থ্রিডি স্টেরিওগ্রাম কি?
আপনারা হয়তো অনেকেই থ্রিডি স্টেরিওগ্রাম সম্পর্কে শুনেছেন। থ্রিডি স্টেরিওগ্রামে একটি দুই মাত্রার ছবির ভিতর তিন মাত্রার ছবি লুকানো থাকে। দুই মাত্রার ছবিতে তৃতীয় মাত্রা তথা ডেপথ বা গভীরতা থাকে না। থ্রিডি স্টেরিওগ্রামে কম্পিউটারের মাধ্যমে দুই মাত্রার ছবির অবজেক্টগুলো পুনর্বিন্যাস করে ডেপথ বা গভীরতার তথ্য ঢুকানো হয়। সাধারণ দুই মাত্রার ছবি দেখার জন্য কোনও বিশেষ কৌশল লাগে না কিন্তু থ্রিডি স্টেরিওগ্রাম দেখার জন্য বিশেষভাবে তাকাতে হয় (কৌশলগুলো নীচে আলোচনা করা হচ্ছে)।
সাধারণ দুই মাত্রার ছবিতে যখন আমরা দৃষ্টি ফোকাস করি তখন ছবির প্রতিটি বিন্দু থেকে আলো আমাদের দুই চোখে সমানভাবে প্রবেশ করে। অপরপক্ষে থ্রিডি স্টেরিওগ্রামে দুটি ভিন্ন ভিন্ন বিন্দু হতে আলো দুই চোখে প্রবেশ করে। তারপর মস্তিষ্ক দুচোখ থেকে প্রাপ্ত পৃথক দুটি ছবি হতে একটি থ্রিডি ছবি পুনর্গঠন করে। ফলে আমরা একটি পুর্ণাঙ্গ থ্রিডি ছবি দেখতে পাই।
কিভাবে থ্রিডি স্টেরিওগ্রাম দেখা যায়?
থ্রিডি স্টেরিওগ্রাম দেখার দুটি কৌশল আছে।
সমান্তরাল দৃষ্টি পদ্ধতি (parallel eyed technique) ও কৌণিক দৃষ্টি পদ্ধতি (crossed eyed technique)।
নামগুলো খটোমটো শোনালেও ব্যাপারগুলো আসলে খু্ব সোজা। সমান্তরাল দৃষ্টি পদ্ধতিতে আপনার চোখের ফোকাস সমান্তরাল থাকবে। মনে করুন আপনি দূরে কোথাও অথবা আকাশের দিকে তাকিয়ে আছেন। এ অবস্থায় আপনার দৃষ্টির ফোকাস সমান্তরাল হয়ে আছে।
দৃষ্টি এই অবস্থায় রেখে আপনি যদি আপনার হাত চোখের সামনে স্থাপন করেন তাহলে দেখবেন হাতটিকে একটু ঝাপসা দেখাচ্ছে (চোখের ফোকাস হাতে আনবেন না)। এখন মনে করুন হাতের জায়গায় আপনি একটি স্টেরিওগ্রাফিক ছবি স্থাপন করলেন। এ অবস্থায় যদি চোখের ঝাপসা ভাবটিকে কিছুক্ষণ স্থিরভাবে ধরে রাখতে পারেন তাহলেই আপনার কাজ হয়ে গেছে। ধীরে ধীরে (সাধারণত ২০-৩০ সেকেন্ড পরে) দেখতে পাবেন চোখের ঝাপসা ভাব কেটে গিয়ে একটি থ্রিডি ইমেজ স্পষ্ট হয়ে উঠছে। দৃষ্টিকে আরও কিছুক্ষণ ধরে রাখুন আর ছবিটি উপভোগ করুন।
কৌণিক দৃষ্টি পদ্ধতিতে আপনার চোখের ফোকাস কৌণিক অবস্থায় থাকবে। মনে করুন আপনি নাকের ঠিক সামনে তর্জনী স্থাপন করে তর্জনীর দিকে তাকিয়ে আছেন। চোখের দৃষ্টি তর্জনীর দিকে নিবদ্ধ থাকা অবস্থায় আপনি স্টেরিওগ্রাফিক ছবিটি হাত থেকে আরেকটু দূরে স্থাপন করুন। আগের মতই ছবিটি ঝাপসা দেখতে পাবেন (চোখের ফোকাস ছবিতে আনবেন না)। থ্রিডি ইমেজ ফুটে উঠার জন্য কিছুক্ষণ কৌণিক দৃষ্টি স্থিরভাবে ধরে রাখুন।
স্টেরিওগ্রাফিক ছবি স্পষ্ট দেখতে না পেলে জোর করতে যাবেন না। একটু সময় দিন ও রিল্যাক্স থাকুন। সমান্তরাল বা কৌণিক দৃষ্টিতে তাকানো একটি অভ্যাসের ব্যাপার। এ কৌশল আয়ত্ত হতে একটু সময় লাগে। কিন্তু একবার আয়ত্তে আসলে দেখবেন খুব সহজেই থ্রিডি ছবি ফুটে উঠছে।
স্টেরিওগ্রাম পিকচার কোথায় পাবেন?
গুগল ইমেজ সার্চ এ কালার স্টেরিওগ্রাম (color stereogram), রেন্ডম ড্ট স্টেরিওগ্রাম (random dot stereogram)বা থ্রিডি স্টেরিওগ্রাম (3d stereogram)এই শব্দগুলো দিয়ে সার্চ করলে অনেক ছবির লিঙ্ক আসবে। এই সবই দুইমাত্রার ছবিতে তিন মাত্রার ছবি ঢুকানোর ভিন্ন ভিন্ন টেকনিক। সবগুলো ছবিই সমান্তরাল দৃষ্টি ও কৌণিক দৃষ্টি পদ্ধতিতে দেখতে পারবেন।
নীচে কয়েকটি স্টেরিওগ্রাফিক ছবি বিবরণসহ দিলাম (ছবিগুলো গুগুল থেকে নেয়া)। চেষ্টা করে দেখুনতো দেখতে পারেন কিনা? সামুতে ছবি ছোট হয়ে যায়।
ফলে দেখতে কষ্ট হতে পারে।
১. একজন মহিলার আবক্ষ মূর্তি।
২. কব্জি পর্যন্ত একটি হাত।
৩. “color stereogram “ কথাটি লেখা।
৪. একটি ফানেল।
৫. একুরিয়ামে চারটি মাছ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।