পাওয়ার অব পিপল স্ট্রংগার দেন দি পিপল ইন পাওয়ার। http://mhcairo.blogspot.com/
এই পোষ্টে কিছু সেনসেটিভ বিষয় নিয়ে কথা বলেছি তাই কোন ধরনের ফতোয়াজবাজ বা ট্যাগবাজ প্রবেশ করবেন না।
- যুদ্ধ ক্ষেত্রেই হোক কিংবা খেলার মাঠেই হোক কিংবা হোক কোন সামাজিক বিষয়ে অথবা কোন ঐতিহাসিক আন্দোলনে, প্রতিপক্ষকে আড় চোখে দেখছেন তো হারছেন।
- মুসলিম ব্রাদারহোডের কি করনীয় কিংবা সেকুলার রাজনীতিবিদদের কোথায় অন্যায় হচ্ছে সে কথা বলার মত বয়স কিংবা সাহস কোনটাই আমার নাই। কিংবা কেন একে একে ইসলামী দলগুলো পরাজয় বরন করছে সেটা বিশ্লেসন করে তাদের নসিহত করার মতো বিজ্ঞ আমি নই।
কিন্তু একে একে চোখের সামনে ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলো কেন যেন আামার সন্দেহকেই অনুসরন করছে। তাই আজকের আমার এই পোষ্ট।
অনেকে হয়ত বলবেন ইসলামী দল গুলোর পরাজয় হয় নি তাদের আমার কিছুই বলার নাই। অনেকে অপেক্ষায় রয়েছেন আল্লাহর সাহায্য আসার। কখন আল্লাহর সাহায্য আসবে কখন আল্লাহর সাহায্য আসবে!!! তাদের কাছে জিজ্ঞাসা,,, তারা কি আব্রাহার হাতি বাহিনি ধ্বংসকারী আবাবিল পাখির অপেক্ষায় আছেন??? তাহলে তাদের বুঝাতে পারবে না কেউ।
আরে ভাই,, আল্লাহ তয়ালা বিবেক দিয়েছেন, বুদ্ধি দিয়েছেন লেখা পড়া করার মত ব্রেইন দিয়েছেন আর কত সাহায্য করবেন তিনি। তোমরা তোমাদের মত চিন্তা করে বিনা গার্ডে ক্রিকেট খেলতে নামছ আর বলছ আল্লাহ সাহায্য করবেন আল্লাহ সাহায্য করবেন বলতে বলে বল মাথায় লেগে মরে গিয়ে বলবা সর্বোত্তম দড়জা শহীদি দড়জা পেয়েছি যা আল্লাহ কপালে লিখেরেখেছিলেন। তদের কে বলবো,,, ভাই তুমি একটা সার্কেলের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছ। দ্রুত বের হয়ে এসো।
একটা উদাহরণ দিলে আরেকটু পরিস্কার হবে:
- উদাহরণ: দুই দল যখন কোন ক্রিকেট ম্যাচ খেলতে নামবে তখন অবশ্যই প্রতিপক্ষের তিনটি শক্তি ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং প্রটেক্ট করার সামর্থ নিয়েই মাঠে নামতে হবে।
তবেই আসবে কাঙ্খিত সাফল্য।
- উদাহরণের প্রতিফলন: হেফাজত ইসলাম ও আওয়ামীলিগের বেলায় ও ঘটেছে একই ঘটনা। আওয়ামীলিগ হেফাজতের ব্যাটিং লাইনআপ এক ফুতে শেষ করে দিলেও তাদের বোলিং শক্তি (সমাজিক শক্তি) সমন্ধে মোটেও ওয়াকেবহাল ছিল না। এই সুযোগে হেফাজত লেংথ ও লাইন ঠিক রেখে চমৎকার বল করে ''০'' রানে আওয়ামীলিগের ৫ উইকেট ফেলে দিল। এখন চলছে ফিল্ডিং এর পালা।
যে যতদিন ফিল্ড ধরে রেখে নিজেদের নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারবে তার উপর নির্ভর করে বাকি খেলার ফলাফল।
- মোরাল: হেফাজতইসলাম যদি সরকার পক্ষের হিংস্রতা/শক্তি (যেটাই বলুন না কেন) সমন্ধে আরেকটু চিন্তা করত তাহলে হয়ত ৫ই মে'র মত কাল রাত্রি তাদের ইতিহাসে আসতো না। আর আওয়ামীলিগ ও যদি হেফাজতেইসলামের সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা সমন্ধে আরেকটু চিন্তা করত তাহলে তারাও ৫ ই মে'র রাত্রিতে এমন ঘটনা ঘটাতো না যাতে সামনে তাদের অস্তিত্য সংকটে পড়তে হবে।
- তারা উভয় উভয়কে যদি আড় চোখে না দেখতো তাহলে ঠিকই আলোচনার মাধ্যমে সুন্দর একটা সমাধান পাওয়া যেত ফলে সমাজে বিসৃংখলা সৃষ্টি না হয়ে ভাতৃত্ববন্ধনের সৃষ্টি হত।
