আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঝরে পড়া আধা ডজন প্রযুক্তিসেবা আর পণ্য



নামকরা অনেক প্রতিষ্ঠানের বেশ কিছু পণ্য এবং সাইট অনেক সম্ভাবনা জাগিয়ে, আলোড়ন তুলে চালু হয়েছিলো। বেশ কিছু দিন সে সব পণ্য টিকেও ছিলো। এমনকি কয়েকটি ছিলো ওই সময়ের সেরা পণ্যও। কিন্তু তারপরও নানা কারণেই চিরতরে বন্ধ হয়ে গেছে বেশ কিছু সাইট এবং বেশ কিছু পণ্যের উৎপাদন। এইরকম আধা ডজন পণ্য নিয়েই এবারের টেক ফিচার।

স্মার্টফোনের সঙ্গেই মিলছে ক্যামেরা, মিডিয়া প্লেয়ার এবং যোগাযোগের মাধ্যম। একটি ডিভাইসে এতোসব সুবিধার ফলে সোশ্যাল ওয়েবই দ্রুতই আইডিয়া সংকটে পড়ে গেছে। আর চলতি বছরের শুরুর ভাগটাও ছিলো অনেক প্রতিষ্ঠানের জন্য কঠিন সময়। আর এই প্রতিযোগিতার বাজারে টিকতে না পেরেই বন্ধ হয়ে গেলো বেশ কিছু পণ্যের উৎপাদন। এগুলো আর কখনও উৎপাদন করা হবে না বলেই প্রতিষ্ঠানগুলো অন্য পণ্য উৎপাদনে ঝুঁকেছে সনি পিএসপি গো হ্যান্ডহেলড সনি কর্পোরেশন সম্প্রতি পিএসপি গো হ্যান্ডহেলড নামের গেমিং ডিভাইসটির মৃত্যু ঘোষণা করেছে।

সনি জানিয়েছে, ডিভাইসটির চড়া দাম আর ডাউনলোড করে গেম খেলার অপশনের জন্যই সনির অন্যান্য গেমিং ডিভাইসগুলোর সঙ্গেই প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়েছিলো। নতুন গেমিং ডিভাইস পিএসপি-৩০০০ এর স্বল্পমূল্য, নিনটেনডো ডিএস লাইট বাজারে চলে আসায় জনপ্রিয়তা কমে গিয়েছিলো পিএসপি গো-এর। আর তাই ডেডলাইন সমাপ্তির ২ বছর আগেই ২০ এপ্রিল উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেলো একসময়ের জনপ্রিয় এই গেম ডিভাইসটির। ইয়াহু বাজ ইয়াহু বাজ সার্ভিসটি মূলত চালু হয়েছিলো ডিগ, রেডিট-এর সাইটগুলোর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দিতা করতে। কিন্তু এটি সফল হয়নি।

আর তাই সার্চ জায়ান্ট ইয়াহু-এর অন্যতম সার্ভিস ইয়াহু বাজ বন্ধ করে দিয়েছে ২১ এপ্রিল। এ বিষয়ে ইয়াহু কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ‘ইয়াহু বাজ সার্ভিসটি বন্ধ করে দেবার সিদ্ধান্ত নেয়ার কাজটি ছিলো বেশ কঠিন। তবে, এই সার্ভিসটি বন্ধ করে দেয়ার ফলে ইয়াহু এখন অন্যান্য সার্ভিসগুলো সহ নতুন সার্ভিসের দিকে মনোযোগ দিতে পারবে। উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে ইয়াহু বাজ সার্ভিসটি চালু হয়েছিলো। এই সার্ভিসটির ব্যবহারকারী একটি কমিউনিটি প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে নিউজ স্টোরি শেয়ার করার সুযোগ পেতেন।

ইয়াহু মাইব্লগলগ টুইটার এবং টাম্বলার এর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করেই মাইব্লগলগ সাইটটি নিজের করে নিয়েছিলো সার্চ জায়ান্ট ইয়াহু। কিন্তু ইয়াহু বাজের মতো এই সাইটটিরও জনপ্রিয়তায় ধ্বস দেখে সাইটটি বন্ধ করে দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। ২০০৭ সালে সাইটটি কেনার পর মাত্র ৪ বছর না পেরোতেই সাইটটি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে যদিও মিডিয়া হিসেবে ব্লগের জনপ্রিয়তা এখন তুঙ্গে। এদিকে, অন্যান্য সাইটে ব্লগের বিভিন্ন অপশন এবং সুবিধায় এই সাইটটি ব্যবহার ক্রমশ কমে গেছে। ফলে, ইয়াহুও এদিকে সময় দেবার কোনো অর্থ খুঁজে পায়নি।

