আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এটি একটি বেফাঁস কথার লুলীয় পোস্ট হলেও হতে পারে।।

যতোবার আমি শান্তি খুঁজেছি, ঠিক ততোবার আমার মাথায় শুধু একটি চিন্তাই এসেছে। সেটা হচ্ছে একটা ড্রিল মেশিন দিয়ে মাথার খুলিটা ফুটো করে দেওয়ার চিন্তা। প্রথম পর্বের সাথে এই পর্বের শুধুমাত্র বিষয়ে মিল, ঘটনাগুলোর সাথে কোন মিল নেই, এই ঘটনা গুলির মধ্যে দু একটা কিঞ্চিত ১৮+ হলেও হতে পারে তাই এগুলোকে নিয়ে আলাদা পোস্ট দিলাম। তবে এই পোস্টের সবগুলি কাহিনীই বন্ধুদের নিয়ে। প্রথমে একটা ছোট ঘটনা দিয়ে শুরু করি।

আমার এক বন্ধু আছে, খুব পাড়া বেড়ানো। সহজেই সবার সাথে বেশ ভালো মিশতে টিশতে পারে, মজা করে ভালোই। এসেই কয়েকটা বান্ধবী জুটিয়ে ফেললো বেশ দ্রুত। দেখতে দেখতে কুরবানির ঈদ চলে এলো। সেবার কুরবানির ঈদ এ সকাল থেকেই অবিরাম বৃষ্টি শুরু হল।

বন্ধুদের বাসাতেও তেমন একটা যাওয়া হল না সেবার। যাই হোক, ঈদের বন্ধও শেষ হয়ে গেলো, ক্লাস শুরু হল। ক্লাসে বন্ধুর সাথে দেখা , সবার মাঝে বসে তাই কার কিরকম ঈদ গেলো তা নিয়েই কথা হচ্ছিল। কথার মাঝে বন্ধুটি বলে বসলো, এবার ঈদে কেয়া দের বাসায় গিয়েছিলাম। কেয়া আমাদের সাথেই পড়ে একটা মেয়ে, শুনেছি বেশ বড়লোক।

আমার বন্ধুটির সাথে বেশ ভালোই দহরম মহরম সম্পর্ক ছিল কেয়ার। সবাই তাই টিপ্পনী কাটল বন্ধুটিকে। জিজ্ঞাসা করলো-যেয়ে কি করলি? বন্ধু টিপ্পনী বুঝে নাই, সে বলে বসলো- কেয়া আমাকে গলা পর্যন্ত খাওয়াইছে। আর যায় কোথায়? সারা বাড়ি চাউর হয়ে গেলো এই কাহিনী। বন্ধুদের মুখের অট্টহাসি ৩ দিন লাগলো থামতে।

আর বেচারা আমার বন্ধু ৭ দিন কলেজে আসতে পারেনাই। আমার এই বন্ধুটি বেফাস কথা বলার জন্য কিছুটা হলেও বিখ্যাত ছিল। বন্ধু নিজে সাইজে খুব একটা লম্বা না হলেও তার কথা তার থেকে ৪-৫ হাত বেশি লম্বা হতো। আর আগেই বলেছি খুব সহজেই মিশে যেতে পারতো সবার সাথে তাই ফার্স্ট ইয়ার শেষ হতে না হতেই আমাদেরই ব্যাচের এক মেয়ে তার প্রেমে পড়ে গেলো। যদিও মেয়েটা ওর থেকে ১ হাত বেশি লম্বা।

বান্ধবী যে প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে এটা বন্ধুর আগে আমরাই বুঝতে পারি। ক্লাসে বান্ধবী উদাস নয়নে বন্ধুর দিকে তাকিয়ে থাকতো আর আমরা বসে বসে নায়িকার বিরহ দেখতাম। শেষকালে বন্ধুর মাথায় চাটি মেরে একদিন বললাম-এই ছাগল , তুই বুঝস না যে আফরিন তোরে ভালু পায়? (মাইরের ভয়ে নাম চেঞ্জ করে দিলাম আরকি) "তাই নাকি?" আকাশ থেকে পড়লো সে। তবুও তার সেরকম কোন ভাবান্তর হল না, নিরবিঘ্নেই সে তার কাণ্ডকারখানা চালিয়ে যেতে লাগলো। আমাদের মাঝে মাঝেই এনাটমি ক্লাসে ডিসেকশন করতে হতো।

