পবিত্র কোরআন, মুসলিম পারিবারিক আইন, সংবিধান এবং জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি ২০১১
লিখেছেন -- ভাষ্যকার
=============================================
জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি ২০১১ মন্ত্রীসভায় পাস হবার পরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। ইসলাম নামধারি এক পক্ষ সরাসরি এর বিরোধিতা করছে, এক পক্ষ পক্ষে রয়েছে এবং আরেক পক্ষ কোন অবস্থানই নিচ্ছেনা অর্থাৎ তাদের কোন বক্তব্যই নেই। স্বাভাবিকভাবেই ব্যাপারটা নিয়ে সাধারণ মানুষজন বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছে। আসলে এই নীতিমালায় উল্লেখিত যে দু’টো ধারা নিয়ে এত আলোচনা-সমালোচনা এর কারণই না কি? এটা কি সত্যিকারভাবেই রাজনৈতিক কোন ইস্যু তাও আলোচনার দাবি রাখে। তার আগে দেখে নেয়া দরকার পবিত্র কোরআন এবং ইসলামী গ্রন্থগুলো, মুসলিম পারিবারিক আইন ১৯৬১ অধুনা জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি ২০১১ এবং বাংলাদেশের সংবিধানের বক্তব্যই বা কি!
যদি সমান অধিকারের ব্যাপার নিয়ে বিরোধিতা করতেই হয় তাহলে বাংলাদেশের সংবিধানের কিছু ধারা নিয়েও বিরোধিতা করা উচিত! এবার দেখি বাংলাদেশের সংবিধান কী বলে।
বাংলাদেশের সংবিধানে ২৭ অনুচ্ছেদে উল্লেখ আছে যে, সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী।
২৮(২) অনুচ্ছেদ আছে, রাষ্ট্র ও গণজীবনের সর্বস্তরে নারী পুরুষের সমান অধিকার লাভ করিবেন।
২৯(১) এ রয়েছে প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদ লাভের ক্ষেত্রে সকল নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা থাকিবে।
মানুষ প্রবর্তিত আইন/নীতিমালা আলোচনার আগে দেখে নেয়া যাক পবিত্র কোরানের কি ভাষ্য। পবিত্র কোরআনের সুরা বাকারা, নিসা, মায়িদাহ প্রভৃতি সুরার বেশ কিছু আয়াতে দিকনির্দেশনা থাকলেও- মূলত সুরা নিসার তিনটি আয়াতেই (১১, ১২ ও ১৭৬) সম্পত্তি কিভাবে বন্ঠিত হবে- তা বর্ণিত হয়েছে।
সুরা নিসা, আয়াত ১১: আল্লাহ্ তোমাদেরকে তোমাদের সন্তানদের সম্পর্কে আদেশ করেন: একজন পুরুষের অংশ দু’জন নারীর অংশের সমান। অত:পর যদি শুধু নারীই হয় দু-এর অধিক, তবে তাদের জন্যে ঐ মালের তিন ভাগের দুই ভাগ যা ত্যাগ করে মরে এবং যদি একজনই হয়, তবে তার জন্যে অর্ধেক। মৃতের পিতা-মাতার মধ্য থেকে প্রত্যেকের জন্যে ত্যাজ্য সম্পত্তির ছয় ভাগের এক ভাগ, যদি মৃতের পুত্র থাকে। যদি পুত্র না থাকে এবং পিতা-মাতাই ওয়ারিস হয়, তবে মাতা পাবে তিন ভাগের এক ভাগ। অত:পর যদি মৃতের কয়েকজন ভাই থাকে, তবে তার মাতা পাবে ছয় ভাগের এক ভাগ ওছিয়্যতের পর, যা করে মরেছে কিংবা ঋণ পরিশোধের পর।
তোমাদের পিতা ও পুত্রের মধ্যে কে তোমাদের জন্যে অধিক উপকারী তোমরা জান না। এটা আল্লাহ্ কর্তৃক নির্ধারিত অংশ নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, রহস্যবিদ।
Allah commands you as regards your children’s (inheritance); to the male, a portion equal to that of two females; if (there are) only daughters, two or more, their share is two thirds of the inheritance; if only one, her share is half. For parents, a sixth share of inheritance to each if the deceased left children; if no children and the parents are the (only) heirs, the mother has a third; if the deceased left brothers or (sisters), the mother has a sixth. (The distribution in all cases is) after the payment of legacies he may have bequeathed or debts. You know not which of them, whether your parents or your children, are nearest to you in benefit, (these fixed shares) are ordained by Allah. And Allah is Ever All knower, All Wise.
