আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যা জানা দরকার এখনই।গেদু চাচার খোলা চিঠি।

গেদু চাচার খোলা চিঠি।

আমরা না বুঝেই অনেক সময় অনেক কাজ করি বা অনেক কিছু ব্যাবহার করি যা আস্তে আস্তে বা অনেক ক্ষেত্রেই দ্রুত আমাদের শরীরের জন্যে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আমি এমন কিছু নিয়েই লেখব ভাবছিলাম। অনেক দিন থেকেই একটু একটু করে আপনাদের জন্যে সংগ্রহ করেছি কিছু তথ্য যা জানা দরকার এখনইঃ ১। খুব যত্ন করে আপনি বা বিশেষ করে মেয়েরা তাদের রান্না ঘরে বা অন্য কোন স্থানে সাবান বা ডিশ ওয়াশিং দিয়ে আপনার প্লেট,গ্লাস এবং অন্যান্য বাসন পরিস্কার করলেন।

বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় যার সাহায্যে অর্থাৎ যেই নরম কাপড় বা বাসন ঘষা মাজার বস্তুটি দিয়ে আপনি আপনার বাসন পরিস্কার করেন সেটি ভেজা থাকে বা তার দিকে খেয়াল রাখেন না...কারণ সেটি তো সাবানের ভেতর ই থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের একদল বিজ্ঞানী পরীক্ষা করে দেখেছেন বাসন পরিস্কার করার ঐ ভেজা বস্তুটিতে সবচেয়ে বেশি ব্যাকটেরিয়া থাকে...যা আমাদের নিজের অজান্তেই আমাদের শরীরে নানান ধরনের অসুখ সৃষ্টির জন্যে দায়ী। সুতরাং প্রতিবার সেটি পরিস্কার করে নিন ভাল করে এবং ব্যাবহারের পর সেটি ভাল মত পরিস্কার করে পরিস্কার ও শুকনা স্থানে শুকাতে দিন। ২। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শহরে এটি ঘটতে দেখেছি; তা হলো বাথরুমে দাঁত মাজার ব্রাশ এবং টুথপেষ্ট রাখেন।

আপনি নিজেও জানেন না হয়ত বাথরুমের এই জায়গাটায় সবচেয়ে বেশি রোগজীবাণু এবং ক্ষতিকারক ব্যাক্টেরিয়া থাকে যা আপনার টুথ ব্রাশ হয়ে আপনার মুখে সরাসরি প্রবেশ করে এবং আপনারা শরীরে নানান রোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ৩। মসিজদে গেছি...পায়খানায় যাবার পথেই দেখি একজন প্রসাবখানার দেয়াল ধরে মোবাইলে কথা বলছে। এটি বেশির ভাগ মানুষের একটা মারাত্মক বদঅভ্যাস। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন পায়খানা বা প্রসাবখানার বিশেষ ঐ স্থান থেকে প্রায় ১ ফুট উঁচু পর্যন্ত ব্যাকটেরিয়া এবং ক্ষতিকারক রোগজিবানূ বিস্তৃত থাকে যা থেকে সিফিলিস,গণোরিয়া সহ মারাত্বক সব রোগ হতে পারে।

