উড়ে যাই, উড়ে যাই, উড়ে উড়ে যাই. . .
মিতু কথনের দ্বিতীয় পর্ব
মিতু অনেক চেষ্টা করেছে ফিরে তাকানোর। কিন্ত সেটা এখন অনেক বেশি দূরে চলে গেছে। কাছে থাকর পর যখন কোনো কিছুর মর্ম বুঝা যায় না- সেটা টেরও পাওয়া যায় কাছেরটা বহু দূরের হলে।
সেদিন এমন মেঘে ঢাকা ছিলো না। রৌদ্রকরোজ্জ্বল সুন্দর ঝলমলে দিনেই তো জীবনের সেই সুখের কিছুটা সময় কেটেছে।
সময়টা মিস করে মিতু। নিজের জন্য হলেও হয়তো সেটা নিয়ে তার সুখী বা সুখী মনোভাব থাকা উচিত ছিলো। বেশ কয়েক বছর পার হলো তার। ভার্সিটিতে প্রেমের অফারের জন্য মিতুর চেয়ে ভালো কাউকে যে তার ডিপার্টমেন্টের বা সহপাঠীরাই পায়নি সেটা অফারের সংখ্যাধিক্য প্রমাণ। কিন্তু এগুলো নিয়ে সে এখন ভাবে না।
তারপরও তার মনে পড়ে ক্যাম্পাসে সকাল ৮ টায় ক্লাসের আগেই বাসে কের নামার পর কয়েকটা পরিচিত মুখ। আবার বাসের মধ্যেই থাকতো কেউ।
তাজা দুর্বাঘাসের বুকে বসে আড্ডায় মশগুল সময়! তাহিন, রুবি, ফাহমিদ, সানি কতো যে আড্ডা আরো কতো জনের সঙ্গে। মনে পড়ে। প্রেমের প্রস্তাবের নানা চটকদার কথা ও গল্প ফাঁদতে অনেকের ই জুড়ি ছিলো না।
সহপাঠী থেকে শুরু করে ক্যাম্পাসের অনেকেই তাকে নিয়ে প্রেমের গল্প রচনা , পরিচালনা করেছে! সত্যিটা যে কখনো কিছু শুরুই হয়নি একথা মিতুর চেয়ে কে আর ভালো জানে!
দৃঢ় ও স্পষ্টভাষী মিতু এগুলো যেন মনোযোগই দেয় না। তার নিজের মনে মাঝে মাঝে উঁকি দেয়- একটুও সাড়া না দিয়ে কি ভুল হচ্ছে! না মনে হয়! আচ্ছা হলে হোক!
থার্ড ইয়ারে উঠার পর থেকে পড়াশুনা নিয়ে যেন মিতু, তার সহপাঠীদের তুমুল তোড়জোড়! মনে হয় এতোদিন তারা ছুটিতে ছিলো! সবে ভার্সিটি জীবনের ক্লাস শুরু হয়েছে।
ছেলেরা তাকে যেন ইচেছ করেই নোট দিয়ে যেতো। মিতু সেদিকে নজর থাকলেও নিজেও অনেক নোট করার চেষ্টা করতো। রেজাল্ট তার প্রথম না হলেও সে মোটেই পিছিয়ে নেই।
অন্যদের তুলনায় শীর্ষ ৩/৪ জনের মধ্যেই থেকেছে তার রেজাল্ট।
হঠাৎ করেই যেন ৪র্থ ইয়ার শেষ হয়ে গেলো। মাঝে কয়েকদিন ভার্সিটির ক্লাস, টার্ম টেস্ট, মিড টার্ম, প্র্যাকটিক্যাল সব মিলিয়ে মহা ব্যস্ততা!
এভাবে বুঝি চলে গেলো চার বা বাস্তবের ৬ টি বছর! প্রেম তাকে ডাকলো সে কি গেলো না! প্রেম , ভালোবাসার ঠুনকো বা খানিক ভালো লাগার বিষয়গুলো তবে কি সে মিস করলো!
আজ মনে হচ্ছে কিছুটা সময় ভালোলাগার পেছনে খরচ করা যেতো। তবে যে ব্যক্তিত্ব ও দৃঢ়তা তাকে বড় করতে শিখিয়েছে সেখানে এই ধরনের আবেগ তেমন জায়গা নেয়ার উপায় নেই। তারপরও ভাবে মিতু. . . হয়তো পারতো আরো কিছু রঙ্গিন ঘটনার সাক্ষী হতে! তবে এটা নিয়ে আক্ষেপ তার নেই!
সে এখন ভাবছে বোনের কাছে কানাডায় চলে যাবে।
ওখানে গিয়ে মাস্টার্সটা কমপ্লিট করে ভাববে বিয়ে বা অন্য কিছু!
ভার্সিটির সহপাঠী ফাহমিদকে তার মনে পড়ে বিশেষ কারণে। ছেলেটা বোকা টাইপের হলেও তার কেন জানি সঙ্গ একটু ভালো লাগতো। যদিও আরেক সহপাঠী সানিও তার প্রতি ভীষণ আকর্ষিত ছিলো!
মিতু ভাবছে ফাহমিদ একটি ল্যান্ড ফার্মে যে চাকরি করছে সেটার চেয়ে ভালো কিছু না হলেও কয়েক বছর পর ওকে নিয়ে জীবনের অন্য কিছু চিন্তা করা যায়!
তবে, মিতু জানে তার পরিবারের অনেকেই, এমনকি তার বোনও সেটার পক্ষে থাকবে না। তারপরও সে ভাবে, ভাবে. . .. এখন একটা স্কুলে চাকরি করে সময় কাটাচ্ছে সে। মাস্টার্সটাও ফাকেই করে ফেলেছে।
এখন . . . .
মাথায় উঁকি দিচ্ছে অনেক কিছু . . . ...
(এক বন্ধুর এলোমেলো কিছু ভাবনা- ঘটনা সত্য, নাম, চরিত্র কাল্পনিক)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।