এখন চলছে আরবি রজব মাস। রজব মাস এলেই এক শ্রেণীর স্বার্থান্বেষী মানুষ বাসস্টপে, রেলশ্টেশনের পাশে, পথে-ঘাটে, বাজারে যেখানেই সুযোগ পায় সেখানেই একটা ‘ডেগ’ বসায়। লালসালু কাপড় মুড়িয়ে, বাঁশ দিয়ে ছাউনি দিয়ে, চকমকা বিজলী বাতি জ্বালিয়ে, রঙিন কাগজ এবং বিভিন্ন ধরনের রং লাগিয়ে ঘর সাজিয়ে তার মধ্যে স্থাপন করে বিশেষ একটি ‘ডেগ’। তারা এটাকে বলে 'খাজা বাবার ডেগ'। অনেকে আবার এটাকে ‘আজমিরি ডেগ’ও বলে থাকে।
এক মাস থাকে এই ডেগ। বলা হয়ে থাকে- ভারতের আজমীর শরীফে হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন চিশতী রহ.-এর মাজারে তাঁর ওফাত (মৃত্যু) উপলক্ষে যে ওরশ হয়; সেই ওরশে এখানকার উঠানো টাকা পাঠানো হবে; তাই এই আয়োজন। তাই আজমীর শরীফে বিভিন্ন নিয়তে মান্নত করে এই ডেগে টাকা দেওয়ার কথা বলা হয়।
প্রতিটি বিভাগীয় শহর থেকে শুরু করে জেলা শহর এমনকি থানা শহরেও এই প্রথা চালু হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও অস্থায়ীভাবে মাজারের প্রকৃতিও স্থাপন করা হয়।
খাজার নামে স্থাপিত এই ডেগে রাস্তাঘাটের মানুষের নিকট থেকে চাঁদা তোলা হয়, গাড়ী থামিয়ে চাঁদা গ্রহণ করা হয়। সারাদিন এই ডেগের কাছে কাউকে দেখা না গেলেও সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে এখানে শুরু হয় কাওয়ালী, ভান্ডারী, মারেফতি ও পালা গান। বাদ যায় না ‘চুমকির চলে যাওয়ার গান ও বন্ধুর বুক ফাইট্টা যাওয়ার’ সুরও! বিকট শব্দে নারী-পুরুষের সম্মিলিত এই গান-বাদ্যের আওয়াজে মানুষের স্বাভাবিক কাজ-কারবারে প্রচণ্ড বিঘ্ন ঘটে। ছাত্র-ছাত্রীদের সন্ধ্যাকালীন পড়ালেখা, নামায পড়া, কুরআন তেলাওয়াত করা এবং ইবাদত করাও কঠিন হয়ে যায়। শুধু গানই নয় চলতে ধাকে শিরকী বিভিন্ন অমূলক কথাবার্তাও।
গান চলার পাশাপাশি চলে অনৈতিক আনন্দ-ফুর্তি। নারী-পুরুষ এক সঙ্গে নাচ-গান ও নেশা করে এবং নানা ধরনের গর্হিত কাজ করে থাকে, যা সম্পূর্ণ হারাম।
সবচে’ আশ্চর্যের বিষয যে, যারা এ সমস্ত কাজে লিপ্ত তাদের মধ্যে ইসলামী অনুশীলনের নূন্যতম কোন চিহ্নও দেখা যায় না। জটাধারী এসব গাজাখোরদের গায়ের গন্ধে পরিবেশ দূষিত হয়ে যাওয়ার অবস্থা! অথচ তাদের ভাব- যার গায়ে যত বেশি গন্ধ-তার মারেফতি জ্ঞান তত বেশি!! এই ডেগ সাধারণত স্থাপন করা হয় এলাকার প্রভাবশালীদের মদদে। তাই ভয়ে কেউ কোনো কথাও বলেনা।
