আমি ফ্রা ঙ্কে স্টা ই ন......... ২৪ জুলাই ২০১৩,
প্রিয় ডাল্টন সৌভাত হীরা দা,
শহরের এই আলোকোজ্বল রাতে আমি আপনাকে লিখছি। চিঠিটা লিখার কথা ছিলো অন্য একজন কে। কিন্তু তার পরেও আপনাকেই লিখতে হচ্ছে, অতীত কে ভুলতে চেষ্টা করাই উত্তম। হয়ত সে ফিরে আসবে একদিন। সে যাই হোক।
আমরা কেন প্রেমে পরি? হ্যা, আমি জানি আমাদের যৌনাবেগ , আমাদের প্রবৃত্তি গত কারণে। কিন্তু সেখানে কি শুধুই প্রাণ রসায়ন? আমার মনে হয় না, আপনি কবি, আপনার উত্তর টা জানার কথা। তবে থাক না সে কথা আজ, আজ অন্য বিষয়ে কথা বলি, পুরোনো কাসুন্দি ঘেটে আর লাভ কি বলুন?
দাদা, বিপ্লব আমায় প্রতারিত করে নি। আমি প্রতারিত হই নি। হ্যা হয়তো আমি ফ্রিল্যন্সার গেরিলা, বিপ্লবী, মূর্খ তাত্ত্বিক, কিন্তু আমি জানি, আমার ভবিষ্যতের কৃষি বিপ্লব আমায় হতাশ করবে না।
স্বপ্ন দেখি একদিন আমার দেশ বদলাবে, তবে তার জন্য তাত্তিক বিপ্লব কোন কাজে আসবে বলে মনে হয় না। আমাদের সমস্যা গুলো আমাদের নিজেদের ই সমাধান করতে হবে।
হ্যা, আমি খুব অল্প সময়ের জন্যই মূল ধারার রাজনীতি করেছি। এর পর পড়াশুনা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পরেছিলাম, তাই জীবনে মা, ছাড়া অন্য কোন নারীর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করি নি। হয়তো আজ ও করতাম না, বিপ্লব আমায় সব দিয়েছে প্রভাব, প্রতিপত্তি, শিক্ষা, দর্শন, নিয়ম ভাঙ্গার সাহস।
হ্যা আমি যে প্রতারিত হই নি, তা বলবো না, হয়েছি, আবার ঘুরে দাড়িয়েছি।
আজ আমাদের নয়া অর্থনৈতিক মডেল দরকার, ন্যশের গেম থিওরির ওপর দাঁড়িয়ে আমাদের এখন শুধু শ্রমিক শ্রেনীর নয়, মধ্যবিত্ত এবং নিন্ম মধ্যবিত্তদের দিকেও তাড়াতে হবে। শিক্ষা ব্যবস্থায় আনতে হবে আমূল পরিবর্তন, আর সে সাথে চাই, ভবিষ্যত সশস্ত্র সংগ্রামের সাহস, রসদ এবং আপনারা মতো তরুণ নেতৃত্ব। যাই হোক এ বিষয় নিয়ে পরেও কথা বলা যাবে। বিপ্লব রোমান্টিক জিনিষ এটা কঠিন, কঠোর, ঠিক যেন প্রত্যাক্ষাত প্রেমিকের মনের মতোই যন্ত্রনাদায়ক, বিষাদময়।
অন্যের অস্ত্র নামাতেই আমাদের অস্ত্র তুলে নিতে হয় আমাদের।
দাদা, আমি আপনাকে শ্রদ্ধা করি, আজ আমার জন্য যে টুকু করেছেন, আমি তাতেই খুশি, কিন্তু যখন তিনি আপনার উপর চিৎকার করে উঠলেন তাতে আমি বুঝলাম, অগ্রজের সম্মানের কথা ভেবে আমার সরে যাওয়া উচিৎ। হ্যা আমি তাঁকে, ভালো বেসেছি, ভালোবেসে যাবো, এ জায়গাটায় কোন পার্থক্য হবে না। তবে তাঁর আচরণের জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আজ কাব্যি করার সেই সময় নয়, সেই মানষিক অবস্থাও এই যুগের কর্নের নেই, তাই সাধাসিধে কথেতেই লিখে দিলাম।
কাব্যি করার অনেক সময় পাওয়া যাবে। নাগরিক কবির কটা লাইন দিয়েই শেষ করি;
এ-কথা নিশ্চই তুমি কখনো ভুলেও বলবে না-
‘ভালোবাস্তেই হবে, এই মুচলেকা লিখে দাও,
বলে আমি ভন ভন করেছি তোমার চারপাশে
নিরালায়। বরং দিয়েছি স্বাধিকার তোমাকেই
আমাকে গ্রহণ কিংবা বর্জনের। যদি কোন দিন
ইচ্ছে হয়, চলে যেও; কখনো করো না বিবেচনা
পরিনামে কি হবে আমার। চন্দনার ঠোঁটে পেলে
তোমার খবর, কবরের মাটি স্বেচ্ছায় ছোঁবো না।
আমার গায়ের তাপ যদি হয় এক শো পাঁচের
কিছু বেশি, তবু মূর্চ্ছা যাবো না, ঘুরবো স্বভাবিক।
ট্রেনের টিকিট কেটে অন্য কোন খানে পাড়ি দেয়া
যাক ভেবে খুব তাড়াহুড়ো করে হন্ডাল বাঁধি না।
আমাকে একলা ফেলে চলে গেলে আমি মরে টরে
যাবো না, স্বীকার করি। অন্তত তোমার কাছ থেকে
মিথ্যা বচনের সহযোগিতায় করুণার কণা
কুড়ানোর বিন্দুমাত্র সাধ নেই। নিন্দুকের দল
যা ইচ্ছা রটাক, তুমি বিব্রত হয়ো না এতটুকু।
মানুষ তাকেই ভালোবাসে যাতে ত্যাগ করে যেতে
পারে মূক যন্ত্রনায়। ভেবে নিও, আমার এ ক্ষীণ
পদচিহ্ন যা ছিলো তোমার অনুগামী, ঘাসে ঢাকা
পড়ে গ্যাছে; আমার সম্মুখ হতে অপসৃত হলে
তুমি, ইরেজার দিয়ে মুছে ফেলবে সকল কিছু,
এমন জপালে পাখি কান দিয়ো না কস্মিনকালে।
কেবল মৃত্যুই পারে মেয়ে তোমাকে ভুলিয়ে দিতে।
ভালো থাকবেন দাদা, বিপ্লবে হয়তো দেখা হয়েই যাবে, কোথাও না কোথাও, এই খানে না হয় অন্য কোন খানে অন্য কোন শহরে, যদি থেকে থাকে তবে স্বর্গ অথবা নরকে, অথবা দেখা হবে না কখনোই।
ইতি
বীর বাহু অর্জুন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।