মুক্ত আকাশ দেখব বলে বয়ে চলা। আকাশ কেন মুক্ত হয় না।
তা্রপর থেকে আমি ফুটবল টিমে নিয়মিত। পরপর ৪ বার আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে চ্যাম্পিয়ন হই। ক্রেস্ট আমার ঘরে এখনো শোভা পায়।
দেখে ভাল লাগে।
আমাদের ক্রিকেট টিম গঠন করা হবে। আমাকে জিজ্ঞাসা করল খেলা পারি কিনা। বললাম পারি কিছুটা। আমাকে দলে নেয়—তবে রেগুলার হিসেবে না।
যদি দরকার পড়ে তালে নেবে। অনেকটা এক্সট্রা প্লেয়ারের মত। আমি গায়ে লাগাই না। খেলাতো পারিনা। কি আর করা।
একদিন ডাক পরে। কারন আমাদের বোলার একজন আসেনি। তখন ম্যাট বিছিয়ে খেলা হত। যারা ম্যাটে খেলেছেন তারা হয়ত জানেন বল ম্যাটে পরে খুব ফাস্ট যায় কিছু বুঝে উঠার আগেই। তাই লাইনমত বল ফেলতে পারলেই হল।
আমাকে দলের ক্যাপ্টেন বলল তুই কেমন বল করিস। বললাম তেমন ভাল না। বলল ব্যাপার না। তুই শুরুতে বল করিস। খারাপ হলে সমস্যা না।
২৫ ওভারের খেলা। ১জন ৫ ওভার পর্যন্ত বল করতে পারবে। প্রথম স্পেলে ২ ওভারে ১ উইকেট, তারপরের ১ ওভারে ২ উইকেট আর শেষের ২ ওভারে ২ উইকেট। আমার জীবনের সেরা বোলিং ফিগার। আমরা জিতে যাই ১০ উইকেটে।
তারপর আর খেলা হয়নি। ফাইনাল ইয়ারে এসে আবারো প্লেয়ারের সংকটে ১২তম জন হয়ে খেলি। একদিন ফিল্ডং করার জন্যে মাঠে নেমেছিলাম। সেবার আমরা চ্যাম্পিয়ন হই।
এবার আসি তাস খেলা প্রসংগে।
আমাদের পরিবার তাস খেলার ব্যাপারে রক্ষনশীল বলা চলে না। তবে বয়সের আগে খেলাটাকে ভাল চোখে দেখা হয় না। আমি দেখেছি আমাদের ঘরের কাকা, ফুপুসহ সবাই একসাথে তাস খেলে-অবশ্য সবাই তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পাস করা বা চাকুরীজীবি। কিন্তু কখনো আমি শিখতে পারিনি—তাস ধরতেও দিত না। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেও কেমন জানি ভয় ভয় লাগত তাস খেলা শিখতে।
প্রথম বর্ষ শেষে বেকার হলে থাকি। একদিন রাতের বেলা দেখি আমাদের ব্যাচ এর ফার্স্ট যে সে ইন্টারন্যাশনাল ব্রীজ খেলছে-শুধু খেলছে না বেশ ভাল খেলছে। আমি আর দেরি করিনা। ২৯ শিখে নেই তারপর ইন্টারন্যাশনাল ব্রীজ। কত রাত যে কাটিয়েছি তাস খেলে! রাত ১০ টায় বসেছি—যখন খেলা শেষ হয় দেখি সকাল হয়ে গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় বদল করেছি। তেমন ভাল্ লাগে না। আগের অনেক বন্ধু হারিয়েছি। নতুনদের সাথে সেভাবে জমে উঠে না। তারপরে একদিন গেমস রুমে গিয়ে দেখি টেবিল টেনিস খেলা হচ্ছে।
শিখতে ইচ্ছা হল। ২/৩দিন পর শিখতে সুরু করে দিলাম। তারপর থেকে এই খেলা্টা ভাল লাগতে শুরু হয়। প্রায় প্রতি রাতে না খেল্লে ভাল লাগত না।
এরপর একদিন বিদেশে চলে আসি।
প্রতি শনিবার সময় কাটে না ঠিকঠাক। বিদেশে এসে যেটা খুব বেশী দৃষ্টি আকর্ষন করল তা হল প্রায় সবাই খেলাধূলা করতে পারে। আর সবখানে খেলাধূলার বেশ ভাল সুবিধা। একদিন বিকেলে ঘুরতে ঘুরতে দেখলাম ক্রিকেট খেলা হচ্ছে মাঠে। স্বপ্ন দেখছি নাতো।
এই বিদেশ বিভুইয়ে কে খেলছে! পরে জানলাম পাকিস্তানী আর ভারতীয়রা মাঝে মাঝে খেলে। এদের সাথে যোগ দিয়ে দিলাম। মাঝে মাঝেই সময় কাটানোর জন্যে খেলি। ভালও লাগে। আর একটা ব্যাপারও আছে।
আমার এক বন্ধু আছে কানাডা প্রবাসী। ও আমাকে একদিন বলেছিল-বিদেশে আমরা একজন আর একজন নই। প্রতিজন এক একটা দেশ। যখন কেউ ভাল কিছু করে তবে লোকে বলবে বাংলাদেশ ভাল করেছে-আবার খারাপ কিছু করলেও বলবে বাংলাদেশ ভাল নয়। তার কথাটি খুব মনে ধরেছিল।
তাই চেষ্টা থাকে নিজেকে প্রদর্শনের মাধ্যমে দেশকে চেনানোর। তাই খেলে যাই-সবার সাথে একজন বাংলাদেশীতো আছে।
(অসমাপ্ত)
২য় পর্বঃ Click This Link
১ম পর্বঃ Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।