অর্থাৎ, কন্যা পাবে:
=> ২/৩ ভাগ, যদি দুই এর অধিক হয় ও কোন পুত্র সন্তান না থাকে।
=> ১/২ ভাগ, যদি একজন হয় ও কোন পুত্র সন্তান না থাকে।
=> ১ পুত্রের ভাগ = ২ কন্যার ভাগ।
মাতা পাবে:
=>১/৬ ভাগ যদি পুত্র থাকে।
=> ১/৩ ভাগ যদি পুত্র না থাকে এবং শুধু পিতামাতাই ওয়ারিশ হয়।
=> ১/৬ ভাগ, যদি মৃতের ভাই থাকে
সুরা নিসা, আয়াত ১২: আর, তোমাদের হবে অর্ধেক সম্পত্তি, যা ছেড়ে যায় তোমাদের স্ত্রীরা যদি তাদের কোন সন্তান না থাকে। যদি তাদের সন্তান থাকে, তবে তোমাদের হবে এক-চতুর্থাংশ ঐ সম্পত্তির, যা তারা ছেড়ে যায়; ওছিয়্যতের পর, যা তারা করে এবং ঋণ পরিশোধের পর। স্ত্রীদের জন্যে এক-চতুর্থাংশ হবে ঐ সম্পত্তির, যা তোমরা ছেড়ে যাও যদি তোমাদের কোন সন্তান না থাকে।
আর যদি তোমাদের সন্তান থাকে, তবে তাদের জন্যে হবে ঐ সম্পত্তির আট ভাগের এক ভাগ, যা তোমরা ছেড়ে যাও ওছিয়্যতের পর, যা তোমরা কর এবং ঋণ পরিশোধের পর। যে পুরুষের, ত্যাজ্য সম্পত্তি, তার যদি পিতা-পুত্র কিংবা স্ত্রী না থাকে এবং এই মৃতের এক ভাই কিংবা এক বোন থাকে, তবে উভয়ের প্রত্যেকে ছয়-ভাগের এক পাবে। আর যদি ততোধিক থাকে, তবে তারা এক তৃতীয়াংশ অংশীদার হবে ওছিয়্যতের পর, যা করা হয় অথবা ঋণের পর এমতাবস্খায় যে, অপরের ক্ষতি না করে। এ বিধান আল্লাহর। আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, সহনশীল।
In that which your wives leave, your share is a half if they have no child; but if they leave a child, you get a fourth of that which they leave after payment of legacies that they may have bequeathed or debts. In that which you leave, their (your wives) share is a fourth if you leave no child; but if you leave a child, they get an eighth of that which you leave after payment of legacies that you may have bequeathed or debts. If the man or woman whose inheritance is in question has left neither ascendants nor descendants, but has left a brother or a sister, each one of the two gets a sixth; but if more than two, they share in a third; after payment of legacies he (or she) may have bequeathed or debts, so that no loss is caused (to anyone). This is a Commandment from Allah; and Allah is Ever All Knowing, Most forbearing.