- কায়রোতে আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ের বাঙালি ছাত্রদের অধিকাংশই ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে মুসলিম ব্রাদারহোডের বিজয় দেখতে চায়।
ফলে মোবারক পতনের আন্দলনের সময় থেকেই ছাত্র সমাজে চলে নানা জল্পনা কল্পনা ও গবেসনা। মুবারক পতন থেকে শুরু করে মুহাম্মদ মুরসির বিজয় এবং তার একবছর শাষনকাল এবং তার পতন এই দীর্ঘ সময়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন আলোচনায় আমি দেখতে পাই তাদের প্রায় সকলের মাঝেই রয়েছে অনিরপেক্ষতা।
- তাহরির স্কয়ারের যেই তরুণ তরূণীরা একসময় ছিল তাদের নিকট বীর তারা এখন তাদের নিকট হয়ে গেল নাস্তিক দেশদ্রোহি। যেই তাহরির স্কয়ারে আগে দুই মিলিয়ন মানুষের সমাগম হত আজ সেই তাহরির স্কয়ার ভরে গিয়ে আশপাশ পরিপুর্ন হয়ে গেলেও তাদের নিকট সংখ্যাটা মোটেও লক্ষের উপরে যেতে চায় না। আজ তাহরির স্কয়ারে অষ্টাদশি কোন তরূনী গলা ফাটালে সে হয়ে যায় নষ্টা অথচ এই তরূনীই একদিন ছিল তাদের বোন।
আজ তাহরির স্কয়ারে গান বাজনা হলে সেটা হয়ে যায় অশ্লিল নাচ গান যদিও মুবারক পতনের আন্দোলনে এর চেয়ে বেশি গাম বাজনা হতো আর ব্রাদারহোডের লোকজনেরাই তাদের প্রটেক্ট দিত।
- গত দুইতারিখ আব্দু বাশা অন্চলে এক ছাত্র বন্ধুর বাসায় সন্ধায় অবস্থান করছিলাম বেশ কয়েকজন ছত্র বন্ধু ও সিনিয়র ভাই। সামনে টেলিভিষনের পর্দায় ছিল তাহরীরে মুরসি বিরোধীদের আন্দোলন। কানায় কানায় পুর্ন ছিল তাহরীর স্কয়ার। অথচ সিনিয়র এক ভাই সকলকে বুঝাতে লাগলেন: দেখো দেখো অল্প কিছু মানুষ অথচ ক্যামেরা এমন ভাবে দেখায় যেন কত মানুষ!!! সে আরো বলতে লাগলেন কালো কালো ঐযে দেখা যায় ঐগুলা কিন্তু মানুষ না।
ঐগুলা তাবু, চেয়ার, টেবিল ইত্যাদি। অনেকেই হয় হয় হয় করে সিনিয়রকে সাপোর্ট করতে লাগল। এই ঘটনা দেখে দুই এক মিনিটেই আমার মাথা চিন চিন করে ব্যথা শুরু করল। (মাঝে মাঝে আমার এমন হয়)। ; কিন্তু আমি প্রটেক্ট করলাম না, প্রটেক্ট করলে হয়তো আমি নাস্তিকদের সাপোর্ট করছি বলে ট্যাগ লাগানো হতো।
পরে সেই তিল থেকে তাল হওয়া মোটেও অসম্ভব ছিল না।
এ তো গেল একটি ঘটনা মাত্র। ঠিক এমনই ভাবে অধিকাংশই যারা ব্রাদারহোডকে সাপোর্ট করে তারা প্রতিপক্ষকে ছোট করে দেখে।
এই শ্রেনীর চেয়েও যারা অন্ধ তারাতো মুরসি বিরোধীকোন আন্দলনের ফুটেজ দেখবেই না, কোন নিউজ পড়বেই না, কোন খবর শুনবেই না। বরং আমি অনেকের সাথে যখন কথা হয় তখন যদি বলি তাহরিরেও তো লক্ষ লক্ষ তরুন মুরসিকে চাচ্ছে না।
আমাকে সরাসরি বলে এইসব চ্যানেল দেইখো না। সবই মিথ্যা সবই মিথ্যা।
কোনটা সত্য কোনটা মিথ্যা সেটা মানুষের কথায় কান না দিয়ে গত ৩০ তারিখ মুরসি বিরোধি আন্দোলনে আমি নিজেই ছুটে যাই তাহরির স্কয়ারে। এবং এতেই অনেকে আমাকে ট্যাগ লাগালো শুরু করে। যদিও পরিস্থিতির ভয়াবহতার কারনে মুরসির সাপোর্টারদের অবস্থানস্থল রাবা স্কয়ারের যেতে পারি নি।
এদিকে উদারপন্থিদের অবস্থা আরো ন্যাক্যার জনক। উদায় পন্থিরা উদার মনের হবে এটাই ধারণা ছিল। তারা আর যাই করুক মানুষ মারবে না বলেই আমার বিশ্বাস ছিল। ধর্মের জন্য মানুষ নয় মানুষের জন্য ধর্ম যাদের শ্লোগান তাদের নিকট মানুষের প্রানের মূল্য থাকবে সবচেয়ে উপরে এটাই রীতিনিতি হওয়া উচিত। কিন্তু সেই বিশ্বাও আামার ভেস্তে গেছে।