যেখানে নিঃশ্বাস বাধ্য হয়ে নিলেও আমরা চুড়ান্ত স্বাস্থ্যের ঝুঁকিতে সেখানে আমরা অনেকেই ঘন্টার পর ঘন্টা পায়খানা বা প্রসাবখানার ভেতর কথা বলে যাই...একবার ভাবেন তো কোথাকার জিবানূ আপনার খোলা মুখ দিয়ে কোথায় প্রবেশ করছে?তাই এসব স্থানে কথা না বলাটাই স্বাস্থ্যের জন্যে নিরাপদ। ৪। যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে দেখেছেন আমরা ঘরের অভ্যান্তরে বা বাথরুমে ব্যাবহারের জন্যে যেই স্পঞ্জের স্যান্ডেল বা মোট কথা স্যান্ডেল ব্যাবহার করি তাতেই সবচেয়ে বেশি ব্যাকটেরিয়া থাকে...সুতরাং অবশ্যই সেটা প্রতিদিন পরিস্কার করার ব্যাবস্থা করুন এবং পরিস্কার ও শুকনা জায়গায় রাখুন। ৫। অনেকেই না বুঝে দ্রুত কাজ সম্পন্ন করার জন্যে লোম নাশক লোশন ব্যাবহার করেন সব স্থানে...আপনি খেয়াল করে দেখেছেন কি ওখানে ব্যাবহার বিধিতে কি বলা আছে?সেখানে পরিস্কার বলা আছে এটা প্রজনন অঙ্গের ঐ স্থানে ব্যবহার করলে তা ক্ষতিকর...কারণ ওখানকার টিস্যু সব ছেয়ে পাতলা যা দ্রুত সেটি শুষে নেয় যা আপনার প্রজনন কে মারাত্বক ঝুঁকিতে ফেলতে পারে...সুতরাং আর না।

৬। অনেকে অলসতা বা সময়ের কারণে সেলুনে সেভ করান বা চুল কাটান...একটা ব্যাপার খেয়াল রাখবেন আপনি জিলেট বা দামি ব্র্যান্ড বলে যা ব্যাবহার করছেন তা কি আসল?জিঞ্জিরার দৌরান্তে আসল জিলেটের বানান আমরা জানি কিনা সন্দেহ আছে...তাই এইসব নকল পন্য যখন মুখে লাগে তখন তা আমাদের ত্বকের জন্যে কি ক্ষতিকর তা ভাবছেন কি?অধিকাংশ সময় দেখবেন সেভ করার পর মুখের ত্বক কেমন খসখসে হয়ে যায়। তাই কষ্ট হলেও এবং খানিকটা ব্যয়বহুল হলেও আপনি নিজ দায়িত্বে আসল পন্য কিনেন এবং ব্যাবহার করেন। সেলুনে ব্যাবহার করা ব্লেড আপনার জন্যে মারাত্মক ঝুকির রোগের কারণও হয়ে দাঁড়াতে পারে সুতরাং খুব সাবধান। আর গণসৌচাগার ব্যাবহারে বিশেষ ভাবে সতর্ক থাকুন।

৭। আপনি জানেন কি আপনার ঘরে বিনোদনের জন্যে রাখা টিভি বা কাজের জন্যে রাখা কম্পিউটার আপনার দৃষ্টি সীমার সমান্তরালে রাখা উচিৎ অর্থাৎ আপনি যেখান থেকে বসে টিভি দেখেন বা কম্পিউটারে কাজ করেন সেখান থেকে টিভি বা কম্পিউটার স্ক্রীন একই সমান্তরালে থাকবে। কারণ দৃষ্টি সীমার উঁচুতে বা নীচুতে স্থাপনের কারণে ব্লাড প্রেসার হাই হয়ে যায় সুতরাং হাই ব্লাড প্রেসার এর রোগীরা এই ব্যাপারে সচেতন থাকবেন একই ভাবে অন্যান্যদের জন্যেও প্রযোজ্য। ৮। অনেকেই অসাবধানতাবশত রুম স্প্রে বা মশা মারার স্প্রে সারা ঘরের জানালা দরজা বন্ধ করে স্প্রে করেন...যার হাত থেকে রান্না ঘর বা খাবার ঘরও রেহায় পায় না...কিন্তু আপনি এটা ভাবলেন্না যে মশা মারতে যেয়ে বা ঘর সুগন্ধ করতে যেয়ে উল্টা আপনিই বিষ খাচ্ছেন।

