মানসিক সমস্যা বর্তমান আধুনিক সমাজের একটি অন্যতম প্রধাণ সমস্যা। আমাদের সমাজ যত উন্নত হচ্ছে মানসিক সমস্যার পরিমানও তত বাড়ছে। পাগলামি বলি আর মানসিক সমস্যা বলি আমরা প্রায় সবাই কোন না কোন মানসিক সমস্যায় ভুগে থাকি ৷ কারো বেলায় সেটা প্রকট আকার ধারণ করলেই তখন সেটাকে পাগলামি হিসেবে আমরা নাম দিয়ে থাকি৷ যেমন আচরণগত সমস্যা, দুশ্চিন্তা, ব্যক্তিত্বজনিত সমস্যা, মানসিক বৈকল্য, অস্থিরতা ইত্যাদি ৷ আবার এমন অনেক মানসিক সমস্যা আছে যেগুলোকে কোন নির্দিষ্ট কোনো কাঠামোতে ফেলা যায় না ৷
রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন- কোয়ান্টাম মেথডে এরকম একটি উক্তি আমরা সবাই জানি। কিন্তু মনোবিদ্যায় হঠাৎ রেগে যাবার প্রবণতা একটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। মনে রাখা প্রয়োজন, মারামারি, ভাংচুর বা রাগ দেখানো অনেক মানসিক রোগের সাধারণ উপসর্গ।
কিছু কিছু মানুষ পাওয়া যায় যাদের বাইরে থেকে স্বাভাবিক বলে মনে হয় কিন্তু হঠাৎ হঠাৎ খুব সাধারণ কারণে এমনভাবে রেগে যান যে আশপাশের সবাই হতভম্ব হয়ে যায়। ব্যক্তি নিজেও বুঝতে পারেন যে তার রেগে যাওয়াটা ঠিক স্বাভাবিক না কিন্তু তিনি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। এ মানসিক রোগকে হঠাৎ রেগে যাওয়া বা ইন্টারমিটেন্ট এক্সপ্লোসিভ ডিসঅর্ডার বলে। এ রোগের প্রধাণ কয়েকটি বৈশিষ্ট্য হল:
১.ব্যক্তি অধিকাংশ সময় তার রাগ নিয়ন্ত্রণ না করতে পেরে অত্যধিক উত্তেজিত হয়ে অন্যকে আঘাত করে বা সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি করে।
২. খুব সাধারণ ঘটনার প্রতিক্রিয়া হিসাবে ব্যক্তিটি অস্বাভাবিক আচরন স্বরূপ রাগের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়।
৩.বিভিন্ন দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাবার জন্য ব্যক্তিটি সবার অগোচরে মাদকাসক্ত হতে পারে যার দরুন এরকম হঠা রেগে যাবার প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়।
বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে যে পুরুষের মধ্যে এ রোগের প্রকোপ বেশী । তবে মহিলাদের মধ্যে এ রোগে অল্প পরিমাণে হলেও দেখা যায়। বিশেষত: মাসিক রক্তস্রাবের ঠিক আগে আগে অনেক মহিলাকে এই রোগে ভুগতে দেখা যায়। তবে যাইহোক না কেন, হঠাৎ রেগে যাবার উৎস সেভাবে জানা না গেলেও এই সমস্যা কারো মধ্যে দেখা দিলে চিকিৎসকের শরনাপন্ন হতে ভুল করবেননা।
মনোচিকিৎসার মাধ্যমে রোগীকে রাগ নিয়ন্ত্রণের নানা কৌশল শেখানো হয়। এভাবে নিয়মিত মনোরোগের চিকিৎসার ফলে রোগী ধীরে ধীরে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার উপায় শিখে ফেলে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।