আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মন ফিরে চলো কৈশোরে........................

মৌলিক অধিকার গুলো আজো আমাদের কাছে গনিকালয়ের অন্ধকার ঘরের তেল চিটচিটে বালিশে শুয়ে থাকা ষোড়শী নারী। ইচ্ছে হলেই গনতন্ত্রের দোহাই দিয়ে এদেশের সরকার ব্যবস্থা যখন খুশি তখন সেগুলোর সাথে পারস্পরিক সর্ম্পকে জড়িয়ে পরে।
আজ ২৮শে মার্চ,সকাল থেকে ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে বাইরে। এক কাপ গরম চা নিয়ে বসলাম বারান্দায়। প্রকৃতির লিলা খেলায় মত্ত হয়ে কখন জানি হারিয়ে গেলাম কৈশোরে।

মনে পরে গেল সেই সব পুরোনো দিন গুলোর কথা। স্কুল জীবনে খুব একটা ভাল ছাত্র না হলেও খুব যে খারাপ ছিলাম তাও না। আমি তখন ক্লাস নাইনে পরি,এমনিতেই খুব একটা কথা বলতাম না আমি। ধীরে ধীরে সবার সাথে পরিচিত হলাম,কয়েক জন বন্ধুও মিলে গেল তাতে। প্রথম দিকে খুব একটা ক্লাস মিস দিতাম না আমরা।

সবাই এক সাথে বসতাম,লিজার টাইমে এক সাথে গল্প করতাম। একদিন আমরা বন্ধুরা মিলে বুদ্ধি করলাম স্কুল পালাবো। যেই ভাবা সেই কাজ। পরদিন সবাই স্কুল ড্রেস্ পরে বাসা থেকে বাহির হলাম ঠিকই কিন্তু স্কুলে গেলাম না কেউই। সকাল ৯ টায় রওনা হলাম তাজহাট রাজবাড়ীর দিকে,পথে সকালের নাস্তা করে নিলাম সবাই।

তাজহাট রাজবাড়ী অনেক পুরোনো হলেও এখনো দাড়িঁয়ে আছে কালের সাক্ষী হয়ে। রাজবাড়ীর ফটকের সামনে বিশাল এক পুকুর সেটি পেরিয়ে গেলেই বড়ও এক ফোয়াঁড়া। মাঝে দাড়িঁয়ে অসংখ্য তাল গাছ যেন বলছে আমরা মাথা নোয়াবার নই। ফোয়াঁড়া পেরিয়ে ফটকের বিশাল সিড়িঁতে বসলাম সবাই। ততক্ষনে সবার গাঁ দিয়ে ঘাম ছুটছে।

কিছুক্ষণ জিরিয়ে নেবার পর সবাই স্কুল ড্রেস্ বদলাতে শুরু করলাম। অনিচ্ছা থাকা সত্তেও কাজটি করতে হল কেননা আমাদের এক স্যারের বাসা ছিল কাছাকাছি। যদি দেখে ফেলে এই ভয় নিয়ে ঘুড়তে থাকলাম রাজবাড়ীর সুন্দর্য্য অবলোকনে । একে একে ঘুড়ে দেখলাম সভা কক্ষ,বৈঠক খানা,শয়ন কক্ষ,কড়িডোর,বারান্দা,রঙ্গ মহল। কেমন যেন জীবন্ত ভিতীকর পরিবেশ হাত ছানি দিয়ে ডেকে যায় আয় আয় বলে।

ভেতর মহল দেখার পর গেলাম আমরা গোল সিঁড়ি বেয়ে ছাদে। এখান থেকে পুরো শহরটা আবছা দেখা যায়। ছাদে একটি হাওয়া খানা রয়েছে যেখানে প্রচুর বাতাস অক্লান্ত ভাবে বয়ে চলছে যেন অনন্ত কাল ধরে। কিছুক্ষণ বাতাস লাগিয়ে চলে গেলাম পাশের পরিদর্শন কক্ষে। এখান থেকে রাজবাড়ীর সামনে এবং পিছনে লক্ষ রাখা যায়।

মুলত এটি ব্যবহার করা হতো মহলের চারপাশের দুরদুরান্ত পর্যন্ত লক্ষ রাখার জন্য যাতে শত্ত্রুর আক্রমনের অগ্রিম খবর রাজপ্রাসাদে পৌঁছে দেয়া যায়। এখান থেকে আমরা গেলাম নিচের ঘোড়াশালায়,এখানে দেখার মতো শুধু ঘোড়ার খাবারের জায়গা আর বেঁধে রাখার খুঁটি। উঠোনের একপাশে কালের স্বাক্ষী হয়ে দাড়িঁয়ে রয়েছে একটি আম গাছ। গরম বেশি পরায় আমে রঙ লাগতে শুরু করেছে সবে,আমারা বন্ধুরা আমের গাছে ঢিল দিয়ে কয়েকটা আম পারতে সক্ষম হলাম। খেলাম তৃপ্তি করে।

সময় বাড়তে বাড়তে দুপর হয়ে গেছে বুঝতে পারলাম পেটে টান পরায়। খেতে গেলাম পাশের এক খুপড়ি দোকানে,মাত্র ২০ টাকায় সেরে নিলাম দুপুরান্ন। ফেরার সময় হল বলে বেজে উঠলো ঘন্টা,মুল ফটোকে দাড়িঁয়ে পিছন ফিরে মনে মনে বলছি বিদায় রাজবাড়ী। মনে রেখ রেখেছিনু পদধুলি তোমার ভুপৃষ্টে বন্ধুবরেরা মিলে। আজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় মনে পরে যায় সেসব স্মৃতির কথা।

বন্ধুরা সব যে যার পরাশুনা নিয়ে ব্যস্ত। কারো কারো খবরো জানি না। আজ জীবনে অফুরন্ত সময় পেলেও মন ভরে না আড্ডা আর গানে নিজের ক্যারিয়ারের চিন্তায়। নিজেকে তাই শুধু বলি মন চলো তুমি আর আমি ফিরে যাই সেই কৈশোরে যেখানে আমি আর বন্ধুরা মিলে মিশে এক আকাশ।
 


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।