দেশের মানুষকে ভাল হতে হবে তাহলে দেশ ভাল হবে
আমার মনে হয় Rab দুর্বলদের উপর অত্যচার করছে এবং তারাও লাইসেন্সধারী মাস্তান হয়ে গেছে তার কারন নিচে পড়েন । আপনাদের কি মনে ব্লগার প্লজ
মন্তব্য করেন । নিচের এই লিখাটি পড়ে। .
র্যাবের গুলিতে পা হারানো লিমন হোসেন সন্ত্রাসী নয়। সে ঘটনার শিকার।
কলেজপড়ুয়া লিমনকে সন্ত্রাসী বলে দাবি করার ১৯ দিন পর র্যাবের মহাপরিচালক নিজেই এ বক্তব্য দিলেন।
গতকাল সোমবার র্যাব সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মহাপরিচালক মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘আমরা তো আর লিমনকে ধরতে যাইনি। তার অপরাধ খুঁজতেও যাইনি। লিমন একটি ছোট ছেলে। আমরা তো বলছি না যে, সে খারাপ বা সন্ত্রাসী ছেলে।
এ রকম কিছু দেখছিও না। ’
গতকাল দুপুরে র্যাব সদর দপ্তরে নববর্ষের নিরাপত্তা নিয়ে র্যাব সংবাদ সম্মেলন ডাকলেও সেখানে লিমনের ওপর র্যাবের নির্যাতন এবং এ নিয়ে র্যাবের দাবির বিষয়টি মুখ্য হয়ে ওঠে। সাংবাদিকেরা সে বিষয়ে মহাপরিচালককে নানা প্রশ্ন করেন। সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে রোববার পুলিশ সদর দপ্তরে পুলিশের মহাপরিদর্শক হাসান মাহমুদ খন্দকার সংবাদ সম্মেলন করে জানান, র্যাবই এ ঘটনাটি তদন্ত করবে।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের মহাপরিচালক লিমনকে নির্দোষ বলে জানালেও ২৩ মার্চ ঝালকাঠির ওই ঘটনার পর র্যাব-৮-এর কার্যালয় থেকে ঘটনা নিয়ে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘জনগণের উপস্থিতিতে ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় সন্ত্রাসী মো. লিমন (২৫), পিতা- মো. তোফাজ্জেল, সাং- সাতুরিয়া, থানা- রাজাপুর, জেলা- ঝালকাঠিকে এক রাউন্ড গুলিভর্তি একটি বিদেশি পিস্তল ও পাঁচটি রাম দাসহ আটক করা হয়। ’ একইভাবে র্যাব সদর দপ্তর থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতেও লিমনকে মোর্শেদ জমাদ্দারের সহযোগী ও অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী বলে দাবি করা হয়। প্রশ্ন উঠেছে, লিমন সন্ত্রাসী না হলে যে অস্ত্র দিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সে অস্ত্রটি কার?
এ বিষয়ে জানতে চাইলে র্যাবের মহাপরিচালক বলেছেন, তদন্ত শেষ হলেই এসব ব্যাপারে সবকিছু জানা যাবে।
মহাপরিচালক বলেন, ‘লিমনের ঘটনা আমরা প্রথম থেকেই লক্ষ্য রাখছি। ওই এলাকায় মোর্শেদ জমাদ্দার নামে এক সন্ত্রাসী আছে।
তার ৯০ বছরের জেল হয়েছে। তার বিরুদ্ধে এলাকার মানুষ মুখ খুলতে সাহস পায় না। সে দীর্ঘদিন ধরে পলাতক। র্যাবের কাছে খবর ছিল, ঝালকাঠি পৌর নির্বাচনের আগে মোর্শেদ তার বাহিনী নিয়ে এলাকায় এসেছে। এ খবরে ২৩ মার্চ র্যাবের একটি দল সেখানে অভিযানে যায়।
র্যাবের সঙ্গে মোর্শেদের লোকজনের গোলাগুলি হয়। তখন একজন আহত হয়। র্যাব তার চিকিৎসা করে। এর পরের ঘটনা সবার জানা। ’
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের করা প্রশ্ন ও র্যাব মহাপরিচালকের জবাব তুলে ধরা হলো:
প্রশ্ন: এ ঘটনা নিয়ে আপনি যা বলছেন তার ভিত্তি কী?
মহাপরিচালক: আমার লোকজন তদন্ত করে প্রতিবেদন দিয়েছে।
তাদের প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে আমি কথা বলছি। আমি তো আর নিজে তদন্ত করিনি।
প্রশ্ন: ঘটনাটি আপনারা কীভাবে তদন্ত করছেন?
মহাপরিচালক: আমরা প্রথমে বরিশাল ব্যাটালিয়নের অধিনায়ককে (সিও) এ ব্যাপারে প্রতিবেদন দিতে বলি। আমরা গণমাধ্যমে সেই তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতেই কথা বলি। কিন্তু যখন দেখা গেল, এটা নিয়ে আপনারা সন্তুষ্ট নন, তখন সদর দপ্তর থেকে একটি কমিটি গঠন করে তদন্ত করতে বলি।
তবে এ ব্যাপারে গতকাল একটি মামলা হয়েছে। দেশে আইন আছে। যেটা সত্য সেটা প্রতিষ্ঠিত হবে। আমরা চাই সত্য প্রতিষ্ঠিত হোক। যদি দেখা যায়, র্যাবের কোনো সদস্য এতে জড়িত আছেন তবে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রশ্ন: লিমনের বিরুদ্ধে কি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কোনো অভিযোগ ছিল?