শেষ পর্যন্ত ২০১১ সালের ২৪ মে আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে সাইটটি। এই সাইটটি মূলত ব্লগারদের কমিউনিটি তৈরি করে। এই সাইটটি ব্লগারদের উইজেড ট্র্যাক করে কমিউনিটিতে প্রকাশ করে। জানা গেছে, গুজব রয়েছে ইয়াহু কর্তৃপক্ষ ইয়াহু ডেলিশাস, ইয়াহু পিকস, এবং ইয়াহু বুকমার্কসও বন্ধের তালিকায় রেখেছে। গুগল ভিডিও সেবা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সার্চ জায়ান্ট গুগলও।

সম্প্রতি গুগল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২৯ এপ্রিল থেকে গুগল ভিডিও আর দেখা যাবে না। এ সাইটটি বন্ধের কারণে যেসব ব্যবহারকারী তাঁদের বিভিন্ন ভিডিও সাইটটিতে আপলোড করেছিলেন, তাঁদের আগামী ১৩ মের মধ্যে ভিডিওগুলো ডাউনলোড করে অন্য কোথাও সংরক্ষণের অনুরোধ করা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আপলোড করা ভিডিও ডাউনলোড না করলে সেগুলো মুছে ফেলা হবে বলে জানিয়েছে গুগল কর্তৃপক্ষ। ২০০৬ সালে ইউটিউব ভিডিওসেবা কেনার পরেই গুগল ভিডিওর শেষ দেখে ফেলেছিলেন বিশ্লেষকরা। আর সেই আশংকাকে সত্যি করেই ভিডিওসেবা বন্ধ করে দিচ্ছে গুগল।

জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং সাইট ইউটিউবকে আরো জনপ্রিয় ও ব্যবসাসফল করতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন। এদিকে, গুগল ভিডিও সাইটে থাকা ভিডিও যদি সরানো না-ও হয় তবে, গুগল নিজেই গুগল ভিডিওকে ইউটিউবে পাঠানোর ব্যবস্থা করবে বলেই জানা গেছে। ভিডিও ক্যামেরা ফ্লিপ ওয়েব ভিডিও ক্যামেরা নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ফ্লিপও বন্ধ হয়ে গেলো। ফ্লিপ কেনার দুই বছরের মধ্যেই এটিকে বন্ধ করে দিয়েছে ফ্লিপের বর্তমান মালিক কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং প্রতিষ্ঠান সিসকো। জানা গেছে, দুই-তিন বছর আগেও সস্তা, সহজ এবং ছোটো আকারের ফ্লিপ ডিভাইস বেশ জনপ্রিয় ছিলো।

কিন্তু বর্তমানে ভিডিও ক্যামেরা এবং অনবোর্ড স্মার্টফোন ক্যামেরার প্রচলন বেড়ে যাওয়ার ফ্লিপ ক্যামেরার জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়ে। এদিকে, সিসকোও ফ্লিপ ভিডিও ক্যামেরা ইউনিটের কোনো ক্রেতা খুঁজতে ব্যর্থ হয়। তাই বাধ্য হয়েই ফ্লিপ বন্ধ ঘোষণা করেছে সিসকো। ২০০৯ সালে ৫৯০ মিলিয়ন ডলারে ফ্লিপ কিনেছিলো সিলিকন ভ্যালির শীর্ষস্থানীয় নেটওয়ার্কিং পণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সিসকো। এ সময় সিসকোর উদ্দেশ্য ছিলো ফ্লিপকে অন্য ভোগ্যপণ্যে রূপান্তর করার বিষয়টি।

ফ্লিপ ক্যামেরা চালানোর বিষয়টি ছিলো বেশ সহজ। এটিতে কেবল একটি বাটনেই চালু করা বা বন্ধ করার কাজটি করা যেতো। এই ক্যামেরায় আলাদা কোনো মেনু ছিলো না। পাশাপাশি বিল্টইন ইউএসবি অ্যাডাপ্টর থাকায় ভিডিও কোনো হার্ডড্রাইভে বা ওয়েবে কোনো কেবল ছাড়াই আপলোড করা যেতো। সনি বন্ধ করলো এনইএক্স-৩ মাত্রই সাত মাস যেতে না যেতেই এনইএক্স-৩ ক্যামেরার উৎপাদন বন্ধ করে দিলো ইলেকট্রনিক জায়ান্ট সনি।

আর এই ক্যামেরার উৎপাদন বন্ধের পেছনে রয়েছে সনিরই তৈরি এনইএক্স-৫ সিরিজের ক্যামেরা। এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে লেন্স পবির্তনযোগ্য ডিএসএলআর এবং পয়েন্ট অ্যান্ড শুট ক্যামেরার যোগসূত্র বলে পরিচিত এ ক্যামেরাটি চিরতরে বন্ধ করে দিয়েছে সনি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।