© এই ব্লগের কোন লেখা আংশিক বা সম্পূর্ণ আকারে লেখকের অনুমতি ব্যতীত অন্য কোথাও প্রকাশ করা যাবে না। আমাদের কপালটাই খারাপ। বিশ্ব ইতিহাসের দুইটা জঘন্যতম রাজনৈতিক দলের যাঁতাকলে পিষ্ট এই দেশের মানুষ। এই সেই আওয়ামী লীগ যারা গোটা দুনিয়ার কাছে বাংলাদেশরে বেচে দেয় আর এই সেই বিএনপি যারা নিজেরাই কামড়াকামড়ি করে এই দেশটাকে খায়।
যাই হোক,গত নির্বাচনে আমি আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছিলাম শুধুমাত্র যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আশায়।
কিন্তু এই ধীরগতির বিচারকার্যে আমি কিছুটা হলেও শংকিত। তবে এখনো আড়াই বছর সময় আছে। তাই আশায় বুক বেঁধে আছি। ২০১৩ সালের মধ্যে যদি তারা এর পূর্নাংগ বিচার কার্যকর আর বিদ্যুত সমস্যার সমাধান না করতে পারে তাহলে জণগণ এর বদলা আর কিছুতে নাহোক ব্যালট পেপারে ঠিকই দিবে। আর আওয়ামী লীগ জানে তারা যদি পরবর্তীতে সরকারে না আসতে পারে তাহলে বিএনপির আক্রোশে তারা টিকে থাকতে পারবে না।
তবে বিগত আড়াই বছরে বিএনপির বিরোধিদলের কার্যক্রমে আমি বেশ হতাশ। আওয়ামী লীগ একেবারে হাতে তুলে তাদেরকে আন্দোলনের ইস্যু তুলে দিচ্ছে,যেমন বিডিআর হত্যাকান্ড, শেয়ার ব্যাবসার বিপর্যয়,আইন শৃঙ্খলার এহেন অবনতি, কিন্তু আমাদের প্রধান বিরোধীদলের অবস্থা দেখুন। তারা কি একটি ইস্যুতেও তাদের আন্দোলন জোরালো করতে পেরেছে। বরং খালেদা জিয়ার বাড়ি রক্ষার মতো ফালতু ইস্যুতে তারা হরতাল ডেকেছিলো। আমি বুঝিনা,খালেদা জিয়া কি এতোটাই বোকা,কিভাবে জণগণের সেন্টিমেন্টকে পুঁজি করতে হবে তা সম্পর্কে কি তার বিন্দুমাত্র ধারণা নাই, নাকি বিএনপিতে একজন চিকন মাথার উপদেষ্টাও নাই যে কিনা সাহস করে একথা তাদের নেত্রীকে বলতে পারে।
এখন তারা ইস্যু হিসেবে নিয়ে এসেছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসংগ,আর খালি দাবী তোলে মধ্যবর্তী নির্বাচনের। একটা মজার ব্যাপার দেখুন,রায়ের পূর্নাঙ্গ কপি আসার আগেই হরতালের ডাক দিলো। আর শেয়ার ব্যাবসার পূর্নাঙ্গ রিপোর্ট পাওয়ার পরেও শুধুমাত্র এই ইস্যুকে নিয়ে তারা কোনো হরতাল করে নি। এর কারনটা কি খোদ খালেদা জিয়াও জানেন কিনা আমার সন্দেহ। আরে ভাই এই দেশের পলিটিক্স করবেন আর পাবলিক সেন্টিমেন্টকে পাত্তা দিবেন না এইটা কেমনে হয়।
শেখ হাসিনাকে দেখুন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আর বিদ্যু্ত সমস্যার সমাধান এই মধুময় কথার আশ্বাসেই সংসদে মেজোরিটি নিয়ে নিলো। আমি তো হলফ করে বলতে পারি এই আওয়ামী লীগের শেয়ার দুর্নীতির ইস্যুতেই তাদের গদি নাড়িয়ে দেয়া সম্ভব ছিলো। আর এই জায়গাতেই খালেদা জিয়ার ব্যর্থতা। যে নেত্রি মওদুদ সাহেবের মতো একটা সুসময়ের মাছিকে এতো বিশ্বাস করেন তার কাছে আর কিইবা প্রত্যাশা করতে পারি। এই সেই মওদুদ সাহেব বাতাস যেদিকে বহে উনিও সেদিকেই দৌড় দেন।