এসব ব্যাপারে আবার আমার ওই বন্ধুর আগ্রহ ছিল মাত্রাতিরিক্ত। একদিন সবাই ক্যাডাভার দেখছে এমন সময় বন্ধু আমাদের ঠেলে ঠূলে পাশে সরিয়ে দিয়ে নিজেই মাতব্বরের মতো ডিসেকশন শুরু করে দিলো। আফরিন পাশেই ছিল, আফরিন কে বলল শক্ত করে টান দিয়ে মাসল টা ধরে রাখতে, যেটা সে কাটবে। বেচারা আফরিন মনে হয় শক্ত করে ধরে রাখতে পারেনি, অথবা প্রিয়তম এর উপস্থিতিতে তার নারীসুলভ কোমলতা চলে এসেছিল তার মাঝে। ফলে মাসল ঠিকমতো কাটা গেলো না।

ডিসেকশন করতে ব্যর্থ হয়ে তাই বন্ধুর সব রাগ যেয়ে পড়লো মেয়েটার উপর। রাগের চোটে বলেই বসলো- কি? এতোটুকু কাজও করতে পারনা? শরীরে কোন শক্তি নাই নাকি? দানবের মতো বডি তো তোমার !!! বলাই বাহুল্য, এরপর থেকে নায়ক নায়িকার মুখ দেখাদেখি বন্ধ ছিল। তবে সবচেয়ে সাংঘাতিক ঘটনা ঘটাইছে আমার স্কুল জীবনের এক বন্ধু। সে কাহিনী বড়ই করুণ। ঈদের কয়েকদিন আগে সন্ধ্যার সময় আমরা তিন বন্ধু আর এক বড় ভাই , রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলাম।

বড় ভাই শুধু নামেই বড় ভাই ,সম্পর্কে প্রায় বন্ধুর মতোই আর কি। তিন বন্ধুর মাঝে একজনের নাম শফিক, সে আবার আমাদের সেই বড় ভাই মানে মনির ভাই এর ভাগনে। আরেক জন হল শুভ্র যে আমার প্রান প্রিয় বন্ধু এবং এই ঘটনার পালের গোদা। হাঁটতে হাঁটতে একসময় আমরা মনির ভাই যেই পাড়াতে থাকেন, সেই পাড়ার গলির মুখে পৌছুলাম। সন্ধ্যা নেমেছে, দাড়িয়ে গল্প করছি , এর মাঝে রিকশা করে দুইটা মেয়ে গেলো।

মেয়ে দুটিকে আমি চিনি, মনির ভাই এর ছোট বোন, দুইজনেই। বলতে অবশ্য বাধ্য হচ্ছি, তারা অতিবমাত্রায় সুন্দরী। শুভ্র ভালো ছেলে। কোনোদিন পুংটামি করে নাই। জাস্ট কয়েকদিন আগে বুয়েটে ভর্তি হয়েছে।

সেদিন কি হয়েছিলো জানিনা কিন্তু রিকশাটা দেখে কথা নাই বার্তা নাই ঠাস করে মনির ভাইকে বলে বসলো- মনির ভাই ,আপনাদের পাড়ায় যে এতো সেক্সি সেক্সি মেয়েরা ঘুরে ,এইটা আগে কইবেন না? আমরা বাকি দুই বন্ধু দুইদিকে লাফ দিতে গিয়েও পাড়লাম না। মনির ভাই এর মুখ ইতিমধ্যেই অন্ধকার হয়ে গেছে। অবস্থা সামাল দিতে শফিক মুখ খুলল। এই, তুই মনির ভাই এর বোনদের চিনস না?? এতক্ষনে শুভ্রও বুঝল কেস খারাপ। অবস্থা পুরাই কেরোসিন।

কয়েক মুহূর্ত লাগলো ওর এটা বুঝতে যে ও কি কাহিনী ঘটাইছে। যখন বুঝল ততক্ষনে প্যান্ট ভিজে যাওয়ার কথা। ও মনে হয় বিশ্বাসই করতে পারছিল না যে এরকম কিছু একটা হতে পারে। শুধু মনির ভাইয়ের দিকে ফিরে বলল- ও মনির ভাই, শফিক কি কয়? এরা আপনার বোন? হইতেই পারেনা। আমার পেটে ব্যাথা, এই বলে তাড়াতাড়ি ঘটনাস্থল থেকে ভাগলাম।

স্কুল বন্ধুরা সবাই এই কাহিনী ১ ঘণ্টার মাঝেই জেনে গিয়েছিলো। ফলাফল- ঈদের দিনও আমরা শুভ্রকে তার বাসায় পাই নাই। তাইতো সবাইকে বলি, মুখখানা একটু কন্ট্রোলে রাইখেন। মুখের বুলি মাঝে মাঝে বন্দুকের গুলির চাইতেও বেশি ভয়ংকর। বেফাস কথার পোস্টের এখানেই সমাপ্তি টানলাম।

যারা প্রথম পর্ব পড়তে চান ,তারা প্রথম পর্ব এখানে পাবেন। সবার বেফাঁস কথা দেখে আমারও মনটা হাঁসফাঁস করে (সমাপ্ত)  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।