একজন চরম বোরিং মানুষ, কোন এক্সসাইটমেন্ট নাই আমার মাঝে। চিল্লাপাল্লা ভালো লাগেনা।
সুচারু হাতেই ছুরিটা হাতে নিলেন। সাধারন ছুরি বললে ভুলই হবে। দিনরাত অবিরাম এই ছুরির সাথেই তো তিনি কাজ করে চলেছেন।
মুখের ভেতর যে দানাপানি যাবে, তাও মনে হয় তার কাজের মধ্যেই পড়ে। আস্তে করে পেটের ভেতর দিয়ে ছুরিটা চলে গেল। কাটা দাগটি লাল হতে একটু সময় নেয়, সেই সময়টি একটু চোখকে বিশ্রাম দেয়া চলে। ছেলে মেয়ে বৌয়ের জন্য কী করেন নি তিনি!তার গতবছরের আয়কর-ই তো অনেকের বেতনের চেয়ে বেশি। ততক্ষনে তার হাতের কোমল স্পর্শ রোগীর পেটের ভিতর যেতে শুরু করেছে।
বাবার সাথে প্রতি সকালে হাটা হত। ধানের বাতাস আমের মুকুলের গন্ধ- এই এসির মাঝে কি এর সাড়া পাওয়া যায়? তার মেয়েটা-ছেলেটা কোথায় জানি হারিয়ে গেল। বাবা কত সুন্দর করে গল্প বলতেন। ছোট ছোট মনের কথাগুলো না ভেবে তিনি পারছেন না। চোখের কিনারের জলের প্রতিচ্ছবিতে রোগীকে এক পলকের জন্য দেখলেন।
গাল বেয়ে আসা মুক্তাটির আর তর সইছিল না। বাজারে নিশ্চই সাদা মুক্তার চেয়ে লাল মুক্তার দাম বেশি।
ডাক্তার যে একজন মানুষ। সাধারন মানুষের মত তারও কিছু অনুভুতি আছে। সময়ের প্রয়োজনে, পেশার তাগিদে হয়তোবা- আশেপাশে ঘটে যাওয়া অনেক কিছুই তাকে তেমন ভাবায় না।
কিন্তু এই প্রবোধের প্ররোচনায় আমরা যদি আমাদের নিতান্ত অনুভুতিকেও চাহিদার আড়ালে নিয়ে আসি, জানিনা সেটা কেমন হবে। গত ২১ এপ্রিল আমাদের শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের ১৭ তম ব্যাচের ছাত্র মোরশেদুল হক মুন্না দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে আমাদের কে কিছুদিনের জন্য বিদায় জানিয়ে চলে যায়। আমাদের অনেক শিক্ষক, তার একান্ত সহপাঠী অনেকের অবহেলা সেই সময় আমার মনে একটাই প্রশ্ন জাগিয়েছে- আপনাদের মা বাবার মৃত্যতে কী আপনারা কাদবেন?নাকি বলবেন আমার অপারেশন আছে। নিতান্ত কাজের দোহাই দিয়ে আপনার কর্তব্য থেকে দূরে যাবেন না।
মুন্না তুমি ভালো থেকো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।