আমি এক অনলাইন প্রতারক। অনলাইনে মানে ইন্টারনেটের মাধ্যমে দেশের সহজ সরল মানুষগুলাকে খুব সহজেই ফাঁদে ফেলে হাতিয়ে নেয়া যায় অনেক কিছু। এর শুরুটা হয়েছিল ফোনের মাধ্যমে। ঐ যে আপনারা জ্বীনের কথা শুনেছেন, যারা ফোন করে...হে হে হে...সেই পুরান কথা এখন আর নাই বা তুললাম। তবে যাদের জীবনে এখনো এসব ঘটে চলছে, তাদের জন্য সমবেদনা!
যা বলছিলাম, আপনারা নানা ধরনের অনলাইন প্রতারণার কথা শুনেছেন।
ব্যাংকের বিশাল বিশাল ব্যাপার আপাতত বাদ দেই। ebay বা craigslist-এর কথাই ধরি। অনলাইনে কিছু দেব বলে টাকা নিয়ে আর সেটা না দেওয়া- এইটাই খুব সহজ ভাবে বলতে গেলে একটা সহজ অনলাইন প্রতারণা।
আমার পদ্ধতি হলো ফেসবুক পেজ বিক্রি করার নামে বিকাশ বা এরকম অন্যান্য মাধ্যমের সাহায্য টাকা হাতিয়ে নেয়া। ফোনে ফ্লেক্সি লোডের মাধ্যমেও টাকা নেয়া যায়।
আর বেশী কথা না বাড়িয়ে চলেন হাতে-কলমে কাজ শিখে নেই-
[বহুল ব্যবহৃত এডমিন পেজের একটা স্নাপশট]
১. প্রথমেই ফেসবুকে একটা ফেক আইডি বানান।
২. তারপর ফেসবুকে একটা পেজ বানান।
৩. এডমিন সেকশনের একটা স্নাপশট নিয়ে ফটোশপে পেজের নামের জায়গায় কোন জনপ্রিয় অর্থাৎ অনেক লাইকপ্রাপ্ত কোন পেজের নাম বসিয়ে দিন।
৪. এবার সেটা আপনার প্রোফাইল পিক হিসাবে দিন, বা কাভার পিক হিসাবে দিন বা ওয়ালে পোস্ট করুন।
৫. এবার অনেককে ফ্রেণ্ড রিকুয়েস্ট পাঠান।
আপনি এত বড় একটা পেজের এডমিন! বেশিরভাগই আপনাকে তাদের লিস্টে নিয়ে নেবে।
৬. এবার ইনবক্সে এক এক করে নক করে যান। একসাথে বিভিন্ন প্রকার ব্যবসা, যেমন- ডোমেইন, হোস্টিং ইত্যাদির ব্যবসা করবে কিনা জানতে চান। এক পর্যায়ে টোপ ফেলুন যে আপনি লক্ষাধিক লাইকের অমুক পেজটা সেল করতে চান। মাত্র এত টাকা।
৭. টোপ গিললে বলেন টাকা পাওয়া মাত্রই পেজের এডমিন বানিয়ে দেবেন। রাজি না হলে অর্ধেক দিতে বলেন, বাকি অর্ধেক এডমিন বানানোর পর দিলেও হবে। মানে বিশ্বাস ভাগাভাগি করে নিলেন আরকি।
৮. বিকাল বা ফ্লেক্সিলোডের মাধ্যমে যত পারেন টাকা নিয়ে নিন।
৯. এইবার আরেকটা চাল চালবেন।
বলবেন যে আপনার পার্টনার এত কমে রাজি হচ্ছে না। সে আরো কিছু দিতে বলে। এইবার আরো কিছু পেলে ভালো, নয়তো যদি দেখেন আর পাওয়া যাচ্ছে না তখন একাউন্ট আর ফোন নাম্বার অফ করে দিন।
১০. কেস #১ ডিসমিস! এবার টার্গেট!
*******************
ঠিক উপরের ঘটনার মত একটা ঘটনা মাস দেড়েক আগে ঘটেছে আমার এক সহজ সরল ফ্রেণ্ডের সাথে। আজ আবার এই একই ফ্রেণ্ডকে এই টোপ দিয়েছে একজন।
কিন্তু সে এইবার সতর্ক হয়েছে। সে রাজি হয়েছে বলে তার নাম ঠিকানা ফোন নাম্বার চেয়েছে টাকা পাঠানোর জন্য।
কিন্তু অবাক করার বিষয় হলো, আগের ফোন আর এইবারের ফোন নাম্বার একই।
[এই ছবিতে দেখুন জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে যে ফোন নাম্বার দিছে, দুদিন আগেও সেই একই নাম্বারঃ 01748331572]
[এই সেই ফেসবুকার, অনলাইন প্রতারক]
[এই ভাবে সে নিজের নাম ঠিকানা দিছে]
পুরা ব্যাপারটা নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। বিশেষ করে র্যাবের সাথে।
সমস্ত প্রমাণ দেয়া হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা কিছু করতে পারেন নাই।
এই ফোন নাম্বারটা কারো পরিচিত হলে এক্ষুনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে যোগাযোগ করে ধরিয়ে দিন এই অনলাইন প্রতারককে।
ধন্যবাদ সহযোগিতা করার জন্য। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।