মহাপরিচালক: আমরা তো আর লিমনকে ধরতে যাইনি। লিমনের অপরাধ খুঁজতেও যায়নি। মোর্শেদকে ধরতে গেলে গোলাগুলি হয়। গোলাগুলি হলে আমরা কী করে নিশ্চিত হব কার গায়ে গুলি লেগেছে।
প্রশ্ন: গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর কি আপনারা লিমনের সঙ্গে কথা বলেছিলেন, তার কথা শুনেছিলেন?
মহাপরিচালক: সে তো ভিকটিম।
তার সঙ্গে কথা বলিনি কে বলল? সে আহত হওয়ার পর প্রথমে ঝালকাঠিতে ছিল। র্যাবই তার চিকিৎসা করিয়েছে। ঢাকায় এসেছে পরে। ঢাকায় আসার পর তো আপনারা জানলেন। আমাদের লোকজন সেখানেই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
তার খোঁজ-খবর নিয়েছে।
প্রশ্ন: চিকিৎসকদের অভিমত হলো তাকে আগে ঢাকায় আনা হলে পা রক্ষা করা যেত। কেন আগে আনা হয়নি?
মহাপরিচালক: এটা তো চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী করা হয়েছে। তারা যেভাবে বলেছেন, করা হয়েছে।
প্রশ্ন: আপনারা যে দাবি করছেন সেটা কতটুকু সত্য?
মহাপরিচালক: এটা যে চূড়ান্ত সেটা তো আমি বলছি না।
আমি যেটা বলছি, সেটাই চূড়ান্ত হলে কেন বরিশাল থেকে তদন্ত করব? এটা তো এখনো তদন্ত হচ্ছে। স্থানীয় ম্যাজিস্ট্রেট তদন্ত করছে। সব তদন্ত শেষ হলেই নিশ্চিত করে বলতে পারব।
প্রশ্ন: লিমন দোষী না হলে সে গুলিবিদ্ধ হলো কী করে?
মহাপরিচালক: গোলাগুলির সময় কেউ গুলিবিদ্ধ হলেই তাকে দোষী বলবেন কী করে?
প্রশ্ন: বরিশালের অধিনায়কের তদন্তে ওই অভিযানে অংশ নেওয়া সদস্যদের বিরুদ্ধে কি কোনো অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে?
মহাপরিচালক: না তা এখনো প্রমাণিত হয়নি।
প্রশ্ন: তার মানে লিমন কি দুর্ঘটনাবশত গুলিবিদ্ধ হয়েছে?
মহাপরিচালক: না সেটাও বলতে পারি না।
এখনো এর সমাধান হয়নি।
প্রশ্ন: মোর্শেদকে ধরতে গিয়ে তাকে পেলেন না, অথচ একজন নিরীহ লোক গুলিবিদ্ধ হলো। এটা কি র্যাবের চরম ব্যর্থতা নয়?
মহাপরিচালক: হ্যাঁ, ব্যর্থতার কথা বলতে পারেন। গোটা বাংলাদেশে কত সন্ত্রাসী আছে। আমরা কয়জনকে ধরতে পারি।
কিন্তু চেষ্টা তো করছি।
প্রশ্ন: ১৮ দিন হয়ে গেল এ ঘটনার তদন্ত শেষ হলো না। আর কত দিন লাগবে?
মহাপরিচালক: এ প্রশ্ন যাঁরা তদন্ত করছেন তাঁদের কাছে করতে পারেন। আমি তো অন্য সংস্থাকে বলতে পারি না। আমি আমার লোককে বলতে পারি দ্রুত প্রতিবেদন দিতে।
প্রশ্ন: আপনার তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন কবে দিতে পারবেন?
মহাপরিচালক: তদন্ত শেষ হওয়ার পরই দেওয়া হবে। প্রতিবেদন দিলেই তো হবে না, সেটা গ্রহণযোগ্য হতে হবে।
প্রশ্ন: র্যাবের বিরুদ্ধে অভিযোগ র্যাবই তদন্ত করবে—এটা কেমন?
মহাপরিচালক: র্যাব একা তদন্ত করছে না। ম্যাজিস্ট্রেট ও থানা তদন্ত করছে। তারা নিজের মতো করে তদন্ত করবে।
প্রশ্ন: আপনার বক্তব্যের পর আমরা কি বলব র্যাব আগের অবস্থান থেকে সরে এসেছে।
মহাপরিচালক: না, আমরা তো সরে যায়নি। অবস্থান থেকে সরে যাওয়ার কোনো রাস্তা নেই। কেন যাব?
প্রশ্ন: আপনারা ধরে নিয়েছিলেন সে সন্ত্রাসী দলের সদস্য ছিল?
মহাপরিচালক: না, এখন আর ধরার সময় নেই। যেটা প্রকৃত সত্য সেটা আমাদের বের করতে হবে।
প্রশ্ন: র্যাবের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অনেক অভিযোগ আছে...
মহাপরিচালক: মানবাধিকারের কথা বললে সেটা বিশাল ব্যাপার। মানবাধিকার ভঙ্গ করে কারা? র্যাব ৯২ হাজার অপরাধী গ্রেপ্তার করেছে। প্রশ্ন হলো এরা কারা? এরা অপরাধী। যারা অপরাধী তারাই মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী। মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীকে গ্রেপ্তার করলে কি মানবাধিকার রক্ষার কাজ হয় না? যারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে তাদের আইনের আওতায় নিতে হবে।
সেটাও র্যাবের কাজ। সূত্র:প্রথমআলো
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।