অর্থাৎ, স্ত্রী পাবে:
=> ১/৪ ভাগ, যদি কোন সন্তান না থাকে।
=> ১/৮ ভাগ, যদি সন্তান থাকে।
ভাই-বোন পাবে:
=> ১/৬ ভাগ, যদি এক ভাই কিংবা এক বোন থাকে- প্রত্যেকে, যদি পিতা-পুত্র-স্ত্রী না থাকে।
=> ১/৩ ভাগ, যদি ভাই-বোনের সংখ্যা দুই এর অধিক হয়- ভাইবোন একত্রে, যদি পিতা-পুত্র-স্ত্রী না থাকে।
সুরা নিসা, আয়াত ১৭৬: মানুষ আপনার নিকট ফতোয়া জানতে চায় অতএব, আপনি বলে দিন, আল্লাহ্ তোমাদিগকে কালালাহ এর মীরাস সংক্রান্ত সুস্পষ্ট নির্দেশ বাতলে দিচ্ছেন, যদি কোন পুরুষ মারা যায় এবং তার কোন সন্তানাদি না থাকে এবং এক বোন থাকে, তবে সে পাবে তার পরিত্যাক্ত সম্পত্তির অর্ধেক অংশ এবং সে যদি নি:সন্তান হয়, তবে তার ভাই তার উত্তরাধিকারী হবে।
তা দুই বোন থাকলে তাদের জন্য পরিত্যক্ত সম্পত্তির দুই তৃতীয়াংশ। পক্ষান্তরে যদি ভাই ও বোন উভয়ই থাকে, তবে একজন পুরুষের অংশ দুজন নারীর সমান। তোমরা বিভ্রান্ত হবে আল্লাহ্ তোমাদিগকে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিচ্ছেন। আর আল্লাহ্ হচ্ছেন সর্ব বিষয়ে পরিজ্ঞাত।
They ask you for a legal verdict. Say: “Allah directs (thus) about Al Kalalah (those who leave neither descendants nor ascendants as heirs). If it is a man that dies, leaving a sister, but no child, she shall have half the inheritance. If (such a deceased was) a woman, who left no child, her brother takes her inheritance. If there are two sisters, they shall have two-thirds of the inheritance; if there are brothers and sisters, the male will have twice the share of the female. (Thus) does Allah make clear to you (His Law) lest you go astray. And Allah is the All-Knower of everything.”
বোন পাবে:
=> ১/২ ভাগ, যদি একজন হয়, যদি ভাই না থাকে, যদি মৃতের উধ্বস্তন-অধ:স্তন না থাকে।
=> ২/৩ ভাগ, যদি একাধিক হয়, যদি ভাই না থাকে, যদি মৃতের উধ্বস্তন-অধ:স্তন না থাকে
=> ১ ভাই এর ভাগ = ২ বোন এর ভাগ, যদি ভাই থাকে, যদি মৃতের উধ্বস্তন-অধ:স্তন না থাকে।
এ গেলো কোরআন বর্নিত সম্পত্তির উত্তরাধিকার সংক্রান্ত ধারার কথা। এবার দেখি মুসলিম পারিবারিক আইন ১৯৬১ কি বলে। মুসলিম পারিবারিক আইনে উত্তরাধিকার সম্পর্কে বলা হয়েছে কোন নারী বা পুরুষের মৃত্যুর পর তার রেখে যাওয়া সম্পত্তি থেকে মৃতের আনুষ্ঠানিকতা সম্পাদনের খরচ, দেনাশোধ বা মৃতব্যক্তি যদি কোন উইল সম্পাদন করে যান তবে তা হস্তান্তরের পর যে সম্পত্তি অবশিষ্ট থাকে তার উপর মৃতের সন্তান সন্তানাদি ও আত্মীয় স্বজনের যে অধিকার জন্মায় তাই। এ উত্তরাধিকার আইনে তিন শ্রেণির উত্তরাধিকারের কথা বলা হয়েছে যার মধ্যে রয়েছে অংশীদার, অবশিষ্টাংশ ভোগী, দূরবর্তী আত্মীয়বর্গ।
