আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বয়স্ক-ভাতা দেওয়ার কথা বলে.. দাদারা. জমি নিচ্ছেন দখল করে (লিখে নিচ্ছেন)

বয়স্ক-ভাতা দেওয়ার কথা বলে পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নের একটি প্রভাবশালী চক্র অসহায় বৃদ্ধ লক্ষ্মী বেওয়ার (৮০) এক একর ১৭ শতাংশ জমি নিবন্ধন করিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় লক্ষ্মী বেওয়া তাঁর সম্পত্তি ফেরত পেতে গলাচিপার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। পাশাপাশি আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে গলাচিপার গজালিয়া ইউপির ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য সালাম মুন্সীসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করে ওই মামলার সঙ্গে একীভূত করার নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার বিবরণ, আদালত ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের কলাগাছিয়া গ্রামের লক্ষ্মী বেওয়ার স্বামী বসন্তকুমার শিকারী ২৫ বছর আগে মারা যান। মৃত্যুর আগে তিনি লক্ষ্মী বেওয়াকে পাশের গজালিয়া ইউনিয়নের ইচাদি মৌজার দুই একর ৪৪ শতাংশ জমি জীবনস্বত্ব দলিল করে দেন।

নিঃসন্তান লক্ষ্মী বেওয়া গলাচিপার গোলখালী ইউনিয়নের ছোট গাবুয়া গ্রামে নাতির বাড়িতে থাকেন। গত ফেব্রুয়ারি মাসে গজালিয়া ইউনিয়নের ইচাদি গ্রামের শংকর চন্দ্র শিকারী, মনতোষ শিকারী, রাখাল চন্দ্র শিকারী, নিমাই চন্দ্র শিকারী, অনুকূল চন্দ্র শিকারী, রবিন চন্দ্র শিকারী, কালাচান শিকারী ও গজালিয়া ইউপির ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুস সালাম মুন্সী তাঁকে বয়স্ক-ভাতা দেওয়ার কথা বলে গলাচিপা শহরে নিয়ে যান। ওই সময় তাঁরা লক্ষ্মী বেওয়ার কাছ থেকে অনেকগুলো স্ট্যাম্পে টিপ সই নেন। পরে ওই সব স্ট্যাম্পে লক্ষ্মী বেওয়ার এক একর ১৭ শতাংশ জমি বিক্রির দলিল লিখিয়ে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি গলাচিপার সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয় থেকে নিবন্ধন করিয়ে নেন। ঘটনা জানাজানি হলে ১ মার্চ লক্ষ্মী বেওয়া তাঁর জমি ফেরত পেতে গলাচিপার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালতে মামলা করেন।

আদালত ওই দিনই এক আদেশে উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রারকে বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন। সাব-রেজিস্ট্রার আবদুল বারিক গত ১২ এপ্রিল আদালতে দাখিল করা তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, বিধিসম্মতভাবেই ওই দলিল সম্পন্ন হয়েছে। তবে ১৩ এপ্রিল মামলার ধার্য তারিখে আদালত ওই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে দুই আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও পাঁচজনের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন। পরে আদালতে দেওয়া বিবাদীদের জবানবন্দিতে অসামঞ্জস্যপূর্ণ তথ্য থাকায় ২০ এপ্রিল আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে একটি মামলা (মিসকেস) করেন। ওই মামলায় গজালিয়া ইউপির ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুস সালাম মুন্সী, সংশ্লিষ্ট দলিললেখক ফকরুল আলম, দলিল শনাক্তকারী নিরঞ্জন চন্দ্র হাওলাদার, সাক্ষী সনদ চন্দ্র শিকারী ও জয়দেব শীলকে আসামি করা হয়।

আদালত ওই দিনই এক সুয়োমোটো আদেশে মামলাটি লক্ষ্মী বেওয়ার মামলার সঙ্গে একীভূতকরণের নির্দেশ দেন। লক্ষ্মী বেওয়া বলেন, ‘কাগজে টিপ সই রাইক্ক্যা অরা আমারে মোডে এক শ টাহা দিছে। পরে হুনি (শুনি) আমার সব জমি লইয়া গ্যাছে। ’ সালাম মুন্সী বলেন, ‘লক্ষ্মী বেওয়ার জমির দলিলের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। ’ জানতে চাইলে সাব-রেজিস্ট্রার আবদুল বারিক বলেন, ‘জীবনস্বত্ব দলিলমূলে প্রাপ্ত কোনো জমি হস্তান্তরযোগ্য নয়।

’ তাহলে লক্ষ্মী বেওয়ার জমির বিক্রয় দলিল কী করে নিবন্ধন করা হলো—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ওই জমি জীবনস্বত্ব দলিলমূলে প্রাপ্ত, এমন কোনো রেকর্ড হয়তো আমাদের কার্যালয়ে ছিল না। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে। ’ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।