আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আজ সেই ভয়াল ২৯ এপ্রিল



১৯৯১ সনের ২৯ এপ্রিল। চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলার আকিলপুরের লোকেরা সন্ধ্যার পর রেডিও তে আবহাওযার খবর শুনছিল। দশ নম্বর বিপদ সংকেত। গত দুই দিন ধরে এই দশ নম্বর বিপদ সংকেত শুনে আসছে তারা। অতীতেও এই রকম দশ নম্বর বিপদ সংকেত অনেক বার দেওয়া হয়েছিল।

ঝড় তুফান কিছূই হয়নি। কিন্তু তারা বুঝতে পারেনি এই বার সত্যি সত্যি বাতাসের দৈত্য গর্জনের সাথে সমুদ্র হতে ধেয়ে আসছে ফেনায়িত রাক্ষসসম পাহাড় উচু জলোচ্ছ্বাস। সন্ধ্যার আগেই টিপ টিপ বৃষ্টি ঝরছিল। রাত ৯ টার দিকে বাতাসের বেগ বাড়ল। রাত ১২ টার পরে বাতাস এমন তান্ডবলীলা শুরু করে দিল যেন কেয়ামত ঘনিয়ে আসছে।

১ টার দিকে বাতাস কিছূটা দুর্বল হলো বটে, কিন্তু ২ টার দিকে আবার ফিরে এলো দ্বিগুন শক্তিতে। এবার সাথে নিয়ে এলো সমুদ্রের পানি। ঢেউয়ের পর ঢেউ আচড়ে পড়ল উপকূলের ঘর বাড়িতে। দিশেহারা মানুষ ছুটলো আশ্রয়ের সন্ধানে। পেছনে জলোচ্ছ্বাসের থাবা আর মাথার উপর বাতাসের দৈত্য ঘূর্ণি।

যারা কোন রকমে ঢাকা ট্রাংক রোড পর্যন্ত পৌছতে পেরেছিল তারা বেঁচে গেল। ফজরের আজানের আগে ঝড় থেমে গেল। সমুদ্রের পানি চলে গেল সমুদ্রে। প্রত্যুশে সবায় ফিরে গেল নিজ নিজ বাড়িতে। কিন্তু হায়! কোথায় বাড়ি? কোথায় ঘর? সমুদ্রের কিনারায় লাশের সারি।

আত্মীয়, অনাত্মীয়, পরিবারের সদস্যের লাশের পাশে পড়ে আছে গবাদি পশু, শেয়াল কুকুরের মৃত দেহ। যারা জীবিত আছে তাদের অবসর নেই মৃতদের জন্য বিলাপ করার। মৃত দেহ গুলো মাটিতে পুতে রাখতে হবে, নিজেদের খাবর ঝোগাড় করতে হবে, শুন্য ভিটায় মাথা গোঁজার ব্যাবস্থা করতে হবে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।