আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিজ্ঞাপন-২(রম্য-ডায়রিয়া)

অলৌকিক আনন্দের ভার বিধাতা যাহারে দেন,তাহার বক্ষে বেদনা অপার; পণ্যের প্রচার ও প্রসারে বিজ্ঞাপনের গুরুত্ব অনেক। একটা সময় ছিল যখন টিভিতে অনুষ্ঠানের ফাকে ফাকে বিজ্ঞাপণ দিত। তখন সবাই বিজ্ঞাপনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করত এবং মনযোগ দিয়ে তা দেখত। আর এখন তো টিভি চ্যানেকগুলো বিজ্ঞাপনের ফাকে ফাকে অনুষ্ঠান দেখায়। তবে বিজ্ঞাপনের আবেদন মানুষের কাছে ঠিকই রয়ে গেছে।

তাই সৃজনশীল বিজ্ঞাপন এখনো তৈরি হয়। এর পাশাপাশি দেশ দেশ দেশ বাংলালিঙ্ক দেশ এর মত গায়ে চুলকানি ওঠা বিজ্ঞাপনও দেখা যায়। তবে আমার লেখার বিষয় এইসব বিজ্ঞাপনের সমালোচনা না। আজকে যে বিজ্ঞাপনটা নিয়ে লিখব সেটা নব্বই এর দশকের শেষ দিকের জনপ্রিয়(!) একটা বিজ্ঞাপন...আমরা স্কুলের কয়েকজন বন্ধু মিলে বিজ্ঞাপনটার এই প্যারোডি তৈরি করেছিলাম। দেখি কারা কারা এই প্যারোডি দেখে বলতে পারেন এটা কোন বিজ্ঞাপন ছিল... প্রথম দৃশ্যঃ এক টাক্কু(ইশকুলের মাস্টর সাব) এক গ্রামের এক দোকান থেকে আকিজ বিড়ি কিনতেছে।

এমন সময় এক লোক লুঙ্গি কাছা দিয়ে দৌড়ে দোকানে আসল...আর বলল ফরিদ ভাই ফরিদ ভাই তোমার দোকানে কি পানি-টানি আছে... ফরিদঃ আছে মানে!!!পুরা বদনা ভরা পানিই আছে... আগন্তুকঃ শিগগির দাও...লুঙ্গিডা বাচাই... দ্বিতীয় দৃশ্যঃ আগন্তুক বদনা লইয়া প্রবলবেগে প্রস্থানের পর মাস্টার সাহেব ফরিদের দিকে তাকাইয়া প্রশ্ন করিবে, “ফরিদ তুমি তোমার দোকানে বদনা ভরা পানি রাখো???” ফরিদঃ হ মাস্টার সাব শিক্ষা পাইছি... মাস্টারঃ শিক্ষা!!(আশ্চর্যান্বিত হয়ে) দৃশ্য তিনঃ ফরিদের শিক্ষা পাওয়ার ঘটনা বর্ণনার সময় তা ফরিদের মনের ক্যনভাসে ফুটে উঠবে... “গেল বর্ষায় দুপুরে বাড়ি থেইক্কা গরুর ঝাল মাংস দিয়া খিচুড়ী খাইয়া দোকানের দিকে বাইর হইলাম। বউ ঝালডা মনে হয় একটু বেশিই দিয়া ফালাইছিল। হঠাৎ পেটে দিল মোচড়...এহন বদনা ভরা পানি কই পাই...স্যানিটারী লেট্রিন সে তো মেলা দুর...কোনমতে দোকানের পিছনের কচুক্ষেতে কামডা সারলাম। তারপর কচুপাতা দিয়া......(!!!!)বুঝলেনতো মাস্টার সাব...সেই থেইক্কা দোকানে সব সময় রাখি বদনা ভরা পানি...” শেষ দৃশ্যঃ এবার বিজ্ঞাপনের মুল বিষয়ে আসা হইবে যেখানে ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকবে... “হাজার মানুষের লুঙ্গি বাচায়; ফরিদের পানি ভরা বদনায়...” একটা প্রচলিত কৌতুক দিয়ে শেষ করি... চার জন লোক একসাথে আগুনের পাশে গোল হয়ে বসে আলোচনা করছে, সবচেয়ে দ্রুত কোন জিনিস। প্রথমজন বলছে, "চিন্তা , বুঝলে? হাতে কাঁটার খোঁচা খেলে, কিংবা তামাকের ছ্যাঁকা খেলে কী হয়? সেটা চিন্তা হয়ে সাথে সাথে মাথায় ঘা দ্যায়! " দ্বিতীয়জন বলছে, "আরে না।

চোখের পাতা ফেলা হচ্ছে সবচে দ্রুত। চোখের পলক ফেলতে না ফেলতেই আবার সব আগের মতো দেখা যায়। " তৃতীয়জন বলছে, "উঁহু, আলো। দ্যাখো না, সুইচ টিপতেই ঘর থেকে কিভাবে অন্ধকার সরে যায়?" চতুর্থজন বলছে, " সবচে দ্রুত হচ্ছে ডায়রিয়া। " বাকিরা ঘাবড়ে গেলো, "কিভাবে, কিভাবে?" "গেলোবার নয়াখালিতে গিয়ে হোটেলে, ওদের তরকারি খেয়েছিলাম, বুঝলে? ব্যাটারা এতো ঝাল খায়! রাতের বেলা হোটেলের বিছানায় শুয়ে আছি, হঠাৎ পেটটা কেমন যেন করে উঠলো।

তারপর আমি কোন চিন্তাও করতে পারলাম না, চোখের পাতিও ফেলতে পারলাম না, এমনকি ঘরের সুইচও টিপতে পারলাম না, তার আগেই ..........." কাজেই সাবধান। আজ থেকেই ব্যবহার করা শুরু করুন ফরিদের বদনা ভরা পানি... ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।