আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাঘা-বাঘিনীর গল্প : বাঘিনী শ্রীমঙ্গলে, বাঘা কক্স-বাজারে

আমি সততা ও স্বচ্ছতায় বিশ্বাস করি। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে দেশের দ্বিতীয় সাদা বাঘের সন্ধান পাওয়া গেছে। বর্তমানে এটির স্থান হয়েছে কক্স-বাজারের বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্কে। গত ২৮ মে শনিবার শ্রীমঙ্গলের জালালিয়া সড়কের আবাসিক এলাকায় মো. আব্দুল হান্নানের বাড়িতে অবৈধভাবে সংরতি এই বাঘ সহ আরো প্রায় অর্ধশত প্রজাতির শতাধিক বন্যপ্রাণী উদ্ধার করেছে র‌্যাব ও বন-বিভাগের সদস্যরা। এদের অন্যতম ১১ টি বিরল ও বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীর মধ্যে একটি হচ্ছে এই সাদা বাঘ।

যা কিনা দেশের দ্বিতীয় সাদা বাঘ হিসেবে স্বীকৃত। স্থানীয় বন-বিভাগ সূত্রে এ পর্যন্ত দেশে দুইটি সাদা বাঘের সন্ধান পাওয়া গেছে। এর আগে আনুমানিক ২০০০ সালের দিকে শ্রীমঙ্গলের হাইল হাওর এলাকায় জেলেদের হাতে ধরা পরেছিল দেশের প্রথম সাদা বাঘ। যা শ্রীমঙ্গলের বন্যপ্রাণী সংরণবিদ সিতেশ রঞ্জন দেবেরে মিনি চিড়িয়াখানায় সংরতি রয়েছে। বাংলাদেশে এই সাদা রঙের বাঘের সন্ধান পাওয়া খুবই বিরল।

বিলুপ্তপ্রায় এই প্রজাতির প্রথম বাঘটির সন্ধান মেলে শ্রীমঙ্গলে। এবার দ্বিতীয় বাঘটিরও সন্ধান মেলেছে শ্রীমঙ্গলে। এ নিয়ে শ্রীমঙ্গলের মানুষের মনে চাঞ্চল্যে দেখা দিয়েছে। তবে সবচেয়ে বিস্ময়কর ব্যাপার হলো দ্বিতীয় সাদা বাঘের সন্ধান পাওয়ার পর দেশে সাদা বাঘের জোড়া তৈরী হয়েছে। প্রথমবার শ্রীমঙ্গলের হাইল হাওর থেকে সাদা রঙের যে বাঘটি উদ্ধার করা হয়েছিল সেটি ছিল নারী বাঘ অর্থাৎ বাঘিনী।

এবার প্রায় ১০ বছর পর আবারও শ্রীমঙ্গলেই উদ্ধার হয়েছে সাদা রঙের পুরুষ বাঘ অর্থাৎ বাঘা’র। এই বাঘা-বাঘিনীর সমন্বয়ে শ্রীমঙ্গলে সাদা বাঘের যুগল তৈরী হলেও বাঘা-বাঘিনী পরস্পরকে দেখতে পায় নি। বাঘা’র সংগ্রাহক মো. আব্দুল হান্নান জানান, আনুমানিক ৭/৮ বছর পূর্বে সাদা রঙের এই বাঘাটিকে তিনি শ্রীমঙ্গলের হাইল হাওর এলাকার লোকজনের কাছ থেকে উদ্ধার করে তার বাসভবনে নিয়ে আসেন। আব্দুল হান্নান তার বন্যপ্রাণী সংগ্রহের কথা আজোবধি কাউকে জানান নি। দীর্ঘদিন ধরে বাঘা ও বাঘিনী শ্রীমঙ্গলেই বসবাস করে আসছিল।

অথচ সিতেশ রঞ্জন দেবেরে সংগ্রহে থাকা বাঘিনীর খবর সবাই জানলেও কেউই জানতো না বাঘার খবর। এদিকে দীর্ঘদিন ধরে একই এলাকায় বসবাস করলেও এই বাঘা-বাঘিনীর দেখা হয়নি কখনো। প্রায় ১০ বছর পর এই বাঘা বাঘিনীর জোড়া মিললেও তারা বসবাস করছে পৃথক স্থানে। আব্দুল হান্নানের হেফাজত থেকে বাঘাকে উদ্ধারের পরপরই তাকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে চট্টগ্রামের কক্স-বাজার সাফারী পার্কে। বর্তমানে বাঘিনী শ্রীমঙ্গলে এবং বাঘা কক্স-বাজারে সংরতি রয়েছে।

দেশের বিরল ও বিলুপ্তপ্রায় সাদা রঙের এই বাঘা ও বাঘিনীর যুগল তৈরী হওয়াতে শ্রীমঙ্গলের গোটা শহরময় চাঞ্চল্যের জোয়ার বইছে পাশাপাশি কৌতুহলী মানুষের মনে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। যেহেতু বাঘা এবং বাঘিনী উভয়ই শ্রীমঙ্গলের হাইল হাওর থেকে উদ্ধার হয়েছে সেহেতু তাদের মধ্যে পূর্ব পরিচয় কিংবা সম্পর্ক থাকাটাই স্বাভাবিক। সাধারণ মানুষের ধারণা, এই বাঘা-বাঘিনীর মধ্যে দম্পত্তিজুটি ছিল। এই বাঘা-বাঘিনী জুটি থেকে নতুন আরো সাদা বাঘের প্রজনন ঘটটে পারে বলেও বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।