আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আর কতকাল একজনের বেপরোয়া আচরনের জন্য অন্যকে প্রাণ দিতে হবে । আর কতকাল এরা উপর মহলের সুপারিশে পার পেয়ে যাবে , আর কতকাল ।

আমি একজন সৎ নাগরিক

ছোট্ট মেয়ে রাভিনা প্রতিদিনের মত স্কুলে আসছিলো তার বাবার সাথে । আজ তার পরীক্ষা। কিন্তু স্কুলে ঢোকার আগে তাকে শুনতে হলো এক ভয়াবহ দুঃসংবাদ । তার বাবার উপর আঘাত হেনেছে মৃত্যুদূত প্রাইভেট কার । তার বাবা বেচে গেলেও মৃত্যুর হাত থেকে বাচানো যায়নি দুইজন অভিভাবকের জীবন ।

স্কুলের বর্ষীয়ান শিক্ষক আহমেদ হোসেন । প্রতিদিনের মত নিজস্ব রিকশায় করে স্কুলে আসছিলেন । কিন্তু তিনিও রেহাই পেলেন না এই নৃশংস কার চালকের হাত থেকে । রিকশা থেকে নামতেই গাড়ি তার উপর আঘাত হানে । অন্য শিক্ষক নাসিমা বেগম ও বাচতে পারেনি এর হাত থেকে ।

শুধু এরূপ দুইটি নয় , আজ ২ জনের মৃত্যু ও ১৩ জনের আহত হওয়ার সাক্ষী হয়ে রইল এক প্রাইভেট কার । উল্লেখ্য আজ সকাল ৮ টার দিকে দারুসসালাম রোডে অবস্থিত মডেল একাডেমী বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে ঘটে এই নৃশংস ঘটনা । এক বেপরোয়া গাড়ি চালকের ভুলের জন্যে প্রাণ দিতে হল স্কুলের অসহায় অভিভাবকদের । সকাল ৮ টার দিকে পরীক্ষা শুরু হবার পর অভিভাবকেরা স্কুলের সামনে দাড়িয়ে ছিলেন । কল্যাণপুর ২ নং রোড থেকে আগত গাড়ির মালিক নিজ হাতে তুলে নিলেন গাড়ির চাবি ।

এমন একটি জনবহুল স্থানে তিনি কি ভেবে এই সিদ্ধান্ত নিলেন তা যথেষ্ট ভাবনার রিষয় । গাড়ি চালনা শুরু করতে না করতেই তিনি আঘাত করেন এক ছোট্ট ছেলেকে । ছেলেটি দেহের একপাশে আঘাত পেয়ে ছিটকে পড়ে । ভয় পেয়ে গাড়ির মালিক বেপরোয়া চালাতে থাকেন । গাড়ি উঠিয়ে দেন রাস্তায় দাড়িয়ে থাকা অভিভাবকদের উপর ।

জায়গাতেই একজনের মাথা ফেটে ঘিলু বেরিয়ে পড়ে এবং একজনের পেটের উপর দিয়ে গাড়ি চলে যায় । তড়িঘড়ি করে গাড়িটি এবং প্রশিক্ষণদাতা চালক কে আটক করা হয় । কিন্তু মূল হোতা মালিক সটকে পড়ে । গাড়িটিকে বিদ্যালয়ের সামনে রাখা হয় । এর পরের ঘটনা আরো চাঞ্চল্যকর ।

ঘটনা ঘটার দেড় ঘন্টা পর্যন্ত স্কুলের ভূমিকা ছিল নীরব দর্শকের । জানা যায় যে গাড়ির মালিক একজন প্রভাবশালী লোক । উপর মহল থেকে চাপের কারণেই এহেন আচরণ । এক পর্যায়ে জনতা উত্তেজিত হয়ে ওঠে । পরবর্তীতে পুলিশ এসে অবস্থা নিয়ন্ত্রনে আনে ।

১০ টার দিকে রেকার নিয়ে আসা হয় গাড়িটি নেয়ার জন্য । শোনা যায় গাড়িটিকে সরিয়ে ফেলার পায়তারা চলছে । পুলিশ কোন ধরনের সাক্ষী প্রমাণ যোগাড় না করে গাড়িটি নেয়ার চেষ্টা চালায় । এতে অভিভাবকগণ উত্তেজিত হয়ে ওঠে । এ সময় স্কুলের প্রাক্তন কিছু ছাত্র উপস্থিত ছিল ।

পরীক্ষা শেষ হওয়ায় ছাত্ররাও এদের সাথে যোগ দেয় । বাক বিতণ্ডার এক পর্যায়ে ছাত্র জনতা গাড়িটির কাচ ভেঙ্গে ফেলে এবং গেটে তালা লাগিয়ে দেয় । গাড়িটি সরাতে ব্যর্থ হয়ে শেষ পর্যন্ত দাঙ্গা পুলিশ নিয়ে আসা হয় । ছাত্ররা বাধা দিলে পুলিশ ছাত্রদের উপর বেড়ধক লাঠিপেটা করে । এতেও বেশ কয়েকজন ছাত্র আহত হয় ।

শেষ পর্যন্ত পুলিশ গাড়িটি সরিয়ে ফেলে । এদিকে স্কুলের প্রধান শিক্ষক নুরুল আলম পুলিশকে এ কাজে সাহায্য করে। গাড়ির মালিককে এখনো ধরা হয়নি । আর কতকাল একজনের বেপরোয়া আচরনের জন্য অন্যকে প্রাণ দিতে হবে । আর কতকাল এরা উপর মহলের সুপারিশে পার পেয়ে যাবে , আর কতকাল ।

সকল ব্লগার ভাইদের কাছে অনুরোধ এই পোস্টটি সর্বত্র ছড়িয়ে দিন । আমরা এর বিচার চাই ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।