জীবন ক্ষনিকের......তাই এর প্রতিটি ক্ষণ আনন্দের সাথে উপভোগ করার চেষ্টা করা উচিত.....দুঃখগুলোকে ও হাসিমুখে গ্রহণ করা......
বৃষ্টি পাগল মেয়ে জয়া,বৃষ্টির দিন রিক্সার হুড তুলে দিয়ে বৃষ্টিতে ভিজে ঘুরে বেড়ানো তার কাছে অ্যাডভেঞ্চার মনে হতো,সেই অ্যাডভেঞ্চার ভ্রমনের সঙ্গী হতাম আমি। বৃষ্টিস্নাত অবস্থায় রাস্তার লোকজন আমাদের পরখ করত,রিক্সায় উঠতি বয়সের তরুন-তরুনী হুড তুলে দিয়ে ভিজলে রাস্তার লোকজন দেখবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু জয়া ওসব পরোয়া করত না,আমি ওকে সবসময় নিষেধ করতাম এরকম উদ্ভট কাজ না করার জন্য,কিন্তু ওর দুরন্তপনা আমাকে হার মানাত। বৃষ্টি কখনোই আমার ভালো লাগত না। তারপরও সে পাশে থাকলে বৃষ্টি উপভোগ করতাম,ওর আর আমার প্রনয়ের ব্যাপার দুপরিবারেই জানা ছিল।
তাই পরিবার থেকে কোন বাধা-বিপত্তির সন্মুখীন হতাম না।
অফিসে বসেছিলাম। হঠাৎ সজোরে মোবাইল বেজে উঠল। ফোন রিসিভ করতেই জয়া আবেগপ্লুত কন্ঠে বৃষ্টিতে ভিজার আহবান জানায়। তার আহবানে সায় দিতেই সে অফিসে আসছে জানিয়ে ফোন রাখে।
ভাবিনি কখন এটাই তার সাথে শেষ কথা হবে। বৃষ্টির দরুন ভেজা সিঁড়ি বেয়ে নামতে গিয়ে পিছলে পড়ে গিয়ে মস্তিষ্কের রক্তক্ষরনণ জয়া চিরতরে.........
আজ বাইরে প্রবল বর্ষণ হচ্ছে। অফিসে বসে জানালা দিয়ে বৃষ্টি দেখছিলাম। বৃষ্টি আমাকে মনে করিয়ে দেয় জয়ার সাথে কাটানো সোনালী দিনগুলোর কথা। বেদনার কষ্টে ভেসে যায় আমার হৃদয়।
প্রতিনিয়ত চাপা কষ্টগুলোকে সযতনে আগলে নিয়ে রাজপথে নেমে বৃষ্টিতে ভিজতে থাকি। বৃষ্টির সাথেই গড়িয়ে পড়ে অশ্রুধারা। হাঁটতে হাঁটতে বাসার খুব কাছেই চলে আসি। জয়ার অস্তিত্ব অনুভব করি। মনে হচ্ছে যেন জয়া আমার পাশেই হাঁটছে,আর বৃষ্টির সাথে আলিঙ্গন করছে।
নিঃসঙ্গতা আমার এখন নিত্যদিনের সঙ্গী। চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে হয় আজও তোমায় ভালবাসি। -
“সে কথা শুনিবে না কেহ আর।
নিভৃত নির্জন চারিধার।
দুজনে মুখমুখি গভীর দুঃখে দুঃখি,
আকাশে জল ঝরে অনির্বার-
জগতে কেহ যেন নাহি আর(রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।