অংশীদার তাদেরকেই বুঝানো হয়েছে যারা পবিত্র কোরআনে বর্ণিত সম্পত্তি ভাগ-বন্টনের যে বিধান রাখা হয়েছে। সে আইনে কোরআনে নির্দিষ্ট অংশীদারদের সম্পত্তি বন্টনের পর মৃতের সাথে যাদের রক্তের সম্পর্ক রয়েছে এবং অবশিষ্ট সম্পত্তিতে যাদের অধিকার রয়েছে তারাই অবশিষ্টাংশ ভোগী। এবং যাদের সাথে মৃতের রক্তের সম্পর্ক রয়েছে কিন্তু তারা অংশীদার বা অবশিষ্টাংশভোগী নয় তারাই মৃতের দূরবর্তী আত্মীয়বর্গ। যদি মৃতের অংশীদার এবং অবশিষ্টাংশ ভোগী উত্তরাধিকার না থাকে তাহলেই কেবল মৃতের দূরবর্তী আত্মীয়বর্গ সম্পত্তি পাবেন।
মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ি অংশীদারই সম্পত্তির প্রধানতম দাবিদার।
কোরআনে নির্ধারিত অংশ তাদেরকে দেয়ার পর যদি সম্পত্তি থাকে তবে তা অন্যদের মধ্যে বন্টন করতে হবে অর্থাৎ অংশীদারগণ সকল উত্তরাধিকারীদের মধ্যে অগ্রাধিকার পান। অংশীদারগণের মধ্যে স্ত্রী অন্যতম। যিনি নিজে একজন নারী। পবিত্র কোরআন নারীকে এভাবে মর্যাদা এবং পুর্ণ নিয়ন্ত্রন অধিকার দিয়েছে। অংশীদারদের উত্তরাধিকার হিসেবে যে ছয়জন ব্যক্তি/ব্যক্তিবর্গ কোনভাবেই বাদ যাবেনা তারা হলোঃ পিতা, মাতা, স্বামী,স্ত্রী, ছেলে এবং মেয়ে।
যেহেতু এ আলোচনা নারী নিয়ে সেহেতু দেখে নেয়া যাক নারী এক্ষেত্রে কী পাচ্ছে।
মৃত ব্যক্তির মাতা তিনভাবে উত্তরাধিকার লাভ করতে পারেন-
=> মৃত ব্যক্তির কোন সন্তান বা পুত্রের সন্তানাদি, যত নিম্নেরই হউক, থাকলে অথবা যদি পূর্ণ, বৈমাত্রেয় বা বৈপিত্রেয় ভাই বা বোন থাকে তবে মাতা ছয় ভাগের এক ভাগ ( ১/৬) পাবেন।
=> কোন সন্তান বা পুত্রের সন্তানাদি, যত নিম্নের হউক না থাকলে এবং যদি একজনের বেশি ভাই বা বোন না থাকে তবে মাতা তিন ভাগের এক ভাগ ( ১/৩) পাবেন।
=> কোন সন্তান বা পুত্রের সন্তানাদি, যত নিম্নের হউক না থাকলে অথবা কমপক্ষে দুইজন ভাইবোন না থাকলে এবং যদি মৃত ব্যক্তি স্বামী বা স্ত্রী হয়, তবে তার স্বামী বা স্ত্রী, মাতা ও পিতা উত্তরাধিকারী হলে সেই স্বামী বা স্ত্রীর অংশ বাদ দেয়ার পর যা অবশিষ্ট থাকবে তার তিন ভাগের এক ভাগ ( ১/৩) মাতা পাবেন। মৃত ব্যক্তির এক ভাই থাকলেও মাতা ১/৩ অংশ পাবেন।
স্ত্রী স্বামীর সম্পত্তি দুইভাবে পাবেন-
=> সন্তান বা পুত্রের সন্তান, যত নিম্নেরই হউক, থাকলে স্ত্রী স্বামীর সম্পত্তির আট ভাগের এক ভাগ (১/৮) পাবেন।
=> যদি সন্তান না থাকে তাহলে স্ত্রী মোট সম্পত্তির চার ভাগের এক ভাগ (১/৪) পাবেন। এখানে উল্লেখ্য, যদি মৃতের একাদিক স্ত্রী থাকেন তাহলে কোরআনে বর্ণিত অংশ স্ত্রীদের মধ্যে সমান ভাবে ভাগ হবে।
এবার আলোচনায় আনা যাক নারী উন্নয়ন নীতিমালায় নারীকে কিভাবে দেখা হয়েছে। পুরো নীতিমালা পড়লে দেখা যাবে এই নীতিমালায় নারীকে পুর্ন মর্যাদার আসীনে রাখতে চাওয়া হয়েছে।
এ নীতিমালার কোথাও কোরআন এর সাথে সাংঘর্ষিক কিছুর দেখা পাওয়া যায়নি।
=> ২৩.৫-তে বলা হয়েছেঃ সম্পদ, কর্মসংস্থান, বাজার ও ব্যবসায় নারীকে সমান সুযোগ ও অংশীদারিত্ব দেয়া।
=> ২৫.২-তে বলা হয়েছেঃ উপার্জন, উত্তরাধিকার, ঋণ, ভূমি এবং বাজার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে অর্জিত সম্পদের ক্ষেত্রে নারীর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের অধিকার প্রদান করা।
সম্পদ বলতে ব্যক্তিগতভাবে অর্জিত এবং অংশীদার হয়ে অর্জিত সম্পদ। অংশীদার হয়ে অর্জিত যে সম্পদ নারীর নামে থাকবে তাতে তার অধিকার।
