পথে পথে -৬
হাসপাতালে আসার পর একমাত্র মিজান নামের এক ভদ্রলোকের সাথেই তার ভাল খাতির হয়। পচিশ- ছাব্বিশ বছরের যুবক। হাসপাতালেই চাকরি করে। তার কাজ হলো কারেন্ট চলে গেলে জেনারেটর চালু করা আবার কারেন্ট আসলে বন্ধ করা। জুন- জুলাই মাসে মিজানের কাজ বেড়ে যায়।
কারেন্ট আসা যাওয়া করলে তার কাজ বাড়ে। কষ্ট বাড়ে। হরুনকে ক্ষোভে, দুঃখে বলছিল, ‘ দেখেছেন অবস্থা?’
‘ অনেক অবস্থা বিরাজমান। কোন অবস্থার কথা বলছেন?’
‘ এই যে সকাল থেকে সন্ধ্য পর্যন্ত উনত্রিশ বার করেন্ট গেছে। ’
‘ গুনিনি।
বারবার কারেন্ট যাচ্ছে আর আপনি দৌড়াদৌড়ি করছেন দেখছি। ’
‘ আর বলবেন না। ’
‘ মিজান ভাই। ’
‘ জ্বি। ’
‘ বসুন।
আমার কাছে এসে বসুন। ’
মিজান হারুনের পাশে এসে বসে। বাইরে তখন বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি হলে নিতুর খুব সখ, জ্বানালার পাশে গিয়ে দাড়ানো না হলে বৃষ্টিতে ভেজা। হারুনকে নিয়ে ভিজতে পারলে দারুন খুশি।
সেই নিতু সুস্থ হয়েছে। এজন্য হারুন সাহেবের খুশির কোনো সীমা নেই।
মোকলেস চাইন্ড কেয়ারের সামনে এসে দাড়ায়। বেশিক্ষন অপেক্ষাও করতে হয়না মওলানা হারুন এসে উপস্থিত হন। ‘ কেমন আছেন?’ হাটতে হাটতে প্রশ্ন করে মোকলেস।
‘ আলহামদুলিল্লাহ। ’
‘ আচ্ছা এটা আপনার কতো নম্বর ইন্টারবিউ?’
‘ সঠিক মনে নেই। আমার ডায়রিতে লেখা আছে। হিসাব করে বলতে হবে। ’
‘ ও, আচ্ছা।
’
হঠাৎ করে মওলানা হারুন বলে ওঠেন, ‘ আপনি আমার বড় উপকার করেছেন মোকলেস ভাই। ’
‘ জ্বি। ’
‘ আপনার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আপনার কথা নিতু খুব বলে। ’
‘ বলাটাই স্বাভাবিক|Õ
মোকলেসের কথা শুনে হারুন সাহেবের তাকে কেমন খারাপ খারাপ মনে হয়।
সেবা করে অহংকার করছে। সে জন্য তিনি লজ্জা পান। তার ধারণা ছিল, মোকলেস বলবে না না কি আর এমন উপকার করলাম। নিতুকে ধন্যবাদ। তা না বলে সে বলছে, হ্যা উপকার করেছি।
নিতু প্রশংসা করবে এটাই স্বাভাবিক| কি অহংকারী? মনের মধ্যে রাগ জমা হয় আর তার কিছুক্ষন পরই তার বহিঃপ্রকাশ ঘটান। ‘ আপনার টাকাটা আমি ফেরত দিয়ে দেবো। ’
মোকলেস হাসে। অনেক গুলো গাড়ির পি পি শব্দে তার হাসির শব্দটা চাপা পড়ে যায়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।