বলুনঃ সত্য এসেছে এবং মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে। নিশ্চয় মিথ্যা বিলুপ্ত হওয়ারই ছিল। [১৭:৮১-পবিত্র কুরআন]
The 100: A Ranking of the Most Influential Persons in History বিখ্যাত ইতিহাসবেত্তা মাইকেল এইচ হার্ট এর ব্ই যা প্রথম প্রকাশিত হ্য় ১৯৭৮ সালে এবং কিছুটা সংশোধন করে ১৯৯২ সালে পুনমুদ্রিত হয়। এই বইটিতে পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে প্রভাব বিস্তারকারী ১০০ জন ব্যক্তির তালিকা প্রকাশ করা হয়। তলিকাটিতে সবার উপরে স্থান দেয়া হয় ইসলামের শেষ নবী মুহাম্মাদ (সাঃ) কে।
হার্ট এর মতে মুহাম্মাদ (সাঃ) আধ্যাত্মিক ও জাগতিক উভয় ক্ষেত্রে সমানভাবে সবচেয়ে বেশী সফল। তালিকার প্রথম দশ জনের সংক্ষিপ্ত পরিচয় নিম্নে তুলে ধরা হলো
(১) মুহাম্মাদ (সাঃ) (৫৭০-৬৩২)ইসলাম ধর্মীয় বিশ্বাসমতে আল্লাহ কর্তৃক প্রেরিত সর্বশেষ নবী ও রাসূল যাঁর উপর আল কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে। অধিকাংশ ইতিহাসবেত্তা ও বিশেষজ্ঞদের মতে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় নেতা। তার এই বিশেষত্বের অন্যতম কারণ হচ্ছে আধ্যাত্মিক ও জাগতিক উভয় জগতেই চূড়ান্ত সফলতা অর্জন। তিনি ধর্মীয় জীবনে যেমন সফল তেমনই রাজনৈতিক জীবনে।
(২) স্যার আইজ্যাক নিউটন (জানুয়ারি ৪, ১৬৪৩ – মার্চ ৩১, ১৭২৭) প্রখ্যাত ইংরেজ পদার্থবিজ্ঞানী, গণিতবিদ, জ্যোতির্বিজ্ঞানী, প্রাকৃতিক দার্শনিক এবং আলকেমিস্ট। ১৬৮৭ সনে তার বিশ্ব নন্দিত গ্রন্থ ফিলসফিয়া ন্যাচারালিস প্রিন্সিপিয়া ম্যাথামেটিকা প্রকাশিত হয় যাতে তিনি সর্বজনীন মহাকর্ষ এবং গতির তিনটি সূত্র বিধৃত করেছিলেন। এই সূত্র ও মৌল নীতিগুলোই চিরায়ত বলবিজ্ঞানের ভিত্তি হিসেবে কাজ করেছে।
(৩) যীশু খ্রীস্ট (৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দ - ৩০ খ্রিস্টাব্দ) খ্রীস্টধর্মের প্রাণপুরুষ নাজারেথের যীশু। খ্রিস্টানরা বিশ্বাস করেন যে, যীশুই হলেন ঈশ্বরপুত্র যিনি নিজের মৃত্যু ও পুনরুত্থানের মাধ্যমে জগতের মুক্তি আনয়ন করেছিলেন।
(৪) গৌতম বুদ্ধ (খ্রি.পূ. ৫৬৩-৪৮৩) সিদ্ধার্থ গৌতম ছিলেন প্রাচীন ভারতীয় দার্শনিক, ধর্মগুরু এবং বৌদ্ধধর্মের প্রতিষ্ঠাতা।
(৫) কনফুসিয়াস (খ্রি.পূ. ৫৫১-৪৭৯) প্রাচীন চীনের প্রখ্যাত দার্শনিক এবং চিন্তাবিদ। তাঁর দর্শন ও রচনাবলী চীন,কোরিয়া,জাপান সহ পূর্ব এশিয়ার জীবনদর্শনে বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে গভীর প্রভাব বিস্তার করেছে।
(৬) সেইন্ট পল (৫-৬৭) খ্রীস্টধর্মের প্রতিষ্ঠাতা, ফিলিস্তিনের বাইরে বিশেষ করে রোমে খ্রীস্টধর্ম প্রচার করেন। তিনি নূতন নিয়ম বা নতুন বাইবেলের ১৩ গ্রন্থের রচয়িতা।
(৭) সাই লুন (৫০–১২১) কাগজ এবং কাগজ প্রস্তুত প্রণালীর আবিষ্কারক।
(৮) ইয়োহানেস গুটেনবের্গ (১৩৯৮-১৪৬৮) প্রকাশনাশিল্পের জনক, ১৪৪০ সালে তিনি ছাপাকল তৈরি পদ্ধতির উপর তাঁর গবেষণা প্রকাশ করেন।
(৯) ক্রিস্টোফার কলম্বাস (আনু. ১৪৫১-মে ২০, ১৫০৬) ছিলেন ইতালীয় নাবিক ও ঔপনিবেশিক। তাঁর আমেরিকা অভিযাত্রা ঐ অঞ্চলে ইউরোপীয়দের উপনিবেশ স্থাপনের সূচনা করেছিল।
(১০) আলবার্ট আইন্সটাইন (মার্চ ১৪, ১৮৭৯ - এপ্রিল ১৮, ১৯৫৫) জার্মানিতে জন্মগ্রহণকারী একজন নোবেল পুরস্কার বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী।
তিনি তার বিখ্যাত আপেক্ষিকতার তত্ত্ব এবং বিশেষত ভর-শক্তি সমতুল্যতার সূত্র E=mc2 আবিষ্কারের জন্য বিখ্যাত। তিনি ১৯২১ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তার পুরস্কার লাভের কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়, তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানে বিশেষ অবদান এবং বিশেষত আলোক-তড়িৎ ক্রিয়া সম্পর্কীত গবেষণার জন্য।
ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা উমর ইবনুল খাত্তাব রয়েছেন তালিকার ৫১তম স্থানে। আমি কয়েক বছর আগে নিউ মার্কেট থেকে বইটি কিনি।
খুব ভাল একটি বই, একসাথে ১০০ জনেরও বেশী (হার্ট তার বইতে ১০০ জনের তালিকা দেয়ার পর আরো বেশ কয়েকজনের নাম রানার্সআপ তালিকায় উল্লেখ করেছেন) বিখ্যাত ব্যক্তির সংক্ষিপ্ত জীবনী তুলে ধরা আছে বইটিতে। আমাদের দেশের অনেক প্রকাশক বইটিকে বাংলায় প্রকাশ করার চেসটা করেছেন, অনেকে অনুবাদ করতে গিয়ে তালিকাটিকে নিজের মত করে কাটাছেড়া করেছেন। আমি পাঠকদের অনুরোধ করব আসল বইটি কিনে পড়ার জন্য। আমি নিউ মার্কেট থেকে যে বইটি কিনি সেটা ছিল মালয়েশিয়ান এডিশন। এটা আমার পছন্দের বইগুলোর মধ্যে অন্যতম।
তথ্যসূত্রঃ
Michael H. Hart The 100: A Ranking of the Most Influential Persons in History.
http://en.wikipedia.org
http://en.wikipedia.org/wiki/The_100
http://bn.wikipedia.org
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।