা রেশমী কাপড় ও সোনার তৈরী গহনা পড়তে পারবে কিন্তু পুরুষদের জন্য তা হারাম।
৪. পোশাক ঢিলেঢালা হতে হবে।
৫. পোশাক এমন হতে পারবে না যেটি বিপরীত লিঙ্গের পোশাক।
৬. পোশাক এমন হতে পারবে না যাতে শরীরের ভিতরের অংশ দেখা যায়।
৬. অবিশ্বাসীদের বিশেষ কোন চিহ্ন বুঝায় এমন পোশাক বা লেবেল পরিধান করা যাবে না। যেমন, ক্রুশ, কপালে ওম লিখা, মাথার টিকা প্রভৃতি।
এবার আসি টাই নিয়ে । তিনি কেন টাই পড়েন কেন? অনেক মুসলিম আছে তাদের ধারণা টাই হলো ক্রসের প্রতীক । কিন্তু খ্রিস্টানদের কোন ধর্মগ্রন্থেই বলা নেই যে, টাই ক্রসের প্রতীক।
বরং বিশেষজ্ঞদের মতে ঠান্ডা আবহাওয়ার দেশের লোকেরা টাই পড়ে কাপড় বেধে রাখতো। তাই টাই পড়া হারাম নয়। তবে গলায় ক্রম যেটা যোগ চিহ্নের মতো সেটো পড়া হারাম।
প্রশ্ন ৩.
তিনি কেন ইয়াযিদ এর নাম নিতে গিয়ে peace be upon him. পড়েন ?
এটা একটি বড় বিষয় । এ বিষয়ে চুম্বক ধারণা দিচ্ছি ইনশআল্লাহ এই সপ্তাহেই এ বিষয়ে বিস্তারিত লিখবো ।
তা হচ্ছে এটাই কুরআন ও সুন্নাহ পন্থীদের মত। শিয়াদের অপপ্রচারে আমরা এমন কিছু জানি যা ঠিক না । তা পরের পোস্টে আসছে। ইমাম বুখারী, ইমাম আলবানী, ইমাম ইবনে কাসীর, ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম, ইমাম ইবনে তাইমিয়াহ সহ আহলে সুন্নাতপন্থীরা তাঁকে তাবেয়ী বলেছেন। আর আমাদের এটা জেনে রাখা উচিত যে, তাবেয়ীরা শরীয়াতের মানদন্ড নয়।
রাসূল (সা)ই আমাদের মানদন্ড। তিনি যদি কাফের হয়, তবে আমি শুধু এতটুকু জানতে চাই সেই কাফেরের অধিনে অন্যান্য সাহাবীরা কেনো তার হাতে বাইয়াত করেছিলো ? যদি তিনি মদখোর, কাফের, হন, তাহলে অন্যান্য সাহাবীরা কি করে একজন কাফেরের নিকট বাইয়াত করলেন? আর ইসলামের ওই যুগে যেসব যুদ্ধ বা মতবিরোধ হয়েছে সে ব্যাপারে আমাদের চুপ থাকাই উত্তম । কারণ মুসলিম নামধারী ইয়াহুদীদের চক্রান্তে এমনভাবে ছড়িয়ে পরেছিলো যে, সাহাবীরাও এ চক্রান্ত হতে রেহাই পায় নি। আর সাহাবীরা এ যুদ্ধগুলো পরষ্পরকে কাফের ভেবে যুদ্ধ করেন নি। বরং এগুলো বুঝার ভুল ও সর্বোপরী ইয়াহুদীর চক্রান্ত ও তথ্য আদান প্রদানের ভুল।
প্রশ্ন ৪. তিনি কেন কথায় কথায় অন্য ধর্ম গ্রন্থ হতে উদ্ধৃতি দেন?
উত্তর : যারা এটা বলে থাকেন তাদের বলছি এটাও বুঝার ভুল। তিনি সেগুলো থেকেই উদ্ধৃতি দেন যেগুলোতে কুরআনের বিপরীত নেই। আর কুরআনেই তো আছে আসুন আমরা কথা বলি যা আমাদের ও তোমাদের মাঝে মিল রয়েছে।
এরকম অনেক প্রশ্ন আছে। যেগুলো করা হয়।
সেগুলোর অধিকাংশ অবান্তর। আপনাদের কারও মনে প্রশ্ন জাগলে আমাকে ইমেইল করুন। অযথা অপপ্রচারে কান না দিয়ে প্রশ্ন করুন । ইনশাআল্লাহ দলীল প্রমাণ ভিত্তিক জওয়াব দেয়া হবে । তবে জওয়াব পেতে দেরী হতে পারে কারণ প্রমাণ সহকারে জওয়াব দেয়া একটু সময় সাপেক্ষ।
আর আপনি তার উদ্ধৃতি গুলো কোন লেকচারে পেয়েছেন, কোন বইয়ে পড়েছেন, তার লিংক এবং প্রকাশনীর নাম প্রকাশ করবেন।
আমার ইমেইল ঠিকানা
এর পরের পর্বে আসছে
ডা. জাকির নায়েক ও আমার অভিজ্ঞতা
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।