তাই স্প্রে করার আগে দেখে নেন খাবারদাবার ও পানি নিরাপদ ভাবে ঢাকা আছে কিনা...কারণ এই বিষ সরাসরি আপনার খাবারের সাথে মিশে আপনার শরীরের মারাত্মক ক্ষতি করছে। ৯। বাজার বা বাইরে থেকে আসলেন...এসেই ভাল ভাবে পরিস্কার না হয়ে খেতে বসে গেলেন যা মোটেও ঠিক না। আপনি বাইরে যেয়ে বা ভেতরেই অনেক সময় যে টাকা নাড়াচাড়া করেন একটু ভাবেন তো এই টাকা কতজনের হাতে গেছে?কাঁচাবাজারি...ভিক্ষুক...মারাত্মক জীবানুবাহি রোগী...কার না হাতে যেতে পারে তাইনা? আর তাদের থেকে জীবানু টাকা হয়ে আমাদের হাতে এবং সেখান থেকে সরাসরি পেটে চলে যায়। তাই সবচেয়ে ভাল আপনি বাইরে থেকে বাসা বা রুমে ঢোকার আগেই সাবান বা হ্যান্ডওয়াশার দিয়ে ভাল করে হাত ধুয়ে ফেলেন এবং বাচ্চারা স্কুল বা বাইরে থেকে আসলে আগে এই কাজটা করানোর অভ্যাস গড়ে তোলেন তাতে আপনিও নিরাপদ থাকলেন এবং আপনার বাচ্চারাও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়ে ঝুঁকি মুক্ত থাকল।

১০। তরল দুধ ফ্রিজে যারা রাখেন তাদের জন্যে বলি...দুধ ফ্রিজে পাঁচ দিন পর্যন্ত তার গুনাগুন ধরে রাখতে পারে তার পরে নয়...সুতরাং না বুঝে দিনের পর দিন দুধ ফ্রিজে রাখবেন না...পাঁচ দিনের মধ্যেই তা ব্যাবহার করে ফেলেন। ১১। যারা গাড়ি চালান...তাদের জন্যে বলছি,একটা পরীক্ষায় দেখা গেছে গাড়ির ষ্টিয়ারিং এ ব্যাক্টেরিয়ার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি...সুতরাং সেটি যেমন নিয়মিত পরিস্কার রাখাটা জরুরী তেমনি গাড়ি ড্রাইভ করে এসে হাত খুব ভাল করে পরিস্কার করাটা খুবই গুরুত্বপুর্ন। ১২।

আমাদের দেশের মা বোনেরা যেই ভুল টা সবচেয়ে বেশি করেন তাহলো ফ্রিজে দেখা গেল একই সাথে কাঁচা তরকারী আবার রান্না করা যেকোন খাবার রেখে দিলেন...এতে করে নানান ব্যাকটেরিয়া বা ক্ষতিকারক রোগজিবানূ খাদ্যকে অস্বাস্থ্যকর করে তুলতে পারে তাই ফ্রিজ পরিস্কার তো নিয়মিত করবেনই সাথে এই ব্যাপারটায় বিশেষ গুরুত্ব দিবেন আশা করি। ফ্রিজে অনেক সময় নানান ইঞ্জেকশন বা ওষুধ রাখা হয় যেটিও আপনার খাদ্যকে বিষাক্ত করে দিতে পারে নানা ভাবে। ১৩। বাচ্চাদের স্কুলে ভর্তি করানোর আগেই তার চোখ ভাল কোন চক্ষু বিশেষজ্ঞ দিযে দেখায় নেন...এতে তার চোখে ছোট খাট কোন সমস্যা থাকলে তা পড়ালেখার চাপে বৃদ্ধি পাবার আগেই সেরে যাবে বিশেষ করে পাওয়ার জনিত সমস্যা থাকলে। বাংলাদেশে আমরা সব সময়ই স্বাস্থ্যের ঝুঁকিতে আছি...কিন্তু এত কিছুর মাঝে যদি আমরা একটু সচেতন হই তাহলেই আমরা অনেকটা সুস্থ্য থাকতে পারি।

ভাল থাকবেন সবাই এবং এই কথাগুলাই আপনার আশেপাশে সবাইকে বলবেন আশা করি। যা জানা দরকার এখনই। গেদু চাচার খোলা চিঠি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।