আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাধারন মানুষের ক্রয় ক্ষমতা ও দ্রব্য মূল্যঃ

আমাদের দেশের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম একবার বাড়লে তা আর কখনো কমে না, বরং বাড়তে থাকে। দ্রব্যমূল্য বাড়ার পেছনে যে সমস্ত কারণ থাকে সেগুলো দূর হলেও সভা, সমিতি, সেমিনার এমনকি সরকারের হস্তক্ষেপের পরেও দ্রব্যমূল্য কমতে দেখা যায়নি। আমাদের দেশে জনসংখ্যার তুলনায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের উত্পাদন ও সরবরাহ খুবই অপ্রতুল। যে কারণে আমাদের অর্থনীতি অনেকটাই আমদানিনির্ভর। যে দেশ থেকে জিনিস আমদানি করা হয়, সেসব দেশে তার দাম বাড়লে আমাদের দেশে তা হু হু করে বাড়তে থাকে।

কিন্তু দাম কমলেও আমাদের দেশে আর কমে না। মিডিয়ার কারণে আমরা জানতে পারি -বিদেশের বাজারে কোন্ কোন্ পণ্যের দাম কমেছে। এই খবরগুলো জনসাধারণকে অনুপ্রাণিত করলেও বাজারে এর কোন ইতিবাচক প্রভাব পড়ে না। বহির্বিশ্বে গমের দাম কমেছে এজন্য কম দামে আটা পাবো-এটা কখনো আশা করতে পারি না। সয়াবিন তেল বিদেশ থেকে আসে।

বিদেশের বাজারে যদি সয়াবিন তেলের দাম কমে, তাহলে আমদানিকারকরা কম দামে তেল আমদানি করেন, ফলে বাজারে সরবরাহ বাড়ে। এজন্য বাংলাদেশে সয়াবিন তেলের দাম কমবে-এটা আশা করা ভুল। ভুল বললে ভুল হবে, বরং এটা আশা করা অন্যায়। ডালের দাম বিদেশে কমে গেলেও বাংলাদেশে কমবে না। কমবে না চালের দাম, কমবে না গুঁড়ো দুধের দাম, কমবে না নিত্য প্রয়োজনীয় এমন অনেক জিনিসের দাম।

এজন্য যখন খবরের কাগজে কিংবা টেলিভিশনের পর্দায় দেখি কোনো একটা পণ্যের দাম বিদেশের বাজারে কমেছে, তখন আর অনুপ্রাণিত হই না। কারণ দফায় দফায় জিনিসপত্রের দাম বিদেশের বাজারে বাড়ে না, যা আমাদের দেশে অতি সাধারণ ঘটনা। প্রতিদিন বাড়ছে কোনো না কোনো নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম। দাম বাড়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছে সবাই, যে যেদিক দিয়ে পারছে দু-এক টাকা বাড়িয়ে দিচ্ছে। সেজন্য বিদেশে কোনো জিনিসের দাম কমে যাওয়ার খবর শুনে আনন্দিত হওয়ার কিছু নেই।

এই জাতীয় খবর শুনলে হতাশা বাড়ে। মাঝে মাঝে খবর আসে এ বছর বাংলাদেশে অমুক ফসল, তুমক ফসলের বাম্পার ফলন হয়েছে। যেমন বোরো কিংবা ইরি ধান। ফলে বাজারে চালের দাম কমবে আর সাধারণ জনগণ কম দামে কিনতে পারবে—এটা আশা করা যায় না। যারা বাজার নিয়ন্ত্রণ করেন, সরকার কিংবা ব্যবসায়ী এই খবরগুলো তাদের মাঝে কোনো প্রভাব ফেলে কিনা সন্দেহ আছে।

ব্যবসায়ীরা নানারকম অজুহাত দেখিয়ে জিনিসপত্রের দাম বাড়ান, সাধারণ মানুষ তার কষাঘাতে জর্জরিত, কেউ প্রতিবাদ করে, কেউ করে না, কেউ সয়ে যায়, কেউ বলে যায়। কে শোনে কার কথা? দ্রব্যমূল্য বাড়বে এবং বাড়তে থাকবে এটাই যেন নিয়ম। এই নিয়মের শেষ কোথায় কে জানে? এখন মড়ার উপড় খারার ঘাঁ হয়ে দাড়িয়েছে বাস ভাড়া! জ্বালানী তেলের দাম লিটার প্রতি দুই টাকা বাড়ানোয় বাস মালিক আর সন্ত্রাসী ড্রাইভার হেল্পারেরা প্রতি মাইলে যাত্রী প্রতি ভাড়া বাড়িয়েছে গড়ে পাঁচ টাকা! দ্রব্যমুল্যের কারনে সাধারন মানুষের রক্ত ঘাম ঝড়ানো টাকা হাওয়া হয়ে যাচ্ছে। দিনে একবেলা পেটপুরে খাওয়াও কস্ট সাধ্য সাধারন মানুষের হাড়জিরজিড়ে অবস্থা আর মন্ত্রী সভার এ টু জেড সব সদস্যদের চেহারা দিনে দিনে স্ফীত হচ্ছেতো হচ্ছেই! মাইঙ্কার চীপায় পরে সাধারন মানুষের অবস্থা ত্রাহি মধুসূধন! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।