প্রথম আলোর ঢাকায় থাকিতে নিয়মিত লিখতেন আলী আসিফ শাওন। আমাদের বন্ধু শাওন আর লিখবেন না ঢাকা শহরের নাগরিক অসুবিধা নিয়ে। পত্রিকার নীতির বিরোধিতা করায় তাকে অপশন দেয়া হলো হয় যোগাযোগ ইশকুলের সভাপতি থাকবা না হয় প্রথম আলোতে চাকুরি করবা্। কমরেড অকপটে বলল আমি প্রথম আলো ছাড়তে প্রস্তুত কিন্তু যোগাযোগ ইশকুল আমার প্রানের জায়গা। েএকদিন আমরা জনগনের প্রথম আলো একটা বানাবো।
সেলিম রেজা নিউটন স্যার এ্যপ্রিসিয়েট করে ফোন দিয়ে বলেছিলেন, স্মল ইজ বেটার। পরে যা হলো অব্যাহতি পত্র লিখলেন আসিফ। ফেসবুক থেকে তার অব্যাহতি পত্রটা উঠিয়ে দিলাম।
কেন প্রথম আলো ছেড়ে চলে আসলাম ...?
by Ali Asif Shawon on Saturday, April 2, 2011 at 5:53pm
২ এপ্রিল, ২০১১
বরাবর
মতিউর রহমান
সম্পাদক,
দৈনিক প্রথম আলো,
১০০ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ,
কারওয়ান বাজার, ঢাকা ১২১৫।
বিষয়: অব্যাহতি প্রসঙ্গে।
জনাব,
আমি নিম্নস্বাক্ষরকারী আপনার পত্রিকার রোববারের ক্রোড়পত্র ‘ঢাকায় থাকি’ বিভাগে জুন ২০০৯ থেকে কাজ করছিলাম। শুরু থেকে এ পর্যন্ত ‘ঢাকায় থাকি’ বিভাগের অন্যতম প্রধান প্রতিবেদক হিসেবে অসংখ্য প্রতিবেদনের কাজ সম্পন্ন করেছি। নান্দনিক কাজের পরিবেশ এবং সহকর্মীদের সহযোগিতার কারণে আমি স্বাচ্ছন্দ্যেই কাজ করছিলাম। কিন্তু এখন আর আমার পক্ষে আপনার প্রতিষ্ঠানে কাজ করা সম্ভব নয়।
আমি আপনার স্বনামধন্য পত্রিকার কাজের দায়িত্ব থেকে কেন অব্যাহতি চাচ্ছি সেই কারণ নিচে ব্যাখ্যা করছি।
আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী। পড়ালেখার পাশাপাশি বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার তাগিদ বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পর থেকেই ছিল। গণযোগাযোগের শিক্ষার্থী হিসেবে একটি সত্যিকারের গণমাধ্যমের স্বপ্ন বরাবরই দেখতাম। যেখানে প্রকৃতপক্ষেই গণমানুষের কথা লেখা হবে। শ্রেণীমাধ্যম নয় গণমাধ্যমের চর্চা কিভাবে বাংলাদেশে সম্ভব এই ব্রত শুরু থেকেই ছিল।
সেই উদ্দেশ্যেই ‘যোগাযোগ চর্চা এবং গণমাধ্যমের সমালোচনামূলক বিশ্লেষণ’ লক্ষ্য নিয়ে সহপাঠী এবং বন্ধুরা সম্মিলিতভাবে ‘যোগাযোগ ইশকুল’ নামের একটি সংগঠন গড়ে তুলেছিলাম পহেলা সেপ্টেম্বর ২০০৮। সংগঠনের সদস্যদের পছন্দে যোগাযোগ ইশকুলের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলাম। শুরু থেকে এ পর্যন্ত ‘যোগাযোগ ইশকুল’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কিছু সফল কর্মসূচির আয়োজন করেছে। দৈনিক প্রথম আলোসহ দেশের প্রায় সব কয়টি গণমাধ্যম কর্মসূচির খবর ছাপিয়ে আমাদের কাজে সহযোহিতা করেছে। সর্বশেষ ৩০ মার্চ, ২০১১ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে দৈনিক প্রথম আলো, ডেইলি স্টার এবং বারাক ওবামা ও রাবার্ট ব্লেকের কুশপুত্তলিকা দাহ করে যোগাযোগ ইশকুলের সদস্যরা।
গণমাধ্যমের কল্যাণে বিষয়টা নিশ্চয়ই আপনার অজানা নয়।
এবার আসি মূল প্রসঙ্গে। যোগাযোগ ইশকুলের অন্যান্য কর্মসূচির মতো সর্বশেষ কর্মসূচিতেও আমার সম্মতি ছিল। তবে, ব্যাক্তিগতভাবে প্রথম আলোর নিয়মিত বেতনভুক্ত কর্মী হওয়ার কারণে ৩০ মার্চ ২০১১ এর কর্মসূচিতে আমি সরাসরি অংশগ্রহন করতে পারি নি। মাইক হাতে নিয়ে বক্তৃতা দিতে পারি নি।
ম্যাচের কাঠি জ্বেলে পোড়াতে পারি নি প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, বারাক ওবামা এবং রবার্ট ব্লেকের কুশপুত্তলিকা। কেবলই দর্শক হয়ে চেয়ে চেয়ে দেখেছি।
তারপরও, কর্মসূচির পরদিন দৈনিক প্রথম আলোর পক্ষ থেকে আমাকে বলা হয়, যোগাযোগ ইশকুলের সভাপতির পদ ছেড়ে প্রথম আলোতে কাজ করতে হবে। আমার বিভাগীয় সম্পাদক আমাকে দুটির মধ্যে যেকোন একটিকে বেছে নিতে বলেন। আমাকে বলা হয়, ‘হয় প্রথম আলোর চাকরি অথবা যোগাযোগ ইশকুলের সভাপতি।
’
আমি যোগাযোগ ইশকুলের সভাপতি হয়েই থাকতে চাই। আমি পেটের দায়ে আমার স্বপ্ন বিক্রি করতে পারি না। তাই আমি আপনার প্রথম আলো ছেড়ে দিচ্ছি। আপনাদের কারো প্রতি আমার কোন অভিযোগ নেই জানিয়ে আমি আমার কর্ম থেকে অব্যাহতি চাচ্ছি।
আলী আসিফ
অ্যাসাইনমেন্ট রিপোর্টার
ঢাকায় থাকি
দৈনিক প্রথম আলো
১০০ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ
কারওয়ান বাজার, ঢাকা ১২১৫।
Click This Link
Click This Link
পোড়ানোর সংবাদের দুইটা লিংক
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।