আপনি আমাকে পছন্দ করেন কি করেন না তাতে আমার কিছু যায় আসে না, আপনাকে খুশি করার জন্য আমি এ পৃথিবীতে আসিনি।
মাত্র ঘুম থেকে উঠলাম, উঠেই একটা পোস্ট দেখলাম ফেসবুক নিয়ে। পড়ে খুব ভাল লাগল, কিন্তু গভীরভাবে চিন্তা করতে গিয়ে দেখলাম এটা একটা বিশেষ পরিবর্তনের ইঙ্গিত বহন করছে। পড়তে থাকুন আমি আপনাদের নিয়ে যাচ্ছি আমার ভাবনার রাজ্যে, ভাল খারাপ যাচাই করে দেখবেন।
ছোট বেলায় আমাদের পাঠ্য বইয়ের তালিকাতে ছিল দুইটা বই।
একটা হচ্ছে পদ্মা নদীর মাঝি, আরেকটা হচ্ছে হাজার বছর ধরে। দুই বইতে অনেক সুন্দরভাবে পরকীয়া উপস্থাপন করা হয়েছে। বই দুটো খারাপ তা বলার ধৃষ্টটা আমার নেই। কিন্তু ওই বয়সে তা আমাদের সবার মনে তা দাগ কেটেছিল। হয়ত বলবেন বইগুলো বাস্তব ঘটনার আলোকে লেখা হয়েছে।
কিন্তু নিজের অজান্তে আমাদের মনের মধ্যে যে কি পরিবর্তন আনছে তা বুঝতে অনেক সময় লাগবে। একটা সমাজের যখন পরিবর্তন হয় তা সহজেই লক্ষনীয়। সমাজের নৈরাজ্য কিন্তু পারিবারিক জীবনেও ছাপ ফেলে। লক্ষ করে দেখবেন আমাদের দেশে কিন্তু এখন পরিবার ভাঙ্গা শুরু হয়ে গেছে পাশ্চাত্তের মত। বিদেশের মানুষ রা আমাদের সমালোচনা যতই করুক, আমাদের দেশের পরিবার প্রথাটা খুবই ভাল।
তাদের দেশে এখন অনেক বাচ্চাই বড় হয় মা, বাবা ছাড়া। অথচ একটা বাচ্চার বড় হবার জন্য মা বাবার মধুর সম্পর্ক যে কতটা জরুরী তা বলার অপেক্ষা রাখেনা।
হিন্দি সিরিয়ালগুলোতে দেখা যায় পরকীয়াকে খুব সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হয়। আমাদের দেশে মা খালারা এটা খুব মজা করে দেখে, দেখার সময় কিন্তু পাশে তার ছোট্ট মেয়েকে নিয়ে বসেছে তার খেয়াল থাকে না। মেয়েটাও এসব দেখে।
কার সাথে কার ডিভোর্স হচ্ছে, কার সাথে কার বিয়ে হচ্ছে, কিভাবে কে কাকে ধোকা দিচ্ছে, কিভাবে সংসারে বিষ ঢুকানো হচ্ছে, এসব। অনেক মা ই আছেন একটা পর্ব মিস করলে তার মেয়েকে জিগ্যেস করে জেনে নেন কি হয়েছে ওই পর্বে। আমাদের দেশে এখন বিভিন্ন চ্যানেলের নাটকগুলোতে বয় ফ্রেন্ড গার্ল ফ্রেন্ড ব্রেক আপ দেখানো হয়। মনে হয় এগুলো খুব স্বাভাবিক ব্যাপার।
পরিবর্তন আসলেই হচ্ছে।
আমাকে এক মেডিকেলের আপু বলেছে তার জন্য ছেলে দেখতে। আমি বললাম, কি! বিয়ে করবে? আপু বলে আরে না এখন বিয়ে করব না। বয় ফ্রেন্ড হিসেবে থাকবে, পরে ভাল লাগলে দেখা যাবে। মানে তার এখন বিয়ে করার মানসিকতা নেই তবুও একটা ছেলে সঙ্গ তার চাই। বেশির ভাগ রিলেশন ভাঙ্গার সময় আমি দেখেছি অন্য একটা ছেলে বা মেয়ে এটার সাথে জড়িত।
কিছুদিন আগে আমার একবন্ধু জানতে পারে তার প্রেমিকার সাথে একটা ছেলের রিলেশন ছিল যাকে তার প্রেমিকা সব সময় বন্ধু বলেই পরিচয় দিয়ে এসেছে তার কাছে। এসব হর হামেশাই হচ্ছে। কোন ছেলের সাথে ব্রেকআপ হওয়া অনেক মেয়ে বন্ধুকেই বলতে শুনেছি সে নাকি আর বিয়ে করবে না। করলেও সে তার স্বামীকে ভালবাসতে পারবেনা! তার বয় ফ্রেন্ড যতই খারাপ হোক, তাকে যতই ধোকা দিক, সে তাকে আজীবন ভালবাসবে। কারণ, অপর পক্ষের ভালবাসা না থাকলেও তার ভালবাসা নাকি পিওর!
স্বামী স্ত্রীর মাঝে যে দায়িত্ব পালন আর সেক্স করা ছাড়াও ভালবাসার একটা ব্যাপার থাকে তা আমাদের সাহিত্য বা টেলিভিশন নাটকে আশঙ্কাজনক ভাবে কমে যাচ্ছে।
আসলে এটা নিয়ে তো আর নাটক বা সাহিত্য জমে না! নাটক সাহিত্যের জন্য চাই বিকৃতি! তার উপর মিডিয়ার লোকদের যে হারে স্কান্ডাল বের হচ্ছে। যাকে ভাল মনে করে সবাই দুইদিন পরেই দেখা যায় তার পর্ণ নেটে! সমাজ পরিবর্তনে লেখক নাট্যকারদের ভুমিকা অপরিসীম। তারা যদি চান এই অবস্থার পরিবর্তনে কিছুটা হলেও সহায়তা করতে পারেন ভাল কিছু তৈরি করে যেখানে থাকবে স্বাভাবিক জীবন, অনুপস্থিত থাকবে সকল প্রকার বিকৃতি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।