অলৌকিক আনন্দের ভার বিধাতা যাহারে দেন,তাহার বক্ষে বেদনা অপার;
বিজ্ঞাপন এখনকার যুগে একটি আবশ্যক জিনিস। বিজ্ঞাপন ছাড়া এখন কোন পণ্যেরই বাজারজাতকরন সম্ভব নয়। কিন্তু এই বিজ্ঞাপণ মাঝে মাঝেই আমাদের ফেলে দেয় অস্বস্তিতে। কখনো কখনো এসব বিজ্ঞাপন হয় বিরক্তিকর কখনো বা তা সৃষ্টি করে হাস্যরসের...এখনকার সময়টাকে আমরা বিজ্ঞাপনের যুগ বলতে পারি...পাতের নখ কাটার ব্লেড থেকে শুরু করে মাথার চুলের তেল,জেল সব কিছু নিয়েই আছে বিজ্ঞাপন...
আগে আমরা টিভিতে নাটক,ছিঃনেমা,বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান এগুলোর ফাঁকে ফাঁকে বিজ্ঞাপন দেখতাম আর এক্ষন দেখি বিজ্ঞাপনের ফাঁকে ফাঁকে অনুষ্ঠান...তবে এসব বিজ্ঞাপণও মাঝে মাঝে হয় বিনোদনের খোরাক...সেই রকম কিছু বিজ্ঞাপন নিয়েই আমার এই ধারাবাহিক লেখা...
একটি প্রচলিত কৌতুক দিয়ে শুরু করি।
একবার এক বাংলাদেশী সৌদি আরবে এনার্জি ড্রিংকের ব্যবসা শুরু করল।
তো এনার্জি ড্রিংক খুব একটা চলছে না। কি আর করা তিনি পরামর্শ করতে গেলেন এক বিজ্ঞাপন নির্মাতার কাছে। তো বিজ্ঞাপন নির্মাতা পরামর্শ দিলেন একটা বিজ্ঞাপন তৈরী করে শহরের বিল বোর্ডে লাগিয়ে দিতে। যেই ভাবা সেই কাজ। পরদিন শহরের সব গুরুত্বপূর্ণ যায়গায় দেখা গেল এনার্জি ড্রিঙ্কের বিজ্ঞাপণ।
বিজ্ঞাপনের প্রথম দৃশ্যে দেখা গেল এক লোক ঘেমে নেয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে...দ্বিতীয় দৃশ্যঃ লোকটা এনার্জি ড্রিংক খাচ্ছে...তৃতীয় দৃশ্যঃ লোকটাকে বেশ ফ্রেশ এবং মোটাতাজা লাগছে...
এই বিজ্ঞাপন দেয়ার পরদিন থেকে ওই এনার্জি ড্রিংকের বিকি-কিনি পুরাই বন্ধ হয়ে গেল...
কারণ আর কিছুই না সৌদি আরবের লোকজন পড়া শুরু করে ডানদিক থেকে......
এবার আসা যাক মূল বিষয়ে...তিন চার বছর আগের ঘটনা...তখন বাংলাদেশে সবে মাত্র এফ.এম রেডিওর প্রচলন শুরু হয়েছে। রেডিও টুডে একমাত্র রেডিও আর ফুর্তির পরীক্ষামূলক সম্প্রচার চলছে...
যেহেতু এফ.এম রেডিও চালু হয়েছে অল্পদিন তাই প্রচার ও প্রসারের জন্য তখন প্রায় সারাক্ষনই ভাল ভাল এবং লেটেস্ট হিট গান বাজানো হত। বিজ্ঞাপনের পরিমানও খুবি কম। তো মাঝে মাঝেই রাতের বেলা রেডিওতে গান শুনতাম। এমনি একদিন রাতের বেলা গান শুনছি।
সামনে সম্ভবত কোন ঈদ কিংবা নববর্ষ ছিল। হঠাৎ রেডিওতে একটা এড দিল। খেয়াল করে রেডিও শুনছিলাম না এমন সময় বিজ্ঞাপনটা শুনলাম কাজেই পুরাটা শুনতে পারলাম না। কিন্তু যেটুকু শুনলাম তাতেই কাজ হয়ে গেল...যা শুনলাম তা হলো, “আসছে ঈদের/নববর্ষের বিশেষ আকর্ষণ...তাহসানের নেই...তাহসানের নেই...তাহসানের নেই...। ” পাশাপাশি ব্যাকগ্রাউন্ডে শোনা যাচ্ছে তাহসানের করুণ কন্ঠের আর্তনাদ, “নেই কোন কল্পনা আজ তোমায় নিয়ে,নেই কোন প্রার্থনা আজ তোমায় চেয়ে,নেই কোন কামনা আজ তোমায় সাজিয়ে”।
তাহসানের মিথিলার সাথে বিয়ে হয়েছে তখন সবে মাত্র কয়েক মাস। এই সময়ে এই বিজ্ঞাপন আপনাদের মনে যেই প্রশ্ন জাগিয়ে তুলছে আমার মনেও সেই প্রশ্নগুলা জাগিয়ে তুলল। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন জাগতে পারে তাহসানের কি না থাকলে **তাকে নিয়ে তার কোন কল্পনা,প্রার্থনা,কামনা নেই?প্রশ্নের উত্তর আশা করি সবাই মনে মনে পেয়ে গেছেন। হঠাৎ করেই মিথিলার কথা মনে পড়ল। আহারে কি সুন্দরই না মেয়েটা।
ওর এখন কি হবে...???!!!আর তাহসানের নেই এটা নিয়ে রেডিও কোম্পানীর এত মাথা-ব্যাথার কারণটাই বা কি?রেডিও কোম্পানীর মাথা ব্যাথার কারণ খুজতে গিয়ে কয়েকটা যুক্তিসঙ্গত কারণ ও তৈরী করে ফেললাম...যেহেতু কোন কিছুকে বাজারে চালাতে গেলে বেশ রগ-রগে কিছু ঘটনার দরকার হয় তাই রেডিওর প্রসারের জন্যে ও হয়তো এই ঘটনার আবির্ভাব...যাই হোক এইটা না হয় বোঝা গেল কিন্তু তাহসানই বা কেন এমন করুণ সুরে তার নাই সেইটা গাইতে গেল??
ব্যাপারটা বোঝা গেল পড়ে...আসলে ওইডা তাহসানের একটা গানের এলবামের নাম...যেইটা ঈদে/নববর্ষে মুক্তি পাইতে যাইতেছে যার নাম নেই...
কাজেই বিজ্ঞাপনে বলা হইতেছে “তাহসানের নেই......”। অথচ এই ডায়ালগের মানেতো...... :-p হেহেহে
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।