সাধারণ মানুষের বিপাক বাড়ছেই। মূল্যস্ফীতি বেড়েছে আরও এক দফা। এতে সীমিত আয়ের সাধারণ মানুষের জীবনযাপনের ব্যয় আরও বেড়ে গেল। এর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় পড়েছে গ্রামাঞ্চলে থাকা দরিদ্র মানুষ। কারণ, পল্লি এলাকায় মূল্যস্ফীতির হার শহরের তুলনায় অনেক বেশি বেড়েছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) গতকাল সোমবার এপ্রিল মাসের ভোক্তা মূল্যসূচক প্রকাশ করেছে। বিবিএসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত এপ্রিল মাসে মূল্যস্ফীতির হার হয়েছে ১০ দশমিক ৬৭ শতাংশ। আগের মাস অর্থাৎ মার্চে তা ছিল ১০ দশমিক ৪৯ শতাংশ। আর গত অর্থবছরের একই সময়ে মূল্যস্ফীতির হার হয়েছিল ৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
এর আগে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়।
সে সময় মূল্যস্ফীতি ঘটেছিল ১১ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
১০ দশমিক ৬৭ শতাংশ মূল্যস্ফীতির অর্থ হচ্ছে, আগে যে পণ্য কিনতে ১০০ টাকার প্রয়োজন হতো, সেই একই পণ্য কিনতে এখন দরকার পড়বে ১১০ টাকা ৬৭ পয়সা। একজন মানুষের এই পরিমাণ আয় যদি না বাড়ে, তাহলে তাকে এখন আগের তুলনায় কম পণ্য কিনতে হবে।
অর্থনীতিবিদেরা মনে করেন, অর্থনীতির জন্য কিছুটা মূল্যস্ফীতি থাকা ভালো হলেও এর হার ১০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেলে তা দরিদ্র মানুষকে চরম কষ্ট দেয়। কারণ, এসব মানুষের আয় একই হারে বাড়ে না।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) মনে করে, মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশ ছাড়িয়ে যাওয়াটাই বিপজ্জনক। এর ফলে দারিদ্র্যের প্রকোপ বাড়ে।
বিবিএসের হিসাবে বাংলাদেশের একজন মানুষ আয়ের প্রায় ৫৯ শতাংশ ব্যয় করে খাদ্য কিনতে। ফলে খাদ্যের মূল্য বেড়ে গেলে মূল্যস্ফীতিতে বড় ধরনের চাপ তৈরি হয়। এপ্রিলে খাদ্যসূচকে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
আগের মাসে অর্থাৎ মার্চে তা ছিল ১৩ দশমিক ৮৭ শতাংশ এবং ২০০৯-১০ অর্থবছরের এপ্রিলে ১০ দশমিক ৪৭ শতাংশ। অন্যদিকে খাদ্যবহির্ভূত সূচকে মূল্যস্ফীতি এখন মাত্র ৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ, মার্চেও যা ছিল ৪ দশমিক ৩২ শতাংশ।
আবার পল্লি অঞ্চলে এপ্রিলের মূল্যস্ফীতির হার হচ্ছে ১১ দশমিক ৪৯ শতাংশ। এর মধ্যে খাদ্যসূচকে মূল্যস্ফীতি ১৫ দশমিক ৩৮ শতাংশ এবং খাদ্যবহির্ভূত সূচকে ৩ দশমিক ৯০ শতাংশ। অন্যদিকে শহর এলাকায় এপ্রিলে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ৬২ শতাংশ।
এ ক্ষেত্রে খাদ্যসূচকে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১২ দশমিক ৪ শতাংশ এবং খাদ্যবহির্ভূত সূচকে ৪ দশমিক ১৮ শতাংশ।
উৎসঃদৈনিক প্রথমআলো ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।