দেশের তরে রিসার্চ প্রপোজাল, বাংলায় গবেষণার প্রস্তাবপত্র। মাস্টার্স, এমফিল এবং পিএইচডির জন্য গবেষণা পত্র লিখতে হয়। যাকে অনেকে বলেন থিসিস। অনেক সময় øাতক পর্যায়েও থিসিস করতে হয়। থিসিস বা গবেষণা পত্র তৈরির আগে তার একটা প্রস্তাবপত্র লিখতে হয়।
একাডেমিক কাজের বাইরেও গবেষণা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সরকারি কাজে এমনকি অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও প্রত্যেক বছর গবেষণা করে থাকে এবং এর জন্য ভালো বাজেটও থাকে। প্রতিষ্ঠানগুলো সংশ্লিষ্ট গবেষণার জন্য গবেষাণার প্রস্তাবপত্র বা রিসার্চ প্রপোজাল আহবান করে থাকে। বিদেশে উচ্চশিক্ষায় স্কলারশিপও অনেক সময় এর উপর নির্ভর করে। প্রবাদের ভাষায় বললে পরিকল্পনা কাজের অর্ধেক।
রিসার্চ প্রপোজালটা পুরো গবেষনার পরিকল্পনা বলা যায়। রিসার্চ প্রপোজাল লেখাটা তাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিভাবে একটা ভালো রিসার্চ প্রপোজাল লিখা যায় তাই পরবর্তী প্রতিপাদ্য।
রিসার্চ প্রপোজালের বিভিন্ন অংশরিসার্চ প্রপোজাল বা গবেষনার প্রস্তাবপত্রের বিভিন্ন অংশ ধারাবাহিকভাবে বর্ণনা করা হলো
গবেষণার শিরোনাম
আপনি যে বিষয়ের উপর গবেষণা করবেন প্রথমেই তার একটা শিরোনাম লিখতে হবে। শিরোনামটা খুব স্পষ্ট হবে, বেশি বড় হবেনা আবার খুব ছোটও হবেনা।
যেমন “পরিবার ও কিশোরী অপরাধ: একটি বিশ্লেষণ”(এটা একটা গবেষণার শিরোনাম, যে গবেষণাটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পত্রিকার ফেব্র“য়ারি ২০০৭ সংখ্যায় প্রকাশ হয়েছে। )
গবেষণার ভূমিকা
আপনি যে বিষয়ে গবেষণা করতে চাচ্ছেন তার একটা ভূমিকা যে থাকবে। ভূমিকায় গবেষণার প্রাথমিক কথাবার্তা থাকবে। যেখানে আপনি গবেষণার বিষয়কে প্রাঞ্জল ও সহজভাবে তুলে ধরবেন।
গবেষণার যৌক্তিকতা ও তাৎপর্য
আপনি যে বিষয়ে গবেষণা করতে চাচ্ছেন তার প্রয়োজনীয়তা, যৌক্তিকতা, গুরুত্ব এবং তাৎপর্য তুলে ধরবেন।
এ বিষয়ে গবেষণার মাধ্যমে সম্ভাব্য ফলাফল ও তুলে ধরতে পারেন। এমন ভাবে তুলে ধরতে হবে যেন বিষয়টিতে কর্তাব্যক্তিরা সহজেই কনভিন্সড হয়।
সংশ্লিষ্ট গবেষণার উল্লেখ
আপনার গবেষণা কার্যক্রমের যৌক্তিকতা ও ন্যায্যতা তৈরির জন্য এ বিষয়টি নিয়ে আগে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে কী কী কাজ হয়েছে তা দেখবেন। সংশ্লিষ্ট গবেষণা প্রতিবেদন উল্লেখ করবেন।
গবেষণার উদ্দেশ্য
গবেষণা কার্যক্রম গবেষক কেন পরিচালনা করবেন তার একটা সংক্ষিপ্ত উদ্দেশ্য রিসার্চ প্রপোজালে উল্লেখ করতে হবে, যথোপযুক্ত শব্দের মাধ্যমে গবেষক তা সংশ্লিষ্টদের বোঝাবেন।
গবেষণায় ব্যবহৃত পদসমূহের সংজ্ঞায়ন
গবেষণা করার জন্য বা গবেষণাপত্র লেখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদ বা পরিভাষা গবেষক ঠিক কি অর্থে ব্যবহার করছেন তার একটা সংজ্ঞায়নের প্রয়োজন আছে। এটা বিভিন্ন গবেষনায় বিভিন্ন রকম হতে পারে।
অনুমিত সিদ্ধান্ত
গবেষক গবেষণার মাধ্যমে ঠিক কী বের করে আনবেন, অনুমানের উপর কতগুলো সিদ্ধান্ত নেবেন। বিষয় সংশ্লিষ্ট গবেষণা পড়েই গবেষক সে সিদ্ধান্তে পৌঁছবেন এবং এ অনুযায়ী কাজ শুরু করবেন।
গবেষণা পদ্ধতি
গবেষক তার গবেষনা কার্যক্রম কি ভাবে পরিচালনা করবেন, তার পদ্ধতি প্রস্তাবপত্র উল্লেখ করবেন।
এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ক্ষেত্রে তথ্যানুসন্ধানে পদ্ধতি, নমুনা নির্বাচন, গবেষণা উপকরণ, উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষন কৌশল ইত্যাদি বিষয় আসবে।
সময় বন্টন
পুরো গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করতে কত সময় লাগবে। কোন কাজে কত দিন লাগবে। ইত্যাদি নির্দিষ্ট ভাবে গবেষণার প্রস্তাব পত্রে থাকতে হবে।
গবেষণার বিষয় অনুযায়ী এটা ৬ মাস ও হতে পারে আবার ৬ বছরও হতে পারে।
থিসিসের সংগঠন
সম্পূর্ণ গবেষণা পত্র কি ভাবে সংগঠিত হবে, কয়টি অধ্যায় থাকবে, পরিচ্ছেদ কিভাবে বিন্যাস্ত হবে গুরুত্বপূর্ণ কি কি বিষয় আসবে তাও প্রস্তাবপত্রে থাকতে পারে।
বাজেট
পুরো গবেষণায় কত টাকা লাগবে, কোন খাতে কত লাগবে, তা বাজেটে আসবে। এ ক্ষেত্রে লোক জনের প্রশিক্ষণ, কাগজ, কালি ইত্যাদির খরচ ও আসবে।
তথ্যপঞ্জী
গবেষক গবেষণা পত্রটি তৈরি করতে কি কি বিষয় পড়েছেন, প্রাসঙ্গিক প্রন্থ, গবেষণা, প্রবন্ধ, সাময়িকী, জার্নাল ইত্যাদি আসবে।
গবেষকের পরিচিতি
যিনি গবেষণা করবেন তার একটা পরিচিটি প্রস্তাবপত্রে আসতে পারে, তার পূর্বের কাজ, ডিগ্রি, পড়াশোনা আগ্রহ ইত্যাদি সবই আসতে পারে, এক্ষেত্রে গবেষকের সিভিও দেয়া যেতে পারে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।