অংশীদার হয়ে অর্জিত সম্পদ তখনই হবে যখন সে সম্পদ প্রাপ্ত হবে তার পরে আগে নয়। নারী যখন উত্তরাধিকারসূত্রে বা অংশীদার হয়ে সম্পদ অর্জন করবে তখনই তা শুধুমাত্র তারই। এর আগে সে সম্পদের মালিকানা তার হয় না কখনোই। কর্মসংস্থান, বাজার ও ব্যবসার মাধ্যমে অর্জিত সম্পদে তার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। এক্ষেত্রে কারো আপত্তি থাকার যৌক্তিকতা কোথায়? নিজের উপার্জন, উত্তরাধিকার বা অংশীদার হয়ে যা পাবে তাতে তার নিয়ন্ত্রণ থাকবে।
ঋণের মাধ্যমে অর্জিত সম্পত্তি, ভূমি প্রাপ্তি সাপেক্ষে এবং বাজার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে অর্জিত যে সম্পত্তি তাতে তার নিয়ন্ত্রণের যে কথা বলা হয়েছে তা কোনক্রমেই পবিত্র কোরআনের সাথে সাংঘর্ষিক নয় উপরন্তু যে অধিকার পবিত্র কোরআন দিয়েছে তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নের ইঙ্গিত প্রদান করে।
ইসলামপূর্ব যুগে যেখানে নারীকে খেলনা সামগ্রী মনে করে যে কোন সম্পত্তিতে নারীকে বঞ্চিত করে রাখা হতো সেখানে ইসলাম নারীকে মর্যাদায় অভিষিক্ত করেছে। পরবর্তিতে যুগে যুগে নারী মর্যাদার আসনে আসীন হয়েছে তাদের কর্মের মাধ্যমে। ইসলাম যে মর্যাদা নারীকে দিয়েছে তা অভাবনীয়। জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতিমালা সুষ্ঠু ব্যাখ্যার মাধ্যমে তার বর্তমানকার রূপে পরিস্ফুট হয়েছে।
জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি ২০১১ বাংলাদেশের সংবিধান, পবিত্র কোরআনের নির্দেশিত বাণী এবং মুসলিম পারিবারিক আইনের সাথে কোনক্রমেই সাংঘর্ষিক নয় বরং সহায়ক। এখন দেখার বিষয় এ নীতিমালার কতটুকু বাস্তবায়ন হয় অথবা আদৌ হয় কী-না। যদিও এই নীতিমালা এবারই প্রথম বারের মতো প্রণীত হয়নি। আওয়ামীলীগ সরকারের আগের আমলে যা প্রণীত হয়েছিল এবং বিএনপি সরকার তা বাতিল করেছিলো। পরবর্তীতে অত্ত্বাবধায়ক সরকার আবারো প্রণয়ন করে।
বুঝাই যাচ্ছে এটা নিয়ে একটা নোংরা রাজনীতি চলে আসছে অনেকদিন ধরেই।
জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি ২০১১ মন্ত্রীসভায় পাস হয়েছে। দেশের সুশীল সমাজ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল একে স্বাগত জানিয়েছে। কয়েকটি দল কিছু বলছে না। ইসলামের ধ্বজ্বাধারী মুফতি আমিনীর দল বিরোধিতা করছে, কয়েকটি স্বাগত জানিয়েছে, ইসলামের নামে রাজনীতি করা জামাতে ইসলামী এ নিয়ে কিছুই বলেনি।
তাই এ নিয়ে রাজনৈতিক কোন সিদ্ধান্তও নেই। তবে অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে আরো কিছুদিন এ নিয়ে রাজনীতি চলবে।
রাজনীতির এ ঘৃণ্য খেলায় বার বার ইসলামকে ব্যবহার করা হয়েছে। এর অবসান সহসাই দরকার।
তথ্যসূত্র:
# মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ, ১৯৬১।
# মুসলিম আইনে উত্তরাধিকার, নারী ও আইন।
# পারিবারিক আইনে বাংলাদেশের নারী।
# ইন্টারনেট।
অন্যব্লগ থেকে
http://www.shobdoneer.com/commentator/10950
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।