শুধু বজব মাসেই রাত শুরু হওয়া মাত্র রাস্তায় ডেগ বসানো, পালাগান ও সিন্নীর নামে তাদেরকে ময়দানে দেখা যায়। ভাবখানা এমন যে, মনে হয় খাজা বাবা কেবল একমাত্র একটি কাজই করে গেছেন। আর কোন কাজ তিনি তার জীবনে করেন নাই। আমার এক বিশ্বস্থ বন্ধু বলেছেন, গত বছর উত্তরা (আজমপুর বাসষ্ট্যান্ড; এখানে এবারও হয়েছে) এক খাজার ডেগে শেষ দিন অর্থ্যাৎ ২৭ রজবে একশ’ পাতিল তেহারি পাকানো হয়েছিলো।
এতে মূলত খাজা মঈনুদ্দীন চিশতী রহ.এর প্রতি অবমাননা করা হয়, কষ্ট দেওয়া হয়।
সত্যিকারার্থে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধার চাহিদা হচ্ছে তার আদর্শ পালন এবং প্রসার করা, আর তা হচ্ছে শরীয়ত এবং সুন্নতের প্রতি আনুগত্য এবং সুন্নতের প্রচার ও প্রসার। খাজা মঈনুদ্দীন চিশতী রহ.সহ সমস্ত আওলিয়াগণ তাদের জীবনে সুন্নতের আমল ও অনুশীলনই ছিল বড় কাজ। কিন্তু আফসোস! তাদের আদর্শের কোন খবর নেই আর তাদের নামে ডেগ বসিয়ে এক শ্রেণীর লোক সমাজে বিদআত এবং গোমরাহিতে লিপ্ত। এ সমস্ত লোকের ও কর্মকান্ডের ব্যাপারে আমাদের সবার সতর্ক থাকা একান্ত প্রয়োজন।
আমরা জানি হজরত খাজা মঈনুদ্দিন চিশতী রহ. এই উপমহাদেশে এসেছিলেন মানুষকে শিরক ও কুসংস্কার থেকে মুক্ত করতে।
তিনি এসেছিলেন তাওহিদ ও সুন্নাতের শিক্ষা দিতে। যদি তাকে আমরা সত্যিকার অর্থে ভালোবাসি, তাহলে তাঁর সেই শিক্ষা ও আদর্শ অনুসরণ করাই হবে প্রকৃত মহব্বতের নিদর্শন। আর এতেই তাঁর পবিত্র আত্মা খুশি হবে।
এখন চলছে আরবি রজব মাস। রজব মাস এলেই এক শ্রেণীর স্বার্থান্বেষী মানুষ বাসস্টপে, রেলশ্টেশনের পাশে, পথে-ঘাটে, বাজারে যেখানেই সুযোগ পায় সেখানেই একটা ‘ডেগ’ বসায়।
লালসালু কাপড় মুড়িয়ে, বাঁশ দিয়ে ছাউনি দিয়ে, চকমকা বিজলী বাতি জ্বালিয়ে, রঙিন কাগজ এবং বিভিন্ন ধরনের রং লাগিয়ে ঘর সাজিয়ে তার মধ্যে স্থাপন করে বিশেষ একটি ‘ডেগ’। তারা এটাকে বলে 'খাজা বাবার ডেগ'। অনেকে আবার এটাকে ‘আজমিরি ডেগ’ও বলে থাকে। এক মাস থাকে এই ডেগ। বলা হয়ে থাকে- ভারতের আজমীর শরীফে হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন চিশতী রহ.-এর মাজারে তাঁর ওফাত (মৃত্যু) উপলক্ষে যে ওরশ হয়; সেই ওরশে এখানকার উঠানো টাকা পাঠানো হবে; তাই এই আয়োজন।
তাই আজমীর শরীফে বিভিন্ন নিয়তে মান্নত করে এই ডেগে টাকা দেওয়ার কথা বলা হয়।
প্রতিটি বিভাগীয় শহর থেকে শুরু করে জেলা শহর এমনকি থানা শহরেও এই প্রথা চালু হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও অস্থায়ীভাবে মাজারের প্রকৃতিও স্থাপন করা হয়। খাজার নামে স্থাপিত এই ডেগে রাস্তাঘাটের মানুষের নিকট থেকে চাঁদা তোলা হয়, গাড়ী থামিয়ে চাঁদা গ্রহণ করা হয়। সারাদিন এই ডেগের কাছে কাউকে দেখা না গেলেও সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে এখানে শুরু হয় কাওয়ালী, ভান্ডারী, মারেফতি ও পালা গান।
