আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভাই বুকের নীচে ব্যাথাতো তাই রিস্ক নিলামনা, তাছাড়া রাত-বিরাতে এম্বুলেন্স নিয়ে দোড়াদৈড়ি আমার ভাল লাগবেনা

لا إله إلا الله محمد رسول الله

আমি প্রচুর সিগারেট খাই (স্মোক করি) । মাঝে মাঝে স্মোক করতে একদম ভাল্লাগেনা, তারপরও টানতেই থাকি ..টানতেই থাকি ! এইতো ভাবলাম একটু লিখি, ওমনি একটা সিগারেট ধরিয়ে ফেল্লাম..এখন ধুয়া ছাড়তে ছাড়তে ছাঁই ফেলতে ফেলতে লিখছি..... মা প্রায় ফোন করে বলে, বাবা তুই কি এখনো সিগারিট খাস ? আমি বলি এইতো মা অনেক কমিয়ে দিয়েছি ! (আসলে তেমন কমাতে পারিনি!) মা কান্না কান্না কন্ঠে বলেন, তোর জন্য আমার অনেক অনেক চিন্তা হয়, ছেড়েদে বাবা । আমি বলি ধুর মা চিন্তা করোনা, এইতো ছেড়ে দিচ্ছি ! আর ছাড়া হয়না...তবে ছেড়ে দিব ইনশাল্লাহ ইদানিং নিঃশ্বাস নিতে কেমন যেন আরাম পাইনা, বুকটা কেমন যেন ধরে থাকে ! একটু একটু ভয় লাগছে ! মনে হচ্ছে হঠাৎ যদি হার্ট এ্যাটাক করি ! তারপরও টানতেই থাকি ..টানতেই থাকি ! গতকাল খুব সমস্যায় পড়লাম, রাতে খেতে বসে খেতে পারছিলামনা, বার বার মাথা ঝিম করে উঠছিল, বুকের বাম পাশে কেমন ব্যাথা করছিল ! মনে হচ্ছিল জ্ঞান হারিয়ে ফেলব ! রাত তখন ১১টা । চালাফেরা করলে তেমন সমস্যা হয়না, কিন্তু বসে থাকলে বা শুলেই বুক ধরে যায় এবং নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয় ! কিছুক্ষণ পর সমম্যাটা মনে হলো আরো বাড়ছে...বড়ই চিন্তায় পড়ে গেলাম । শুতে ভরসা পাচ্ছিলামনা..মনে হচ্ছিল যদি রাতে অবস্হা আরো খারাপ হয় তখন কি হবে ! এম্বুলেন্স আসতে আসতেতো আমি নাই হয়ে যাব ! তখনই সিদ্বান্ত নিলাম এখনই ডাক্তারের কাছে যাব ।

দুই ফ্রেন্ডকে নিয়ে রওনা হলাম হাসপাতালের উদ্দেশ্যে । হাসপাতালে ডিউটি ডাক্তার পাওয়া যাবে । প্রথমে গেলাম শ্যামলী আল-মারকাজুল হাসপাতালে । গিয়ে ডিউটি ডাক্তারকে খুজলাম কিন্তু যা শুনলাম তাতে আমরা হতভম্ব হয়ে গেলাম ! , ডাক্তার নাকি নাই ! এতরাতে ডাক্তার থাকেনা ! তাছাড়া আজ শুক্রবার ! আমরা তিনজন যোয়ান পোলা , তাদের ছেড়ে কথা কইলামনা । জিজ্ঞেস করলাম রোগী ভর্তি আছেকিনা ? তারা বলল আছে ! বল্লাম, এখন ইমার্জেনাসী হলে কি করবেন ? তারা বলল তা আপনাদের ভাবতে হবেনা ! তারপর কি আর করা তাদের ধমক-ধামক দিয়ে চলে আসলাম ।

এদিকে ধমক-ধামক দেয়ার কারনে আমার শরীর আরো বেশী ঝিম ঝিম করছে ! এরপর গেলাম শ্যামলী ট্রুমা সেন্টারে । এখানে একজন ডিউটি ডাক্তার পাওয়া গেল । মনে হল সদ্য পাশ করা ডাক্তার । উনি বললেন, এখানেতো শুধু অর্থোপেডিক চিকিৎসা হয় তারপরও দুটো ৗষধ লিখে দিচ্ছি খেয়ে শুয়ে পড়বেন । আমার ভরসা হলোনা ।

এরপর গেলাম পাশের আরেকটা হাসপাতারে সেবা জেনারেল হাসপাতাল । ডিউটি ডাক্তার আছে কিনা জিজ্ঞেস করতেই বল্ল আছে । আমাদের বিশমিনিট বসিয়ে রেখে তারপর ভিতরে ডুকতে দিল । দেখলাম চেয়ারে একজন বসে আছে । বুঝাগেল উনিও সদ্যপাশ করা ।

চোখ ঢুলু ঢুলু করে আমাদের দেখছেন । বুঝলাম বেচারাকে ঘুম থেকে ডেকে তোলা হয়েছে ! আমি হাসিমুখে আমার সমস্য বর্ননা করছি আর উনি অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন ! মনে হয় ভাবছেন, সত্যিই আমি রোগী নাকি অন্য কেউ । আমি তাকে আশস্ত করে বল্লাম ভাই বুকের নীচে ব্যাথাতো তাই রিস্ক নিলামনা, তাছাড়া রাত-বিরাতে এম্বুলেন্স নিয়ে দোড়াদৈড়ি আমার ভাল লাগবেনা । যাক, উনি আমায় পরামর্শ দিলেন হৃদরোগ হাসপাতালে যাবার জন্য । এরপর এলাম হৃদরোগ হাসপাতালে ।

১০টাকার আউটডোর টিকিট কাটলাম, ৮০ টাকার ইসিজি স্লিপ নিলাম । ১০ মিনিটে ইসিজি করিয়ে ডাক্তারের কাছে গেলাম । ডাক্তার বললেন, আপনার সব স্বাভাবিক, প্রেসার, ইসিজি সব । আমার মনে হয় আপনা গ্যাসট্রিকের সমস্যা আছে । গ্যাসট্রিক থেকেও এমন হতে পারে ।

পরে একটা ইকো করিয়ে নিবেন । তিনটা ওৗষধ লিখে দিলেন । বললে খেয়ে শুয়ে যান সমস্যা নেই । আমরা তিন ফ্রেন্ড গল্প করতে করতে বাসায় চলে এলাম । বুঝতে পারলাম কখনো যদি সমস্যা হয় তাহলে অবশ্যই প্রথমেই সরকারী বড় হাসপাতালে যেতে হবে আর একান্তই যদি প্রাইভেট হাসপাতালে যেতে হয় তাহলেও নামকরা বড় কোনটাতেই যাওয়া ভাল ।

নয়তো আমও যাবে, ছালাও যাবে......

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।