ভাগ্য তথ্য
#######
‘-ভাগ্য পূর্বনির্ধারিত।
চেষ্টার মাধ্যমে ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটে,
--এটাও পূর্বনির্ধারিত॥
কে কখন ভাগ্যের পরিবর্তনের চেষ্টার জন্য ভাববে,
-আর কখন ভাগ্য পাল্টানোর চেষ্টার জন্য ভাববে না,
--সমস্তটাই পূর্বনির্ধারিত॥’--
এই মহাবিশ্ব, --কখনোই, ---
গতিময় অস্থির আবেগ বা শক্তির নিয়ন্ত্রণে ছিলো না,
-আগামীতেও থাকবে না, -বর্তমানেও নয়॥
‘সত্য-সমর্থিত স্থির বিবেকের ভাবনা ’র মাধ্যমেই
ভাগ্য নিয়ন্ত্রিত হয়।
মানুষের ভাগ্য, --মানুষের নাগালের সীমানায় ॥
স্থির বিবেককে নিজের ইচ্ছায়
অস্থির আবেগের আওতায় যেতে দিলে
ভাবনার সুন্দর সাজানো আকৃতির ভাগ্য বিকৃত হ’য়ে
গতি-চিত্রে প্রকাশিত হয় মনুষ্য চেতনায় ॥
স্থিরের আনন্দের সাথে অস্থিরের যন্ত্রণা যোগাতেই
সকল দৃশ্য-চিত্র ‘গত’র অনুগতিক হয়;
--সকল ঘটনাচিত্র মানুষের জন্য মঙ্গলময়।
যেকোনো স্বাধীন বুদ্ধিমান মানুষ তার নিজের ইচ্ছায়
স্থির থাকে কিম্বা ভোগে অস্থিরতায় ॥
সৃষ্টিপ্রিয় অহংকারীর নিত্য ইশারায়
পরম সূক্ষ্ম হিসেবের আওতায়
মানুষের উপভোগের উপযোগী ছন্দে
দারুণ দ্বন্দ্বময় এই মহাজগৎ
অ-স্থির রূপেই নিত্য সৃষ্ট হয়।
নির্বোধ অধীর মহাসৃষ্টি, -নিত্য বহুরূপী বাস্তব,
সমকালে সাধারণ মানুষের
স্থির চেতনার নিয়ন্ত্রণের অধীনে।
মানুষ ভাগ্যবান, -নিঃসন্দেহে ভাগ্যবান মানুষ।
-স্থির মানুষের ভাবনার মাধ্যমে কিম্বা
মানুষের স্থির ভাবনার মাধ্যমেই
মহাসৃষ্টির ভাগ্য নিয়ন্ত্রিত ॥
বোধনের স্বাধীনতা দিয়ে সৃষ্ট সকল মানুষ,
--মানুষ মহাভাগ্যবান, --
--মানুষ অস্থির হয় নিজের ইচ্ছায়;
--মানুষ স্থির থাকে নিজের ইচ্ছায়।
মানুষ যদি নিজেকেই নিয়ন্ত্রণে রাখতে না-চায়;
--যেকোনো কারণে হতাশায় ডোবে,
কিম্বা আত্মহারা হয়,
-অথবা, --ধৈর্য হারিয়ে আত্মসম্মান নষ্ট হ’তে দিয়ে
শ্রমবিমুখ পরনির্ভর ভিখারির মতো
করুণাকামী হ’য়ে
ভাবনামুক্ত নির্বোধ ভাগ্যবান হ’তে চায়, -
-তাহলে অস্থির জগৎটা নিত্য আনন্দ না-দিয়ে
তাকে বরং বিচিত্র যন্ত্রণায় ভোগায় ॥
অস্থির চেতনার যন্ত্রণা এতোই তীব্র যে,
-দিশেহারা মানুষ ভুলে যায় নিজের অপরাধ,
-উন্মত্ত মানুষ ভুলে যায় ক্ষমাপ্রার্থনা,
অথবা অন্যের প্রতি অভিযোগ আনে তো আনেই,
আবার বিচারক সেজে নিজেই সাজায়
ভিত্তিহীন মনগড়া বিচারের রায়।
উন্মত্তরা কখনোই কোনো সাক্ষ্য বা প্রমাণ
মেনে নিতে পারে না;
যদিও দিশেহারা স্বয়ং সজ্জিত বিচারক পায়
উন্মত্তকালীন সান্ত্বনা, --
-স্থায়ী শান্তি পায় না, -সঙ্গী তার নিত্য যন্ত্রণা ॥
ভাগ্যের নিয়ন্ত্রক মানুষ, --সাধারণ মানুষ।
নিয়ন্ত্রক হবার জন্য দুর্বল মানুষকে কখনো
ঐ ভাগ্যের সৃষ্টিকারী হ’তে হয় না, -অথবা,
সূক্ষ্মতম হিসেবের বিশ্রামহীন হিসেবকর্তা,
--অর্থাৎ ‘অহংকারী স্রষ্টা’ হওয়াও জরুরী নয়,
--অন্তত দুর্বল মানুষের জন্য জরুরী নয়॥
‘আরামপ্রিয়, -নিত্যযন্ত্রণা থেকে মুক্তিকামী মানুষ
কখনোই বিশ্রামহীন সৃষ্টিকারী নয়,
