আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এ যেন প্রেমহীন প্রেম

উড়ে যাই, উড়ে যাই, উড়ে উড়ে যাই. . .
আজ অনেক দেরি করেই ক্লাস শেষ হলো। এভাবে স্যারের জ্বালায় প্রতিটা দিনই যদি যেতে হয় দেরি করে! শালার মেজাজটাই বিলা হইয়্যা গেলু। অনার্সটা কবে যে কমপ্লিট হবে। আর নিজের কাজগুলো করতে পারবো। অবশ্য আমার আবার কাজ কি! ক্যাম্পাসে আসার পর নিজেকে কেমন হিরো হিরো মনে হচিছল, তা ভাবতেই হাসি পায়।

অনেক কষ্ট করে কতো যে রোদে পুড়ে আর শিস বাজিয়ে, আড্ডায় ডুবে কাটিয়েছি সময়গুলো। ক্লাসের জুঁই ছিলো আগুনঝরানো সুন্দরী! তার প্রেমে মরি ডুবি ডুবি। জৈবিকতার কারণে যে প্রেমের উৎপত্তি , তার এগিয়ে চলাও ছিল অনেকটা হেয়ালি ভাবে। বসে থাকা তার জন্য। ক্লাস শেষ হলে আরো কিছু সময় সঙ্গে যাওয়া , আর বাসে যেতে যেতে তার বাড়ির পাশে সে যখন নামবে তখনই এক ঝলক দেখে আবার হলে ফেরত।

এই প্রেমটা যে এমন সেটা বোকা হিরো নিজেই বুঝে না। ইউনিভার্সিটির লাইব্রেরিটা যেন রাজ্যের প্রেমের আড্ডাখানা। পুলা মাইয়াগের জ্বালায় ওখানে পড়ার আর নোট করার নামে যে প্রেমরাজ্যের বাড়ি ঘর নির্মাণ চলতেছে সেটা দেখে কর্মচারীরাও বিরক্ত। আর আঁতেল পড়ুয়ারা অতিষ্ট। হিরো তার প্রেয়সীকে নিয়ে সেখানেই বসে আলাপন সারে।

নোট করার নামে ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে চলে যায় লাইব্রেরীতে। প্রেম প্রেম যে ভাব মেয়েটা যেন বুঝে না। অবশ্য হিরোও বুঝতে দেয় না। ঘন্টার পর ঘন্টা কাটে, অনেক কথা, হাসি, শব্দ। মাঝে মাঝে লাইব্রেরিয়ানের হুমকি, কর্মচারীদের সতর্কতা এগুলোর মাঝেই চলে নিরন্তর শব্দ নিয়ে কথামালা।

জুঁই আসলে খুবই হাসিখুশি ও উৎফুল্ল চরিত্রের মেয়ে। নিজের মাঝে ভালোবাসাকে কতটুকু নিয়ে ভাবে সেটা বাইরে থেকে বুঝা কঠিন। বুঝা যায় না বলা যায়্। জুঁই কে নিয়ে যে হিরোর হাজার ভাবনা, সেটা তার বন্ধু, সজীব, আশিক, রোমানও খানিক টের পায়। কিন্তু এতটুকু ভাবেনা যে প্রেমের কিছু সুর আছে।

অবশ্য এ নিয়ে হিরোকে মাঝে মাঝে বন্ধুদের খুনসুটি আর এলোপাথারি কথার ফাঁকে নাস্তানাবুদ হতে হয়। ভার্সিটির হলের চেয়ে সকালে কখন যে ক্লাসে আসবে। ঠিক ক্লাসে আসা নয়, নাস্তা না করেই যে একটু আগে আসলে জুঁই কে নিয়ে কিছু সময় কাটানো বা তার সাথে গল্প আর খানিক দেখাদেখি, চোখের ব্যায়াম হবে এমনটা ভাবতে কতো রাত যে না ঘুমে , আধো ঘুমে কেটেছে, সেই হিসাব করতে হিরোকে সেমিস্টার ড্রপ দিতে হবে! এর মাঝে একদিন জানা গেল, জুইঁর এক প্রেমিক আছে! কলেজ থেকেই তাদের সম্পর্ক। হিরোদের বন্ধুমহলে না হলেও তার কয়েক বন্ধুর কাছের মিশুকে সে আগে দেখেছে। কথাও হয়েছে দু একবার।

হিরোর মাঝে খানিক বিব্রত অবস্থা। কিন্তু সেটা আরো যেন ম্রিয়মাণ হয়। তার জুঁই কে নিয়ে স্বপ্ন যেন গভীর হতে থাকে। ভালো লাগার যে সুরটা আছে শুরু থেকে, সেটাই তার আপন মনে হয়। সে আরো কাছে থাকার চেষ্টা করে।

বোকা হিরো ভালো করে বুঝাতেও পারে না তার মনের কথা। কিন্তু সে চায় চমৎকার এই মেয়েটা তার স্বপ্নের সঙ্গী হবে। এভাবে দিন যায়। ক্লাসের ফাঁকি দিয়ে হিরো মাঝে মাঝে জুঁই কে নিয়ে ভাবে। রাফিহা, সুপ্তি ম্যাডামের ক্লাসের সময় তো কথাই বলা যায় না।

অবশ্য পেছনে বসে বসে ম্যাডামের শরীর বন্দনা ও তার রুপের ছন্দ নিয়ে চিরকুটে বেশ কয়েকটি কবিতার প্রসব হয়। রোমান, শিপলু, রাজু ও আরো কয়েক ফাজিলের সহায়তায় পেছনে বেঞ্চে বসে সেই রুপের আলো বিনিময় হয়। আর মুখ টিপে হাসি। কারো মুখ নামিয়ে হাসি, কারো বিরক্তি। সুমি, রিজু, ফাইমা ওরাও মহা ফাজিল।

সবগুলা মিলে সেই চিরকুটের শব্দ ভান্ডারে শব্দ যোগ করায় মনোযোগ দেয় ম্যাডামদের ক্লাসে। চক্রাকারে সেটা্ আগায়। এক সময় ৫০ মিনেটের ক্লাস ইতি ঘটে। ক্লাসে একটা নতুন লেকচারের ফটোকপির পেপার দেয়া হলো আর জুঁই যেকানে কপি করাবে, সেখানেই গিয়ে হাজির হয় হিরো। ধূর, আমারে দিয়া গল্প লেহা অইবু না!!!!!!!!!!!!!!!
 


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।