অন্যায় ভাবে মানুষ মেরে টিভি ক্যামেরার সামনে দাত বের করে ভেচকি কাটা আর চিড়িয়াখানার খাচায় বন্দি বানরের ভেচকি কাটার মধ্যে কোন পার্থক্য দেখি না। বিশ্বগণতন্ত্র নিয়ন্ত্রনকারী পন্ডিতদের আজ আত্নহত্যা করা উচিত। এর নাম আর যাই হোক মানবতা হতে পারে না।
- মিডিয়া হলো সমাজের দর্পন। কিন্তু এই মিডিয়া আজ সমাজের দর্পন হিসেবে নেই।
এটা হয়ে গেছে সেকুলারদের প্রাইভেট দর্পন। ইচ্ছে মত সমাজকে মেকাপ করে মানুষের সামনে তুলে ধরছে তারা। কাউকে করাচ্ছে কালো মেকাপ কাউকে করাচ্ছে সাদা। গত শুক্রবার রাতে যখন মুরসির সাপোর্টাররা রাবা স্কয়ার, নাহদা স্কয়ার সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম করে তখন তাহরির স্কয়ার, প্রেসিডেন্সিয়াল ভবন সহ তেমনি বিভিন্ন স্থানে জড়ো হয় লক্ষ লক্ষ সেনাবাহিনীর সাপোর্টাররা। কিন্তু বিধিবাম মিডিয়া এক যুগে এই হিসেব দেখায় সেনাবাহীনির পক্ষে ৩২ মিলিয়ন মানে ৩ কোটি ২০ লক্ষ আর মুরসির সাপোর্টার দেখায় মাত্র ১ লক্ষ ৩০ হাজার।
এটাকে কি বলা যাবে....? মিথ্যাচার না কি অন্য কিছু......?
--
--
গত শুক্রবার যখন সেনাবাহিনী সাধারন মানুষদের মাঠে নামতে বলল এবং তাতে যে মানুষ শতস্ফুর্তভাবে সারা দিল সেটা অনুধাবনই করতে পারে নি এক শ্রেনীর জনতা। বরং, উল্টো বুঝলো। আমার চোখ দিয়ে আমি দেখলাম লক্ষ লক্ষ মানুষ তাহরির স্কয়ারে সমবেত হয়ে আনন্দ উল্লাস করছে। তখনই আমার মনে আশংকা হয়েছিল যে বড় ধরনের কোন দুর্ঘটনা ঘটতে চলছে। তা না হলে আজ উতসবের কি বা কারন থাকতে পারে!!! আমি আসংকা করে ফেসবুকে একটা পোষ্ট ও দিয়েছিলাম https://www.facebook.com/BloggerMHcairo পরেরদিন ভোরে হলোও তাই।
এক রবা স্কয়ারেই গুলি করে মারা হলো ১২০ জন তাজা প্রাণকে। আর গুলিতে বিক্ষত করা হলো ৪৫০০ জন মুরসির সাপোর্টারকে। আরো বিভিন্ন স্থানে নিহত হলো আরো অনেক। সব মিলিয়ে প্রায় ২০০।
- আমরা যা চোখে দেখছি তা হলো: এই ২০০ জন নিহত হওয়া সংগঠনটিকেই বলা হচ্ছে সন্ত্রাসের দল।
যারা এ কথায় বিশ্বাস করেন তাদের নিকট একটা প্রশ্ন: আমার ঘরে এসে আমাকে মারলে আমি কি করে সন্ত্রাসি হই??? জবাব দিয়ে যাবেন কিন্তু।
সর্বশেষ খবর অনুযায়ি ব্রদারহোডের নেতা কর্মিরা সর্বোচ্চ ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে কোথাও কোন ভাংচোর না করে শান্তিপুর্ন আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এই পয়েন্টে তাদের নৈতিক জয় হলো। এবং তাদের যারা সন্ত্রাসি বলবে তারা মিথ্যাবাদি বয় অন্য কিছু হবে না। কিন্তু আমার অবজারবেশন থেকে নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি যদি মুহাম্মদ মুরসিকে পুনরায় সেনাবাহীনি ক্ষমতায় ফিরিয়ে দেয় তবু দেশে শান্তি আসবে না।
কারণ, মুহাম্মদ মুরসিকে অপসারনের রাতে মানুষের চোখে যেই আনন্দ আমি দেখিছি সেটা অন্য কিছুই বলে।
অন্যদিকে সেনাবাহিনীও যদি মুরসির সমর্থকদের সংখ্যা ১ লাখ ৩০ হাজার হিসেব করে অংক কষে তাহলে মিশরের ভবিষ্যত আমবস্যার চেয়েও অন্ধকার।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।