যতোবার আমি শান্তি খুঁজেছি, ঠিক ততোবার আমার মাথায় শুধু একটি চিন্তাই এসেছে। সেটা হচ্ছে একটা ড্রিল মেশিন দিয়ে মাথার খুলিটা ফুটো করে দেওয়ার চিন্তা।
সবাই বড়দের জন্য জোকস লিখে , কেউ ছোটদের কথা ভাবে না। আমার এই পোস্ট তাই সোনামণিদের জন্য। বড়রা পড়লে নিজ দায়িত্বে পড়বেন।
হাসি না আসলে আমার কিছু করার নাই কিন্তু।
১/
৬-৭ বছরের এক ছোট ছেলে এক হুজুরের কাছে আরবি শিখে । হুজুরের বাসা ছাত্রের বাসা থেকে অনেক দূরে । ছাত্র সাইকেলে করে পড়তে যায় , পড়া শেষ করে ফিরে আসে ।
একদিন মা ছেলেটাকে এক বাটি পায়েশ দিয়ে বললেন– তুই আর তোর হুজুর এটা ভাগ করে খেয়ে নিস।
ছাত্র ভালো মনে বাটিটা নিয়ে হুজুরের কাছে পড়তে গেলো।
হুজুর ছাত্রের হাতে বাটি দেখে খুব কৌতূহলী হলেন।
ওটা কি রে?
আজ্ঞে, মা পায়েশ রেধে পাঠিয়েছে। আমাকে এবং আপনাকে খেতে বলেছে।
তাই নাকি? হুজুর জিভের জল টানলেন মনে হয়।
দে তো দেখি কেমন হয়েছে।
এই বলে হুজুর নিজেই বাটির পুরো পায়েশ টুকু সাবার করলেন।
ছেলেটা তো মনে মনে দারুন রাগ হল। লোভী হুজুরকে শায়েস্তা করার জন্য তার প্রান আইঢাই করতে লাগলো।
পরের দিন মা আবারো একটা বাটিতে পায়েশ দিয়ে বললেন , হুজুরকে দিতে আর নিজে খেতে।
ছাত্র এবারে পড়তে যাবার পথেই সাইকেল থামিয়ে নিজের টুকু খেয়ে নিল। তারপর বাকিটুকু নিয়ে হুজুরের কাছে গেলো।
হুজুর তো ছাত্রের হাতে বাটি দেখেই খুশি হয়ে উঠলেন।
আজকেও এনেছিস? বেশ করেছিস। তোর মা তো খুব ভালো পায়েস রাধে রে।
দে দে , এদিকে দে। একটু চেখে দেখি।
ছাত্র বাটি এগিয়ে দিলো।
সুড়ুত করে ২ টান দিয়েই হুজুর খেয়াল করলেন বাটিতে আজ পায়েশ কম। ছাত্রকে জিজ্ঞাসা করলেন-
কি রে, আজ পায়েশ কম কেন?
আজ্ঞে হুজুর , আমি সাইকেলে করে আসছিলাম তো , তখন সাইকেলের চেইন পরে গেলো হঠাৎ।
তখন আমি বাটিটা রেখে একটু সাইকেল ঠিক করছিলাম ,ওমনি এসে এক কুকুর কিছুটা পায়েশ খেয়ে নিলো।
হুজুরের খাওয়া ততক্ষনে শেষ !!!!
হতচ্ছাড়া বাঁদর !!!! তুই কুকুরের মুখ দেওয়া খাবার আমাকে খাইয়েছিস ? কত্ত বড় সাহস !!!
এই বলে হুজুর বাটিটাকে একটা আছাড় দেওয়ার জন্য উপরে তুললেন।
হুজুর , দয়া করে বাটিটা ভাঙবেন না , কাতর গলায় বলল ছেলেটি–ওই বাটিতে আমাদের বাসার পোষা বিড়ালটা পেশাব করে। ওটা ভাঙলে ও পেশাব করবে কই ?
২/
এটা হোজ্জা সাহেবের গল্প।
অনেক দিন পরে হোজ্জা সাহেবের বাড়িতে বেড়াতে এলেন তার ছোটবেলার বন্ধু জামাল সাহেব।
হোজ্জা তাকে দেখে যারপরনাই খুশি হলেন।
অনেক গল্পের পর জামাল সাহেব বললেন– অনেকদিন পরে এই এলাকায় এলাম। চল ,এলাকার সবার সাথে দেখা করে আসি।
হোজ্জা বলল– ঠিক আছে ,চল।
জামাল সাহেব বললেন– কিন্তু মরুভুমির মাঝে থেকে আসতে হল তো আমাকে, পরনের জামা কাপড়ের অবস্থা ভালো না।
এ অবস্থায় পড়শিদের বাড়ি যাওয়া ঠিক হবেনা। তোমার কোন ভালো জামা থাকলে দাও , দেখা করে আসি।
হোজ্জার জামা গায়ে দিয়ে জামাল সাহেব বের হলেন , সাথে হোজ্জা।
প্রথম বাসায় যেয়েই হোজ্জা পরিচয় করিয়ে দিলো –
ইনি আমার পুরনো বন্ধু জামাল সাহেব। তবে উনি যে জামাটা পড়ে আছেন, ওটা আমার।
জামাল সাহেব অত্যন্ত বিব্রত হলেন। বাসা থেকে বের হবার পর হোজ্জা কে একপাশে ডেকে নিয়ে বললেন,
"হোজ্জা , এটা তুমি কি করলে ? ওটা যে তোমার জামা এটা না বললে হতোনা ?"
দ্বিতীয় বাসায় গেলেন তারা।
এবারে দরজা খুলতেই-
'ইনি আমার পুরনো বন্ধু জামাল সাহেব , তবে উনি যে জামাটা পড়ে আছেন ওটা কিন্তু উনার নিজেরই। "
জামাল সাহেব আবারো লজ্জিত এবং বিব্রত হলেন। এবার বাসা থেকে বের হয়ে বেশ রাগস্বরে হোজ্জাকে বললেন –
"তুমি বারবার জামাটার কথা বলছ কেন ? এটা প্রসঙ্গে কিছু না বললেই কি নয় ?"
হোজ্জা বললেন - আচ্ছা ,ঠিক আছে , বলবনা।
পরের বাসায় যেয়ে পরিচয় করিয়ে দিলেন হোজ্জা-
"ইনি আমার পুরনো বন্ধু জামাল সাহেব । তবে বর্তমানে উনি যে জামাটা পড়ে আছেন , ওটা সম্পর্কে কিছু না বলাই ভালো। "
৩/
আবারো হোজ্জা ।
হোজ্জা গেছেন শহরের এক সম্ভ্রান্ত লোকের বাসায় , চাঁদা তুলতে। দোতালা বাড়ি , নিচতলায় দরজা ধাক্কাতেই চাকর এসে দরজা খুলে দিলো।
হোজ্জা বললেন–তোমার মনিবকে যেয়ে বল , চাঁদা তুলতে এসেছি।
চাকর গেলো , ফিরল একটু পরে।
আজ্ঞে মনিব তো বাজারে গেছেন।
ও, তা তোমার মনিব আসলে বোলো ,বাইরে যাবার সময় তার মাথাটা যেন জানালার পাশে না রেখে যায়। কখন চোর আসে, তা কি বলা যায়?
বড়রাও পড়ছেন , না ?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।