বাদ যায় না ‘চুমকির চলে যাওয়ার গান ও বন্ধুর বুক ফাইট্টা যাওয়ার’ সুরও! বিকট শব্দে নারী-পুরুষের সম্মিলিত এই গান-বাদ্যের আওয়াজে মানুষের স্বাভাবিক কাজ-কারবারে প্রচণ্ড বিঘ্ন ঘটে। ছাত্র-ছাত্রীদের সন্ধ্যাকালীন পড়ালেখা, নামায পড়া, কুরআন তেলাওয়াত করা এবং ইবাদত করাও কঠিন হয়ে যায়। শুধু গানই নয় চলতে ধাকে শিরকী বিভিন্ন অমূলক কথাবার্তাও। গান চলার পাশাপাশি চলে অনৈতিক আনন্দ-ফুর্তি। নারী-পুরুষ এক সঙ্গে নাচ-গান ও নেশা করে এবং নানা ধরনের গর্হিত কাজ করে থাকে, যা সম্পূর্ণ হারাম।
সবচে’ আশ্চর্যের বিষয যে, যারা এ সমস্ত কাজে লিপ্ত তাদের মধ্যে ইসলামী অনুশীলনের নূন্যতম কোন চিহ্নও দেখা যায় না। জটাধারী এসব গাজাখোরদের গায়ের গন্ধে পরিবেশ দূষিত হয়ে যাওয়ার অবস্থা! অথচ তাদের ভাব- যার গায়ে যত বেশি গন্ধ-তার মারেফতি জ্ঞান তত বেশি!! এই ডেগ সাধারণত স্থাপন করা হয় এলাকার প্রভাবশালীদের মদদে। তাই ভয়ে কেউ কোনো কথাও বলেনা। শুধু বজব মাসেই রাত শুরু হওয়া মাত্র রাস্তায় ডেগ বসানো, পালাগান ও সিন্নীর নামে তাদেরকে ময়দানে দেখা যায়। ভাবখানা এমন যে, মনে হয় খাজা বাবা কেবল একমাত্র একটি কাজই করে গেছেন।
আর কোন কাজ তিনি তার জীবনে করেন নাই। আমার এক বিশ্বস্থ বন্ধু বলেছেন, গত বছর উত্তরা (আজমপুর বাসষ্ট্যান্ড; এখানে এবারও হয়েছে) এক খাজার ডেগে শেষ দিন অর্থ্যাৎ ২৭ রজবে একশ’ পাতিল তেহারি পাকানো হয়েছিলো।
এতে মূলত খাজা মঈনুদ্দীন চিশতী রহ.এর প্রতি অবমাননা করা হয়, কষ্ট দেওয়া হয়। সত্যিকারার্থে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধার চাহিদা হচ্ছে তার আদর্শ পালন এবং প্রসার করা, আর তা হচ্ছে শরীয়ত এবং সুন্নতের প্রতি আনুগত্য এবং সুন্নতের প্রচার ও প্রসার। খাজা মঈনুদ্দীন চিশতী রহ.সহ সমস্ত আওলিয়াগণ তাদের জীবনে সুন্নতের আমল ও অনুশীলনই ছিল বড় কাজ।
কিন্তু আফসোস! তাদের আদর্শের কোন খবর নেই আর তাদের নামে ডেগ বসিয়ে এক শ্রেণীর লোক সমাজে বিদআত এবং গোমরাহিতে লিপ্ত। এ সমস্ত লোকের ও কর্মকান্ডের ব্যাপারে আমাদের সবার সতর্ক থাকা একান্ত প্রয়োজন।
আমরা জানি হজরত খাজা মঈনুদ্দিন চিশতী রহ. এই উপমহাদেশে এসেছিলেন মানুষকে শিরক ও কুসংস্কার থেকে মুক্ত করতে। তিনি এসেছিলেন তাওহিদ ও সুন্নাতের শিক্ষা দিতে। যদি তাকে আমরা সত্যিকার অর্থে ভালোবাসি, তাহলে তাঁর সেই শিক্ষা ও আদর্শ অনুসরণ করাই হবে প্রকৃত মহব্বতের নিদর্শন।
আর এতেই তাঁর পবিত্র আত্মা খুশি হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।