যখন যেই সরকার ক্ষমতায় উনি তখনি সেই দলের মন্ত্রী। ব্যাতিক্রম শুধু এই নির্বাচনেই। আজ পর্যন্ত কোনো হরতালে মওদুদ সাহেবের ছায়াও দেখলাম না কোনো মিছিলে, আর সবসময় উনি বড়ো কথা বলে নিজেকে জাহির করার হাস্যকর চেষ্টা করেন।
আর এইদিকে আওয়ামী লীগকে দেখুন। এরা যে কতো বড়ো চালবাজ আর ধূর্ত---তাদের শেষ কিছু কর্মকান্ডেই দেখুন।
যখনই কোনো না কোনো বড়ো ইস্যু আসে তখনই তারা এমন কিছু করে যাটে দেশবাসীর মাথা সেখানেই ঘুরে যায়। আর বিএনপিও ব্যাক্কলের মতো সেদিকেই ছুটতে থাকে। সর্বশেষ উদাহরণটাই দেখুন। আজকে সংসদে তারা পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধনী বিল সংসদে উথ্থাপন করেছে। আজকে শুনলাম এই অধিবেশনেই তা নাকি পাশ করে ফেলবে।
এখন আওয়ামী লীগ খুব ভালো করেই জানে তার মেজোরিটি হোল্ডার। খুব ইজিলি এই বিল পাশ হয়ে যাবে। আর বিএনপির যা অবস্থা। কোকোর দূর্নীতির রায় তো হলোই,আজকে আবার শুনলাম,গ্যাসকূপে বিস্ফোরণের পর ক্ষতিপূরণ এড়াতে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেনকে ঘুষ দেওয়ার কথা স্বীকার করায় নাইকোকে প্রায় কোটি ডলার জরিমানা করেছে কানাডার একটি আদালত। খালেদা জিয়া তো ঘর গোছাতেই ব্যস্ত---আন্দোলনে আর যাবে কই।
যাই হোক যেকথা বলছিলাম,যদি পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধনী বিল পাশ হয়ে যায়, তাহলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলোপ হবে,মানে নির্বাচন কমিশনের (পরোক্ষ অর্থে আওয়ামী লীগের) আন্ডারে নির্বাচন হতে হবে। এখন তাহলে বিল পাশ হয়ে গেলে বিএণপির মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবী কি আর ধোপে টিকবে? বিএনপি তো তখন নিজেরাই এই দাবী থেকে সরে আসবে।
তাহলে বিএণপির করণীয় কি?আমার মতে খালেদা জিয়ার উচিৎ হবে আন্দোলনের ইস্যু স্থির করা। একবার এটা,আরেকবার ঐটা বলে ইস্যু পরিবর্তন না করে বরং স্পেসিফিক ইস্যুগুলোতে জোর দেয়া। তবে আওয়ামী লীগের যে ধূর্তামী তাতে করে বিএনপির পক্ষে সহসা খুব বেশি আশার আলো দেখছি না।
বিএনপির প্রতি আমার সবিশেষ অনুরোধ, সংসদে আসুন,ঐখানে গায়ের জোর দেখিয়ে আলোচলা করুন। অন্তত মানুষ দেখুক,আপনারা চেষ্টা করেছিলেন। মনে রাখবেন এই বাংগালীদের সেন্টিমেন্ট কিন্তু খুব পাতলা। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।