অথচ শান্তিকামী মানুষ সৃষ্টিসূত্রেই
এই মহাসৃষ্টির ভাগ্যের নিয়ন্ত্রক!’--
-মানুষের ভাগ্য দর্শনে,
অমানুষ ভোগে নিত্য যন্ত্রণায়;
--নিজের হিংসার আগুনে।
এখানে সম্পূর্ণ মানুষকে,
-আত্মনিয়ন্ত্রিত, অস্থিরতামুক্ত আনন্দিত,
সমষ্টির প্রশংসাকারী-প্রশংসিত মানুষকে,
সৃষ্টি প্রিয় সৃষ্টিকারী
স্বয়ং সৃষ্ট মহাসত্য অহংকারী
নিজবন্ধু রূপে দেন মহাসম্মান।
--স্রষ্টার বন্ধু নিয়ন্ত্রক, -মানুষ পরম ভাগ্যবান॥
দৃশ্যমান সুন্দর অবয়বের ক্রমাগত চিত্র,
এ মহাজগৎ, -‘এই আছে এই নাই’ সূত্রে
নিমেষেই ‘ধ্বংস’র এবং ‘সৃষ্টি’র সমন্বয়
অদৃশ্য স্থির সত্যের নিমেষের ইচ্ছায়
শূন্য থেকে সবকিছু নিত্য সৃষ্টিময়।
স্থির অদৃশ্য সত্য, -‘স্থান-কাল’-এর মাত্রায়
সীমাবদ্ধ হ’য়ে সুন্দর অবয়বে প্রকাশিত হয়॥
এখানে, -মনুষ্য সত্যের অস্তিত্ব চিত্রিত
তার বিচিত্র নিজস্ব স্বতন্ত্র ভাবনার গতিময়তায়॥
আবেগকে দমিয়ে রাখা বিবেকের ভাবনায়, --
অর্থাৎ, --যে ভাবনা সুন্দরের সাথে মিলে
অস্তিত্বের যোগ্য দাবিদার,
-সত্য সমর্থিত সেই ভাবনার সূত্র পেয়ে,
-অনির্ভুল মানুষ, -ভাবিত হয় অথবা ভাবে যে,
-‘এই মহাসৃষ্টি, -মহাভারসাম্যে গতিময়,’
---এটাও পূর্বনির্ধারিত॥
রঙ্গপুর - ১১/১০/২০০২ খ্রি:
##############################
ভাগ্য-দর্শন
########
এই বর্তমান, -গত অতীতের ভাগ্যফল।
সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ, -এই বর্তমানের ভাগ্য-ভাবনা ॥
কাল বা সময় যেখানে স্থির নয়,
-সেখানে, -‘বাস্তব’ বর্তমানের অস্তিত্ব নেই।
ভবিষ্যৎ বর্তমানে পৌঁছানো-মাত্রই
অতীত হিসেবে গণ্য॥
‘আমি’, -মনুষ্যসত্তা, -সর্বকালে ভ্রাম্যমান;
ভাগ্যের সন্ধানে ভিখারির চেহারায় আমি বেমানান ॥
আমার অভিজ্ঞতায় শুধু গত অতীতটাই
প্রমাণিত সত্য এবং বাস্তবরূপে প্রকাশিত;
-আগামীতে যা’ প্রকাশিত হবে, -তা’ সম্ভাব্য সত্য;
-তা’ সুনির্দিষ্ট ছকে অতীতের সঙ্গে খাপ-খাওয়ানো।
-অতীতের পেছনটাই ভবিষ্যতের সম্মুখের প্রতিফলন॥
---অতীতের সম্মুখ-পিছন দু’পিঠই প্রকাশিত॥
অপ্রকাশিত ভবিষ্যৎ অতীতে পৌঁছালে তবেই তা’ আসে
পূর্ণ-প্রকাশিত মানুষের জ্ঞানের সীমানায়॥
একই সৃষ্টিসূত্রে আমিও প্রকাশিত অতীত কালে।
‘অতীত-আমি’প্রকাশিত, -‘বর্তমান-আমি’র চেতনায়॥
সকল ভবিষ্যৎ তার অতীত বা গত অনুসারেই গতিময়;
অর্থাৎ, --ভবিষ্যৎ ‘গত’র অনুগতিক, --গতানুগতিক।
ভবিষ্যৎ অতীতের গতানুগতিক, -এই বাস্তবতায়, --
এখানে ভাগ্যভাবনার বা ‘ভবিষ্যৎ ভাবনা’-র সত্যতা
স্থির মানুষের স্থির হিসেবের আওতায়॥
---অতীত গোপন নয়,
-এবং, যা’ হবার নয় তা’ হবে না কখনো॥
-গতানুগতিক বাস্তবতায়, -ভবিষ্যৎ ভাগ্যকে
সহজেই মাপা যায়।
তারপরও অতিলোভী কামনার উস্কানিতে, -
প্রকাশিত অতীত আর সম্ভাব্য ভাগ্যকে
অমান্যের প্রতিজ্ঞাকারী
অতিচালাক মানুষ নিজগুণে যা’ পায়,
কখনোই তা’তে আনন্দিত নয়;
--বরং, চতুর মানুষ
নিজের ইচ্ছায় ভোগে নিত্য যন্ত্রণায়॥
রঙ্গপুর -০২/১১/২০০২ খ্রি:
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।