গ্রামীণ ব্যাংকের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তাঁর কার্যালয়ে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় গ্রামীণ ব্যাংকের প্রচলিত আইন ভঙ্গের বিষয়টি জনগণের কাছে তুলে ধরার নির্দেশ দেন। সভায় গ্রামীণ ব্যাংকের পুঁজিবাদী ব্যবসার আসল চিত্র তুলে ধরার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
প্রধানমন্ত্রীর ওই বৈঠকের সূত্র ধরে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে র্যাবের মহাপরিচালক, এসবির প্রধান, ছয় মহানগরের পুলিশ কমিশনার এবং সব রেঞ্জের ডিআইজির কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
চিঠির ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে জানতে চাইলে তাঁরা কোনো তথ্য জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
সূত্র জানায়, পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পাঠানো চিঠিতে গত ১৩ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় বলে উল্লেখ করা হয়। পুলিশ সদর দপ্তর থেকে বৈঠকের বিষয়গুলো উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে চিঠি পাঠানো হয় ১১ এপ্রিল। চিঠিতে পৃথক ১৭টি বিষয়ের কথা উল্লেখ করে বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়।
জানা গেছে, ১৩ মার্চের ওই বৈঠকটি ছিল গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সমন্বয়সংক্রান্ত সভা (এনসিআইসি)।
এতে সব গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানেরা উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠকের আগে অর্থাৎ ২ মার্চ কেন্দ্রীয় ব্যাংক গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) পদ থেকে মুহাম্মদ ইউনূসকে অব্যাহতি দেয়। এর বিরুদ্ধে আদালতে আশ্রয় নিলে মুহাম্মদ ইউনূস সেখানেও হেরে যান। আদালতের সর্বশেষ রায় হয়েছে গত ৫ এপ্রিল এবং পুলিশ সদর দপ্তর নির্দেশনা পাঠিয়েছে এর পরে, ১১ এপ্রিল।
চিঠিতে গ্রামীণ ব্যাংক-সংক্রান্ত দুটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
এর একটি হলো, পুঁজিবাদী ব্যবসার আড়ালে গ্রামীণ ব্যাংক কী করছে, তা জনগণ ও বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে হবে। এ জন্য তথ্য মন্ত্রণালয়কে ব্যবহারের কথা বলা হয়। আর দ্বিতীয়টি হলো, গ্রামীণ ব্যাংক যে দেশের প্রচলিত আইন ভাঙছে, তা জনসমক্ষে তুলে ধরতে হবে। চিঠিতে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য বলা হলেও পুলিশ, র্যাব ও এসবি কীভাবে এটি করবে, তা উল্লেখ করা হয়নি।
জানতে চাইলে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক এ এস এম শাহজাহান প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ যদি আদেশের ফলে গ্রাহকদের ভয় দেখাতে শুরু করে, তবে সেটা হবে মহাবিপর্যয়।
গ্রাহকেরা ব্যাংক থেকে দূরে সরে গেলে ব্যাংকটিও বসে যাবে। সুতরাং এ ব্যাপারে কোনো কিছু করার আগে এর ভবিষ্যৎ কী হবে, তা ভাবতে হবে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যাপারে সরকারের বিরূপ মনোভাবের বিষয়টি আগে লক্ষ করা গেছে। তবে সরকারের প্রতি অনুরোধ থাকবে, যা-ই করা হোক, প্রতিষ্ঠান রক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখেই যেন তা করা হয়।
অন্যান্য প্রসঙ্গ: সূত্র জানায়, চিঠিতে আরও কিছু বিষয় উল্লেখ করা হয়।
যেমন—প্রধানমন্ত্রী র্যাবের ভূমিকা আরও কার্যকর ও দৃশ্যমান সাফল্য অর্জনে তাগিদ এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দেন। এ ছাড়া বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেয়ারবাজার তদারকির জন্য নিরাপত্তা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দেওয়া এবং এই বাজার তদারকিতে প্রয়োজনে নতুন আইন করার কথাও বলেন। সভায় হিজবুত তওহিদ ও কালেমার দাওয়াত নামের নতুন দলের উত্থান নিয়ে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
View this link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।