তবু হাতড়ে খুজে ফিরি আলো
প্রতিদিনই ভাবছি সিগারেট খাওয়া ছেড়ে দেব। টাকায় পোষাচ্ছে না, শরীরেও কুলাচ্ছে না। তারপরও ঘুরে ফিরে খেয়ে ফেলি আর ভাবি এটাই শেষ। সুনীল গাঙ্গুলি একটা লেখায় লিখেছিলেন ‘সিগারেট হচ্ছে সবচেয়ে হারামজাদা নেশা, সব নেশাই ছেড়ে দিলাম, কিন্তু সিগারেট আর পিছু ছাড়েনা’।
আমারও একই অবস্থা।
অথচ ভার্সিটিতে আসার আগে ছিলাম নিপাট ভদ্রলোক। নেশাটেশা করার কথা মাথায়ই আসতনা, চা খেতাম সারা দিনে অল্প কয়েকবার। কিন্তু একটা সময় ধাক্কা খেয়ে একেবারে কাত, যা পাওয়া যায় তাই খাই। সেই শুরু সিগারেট এর। এখন পর্যন্ত যন্ত্রনা দিয়ে যাচ্ছে।
বেশ কয়েকবার সিগারেট ছাড়ার ঘোষনা দিয়ে হাসির পাত্র হয়ে গেছি বন্ধু আর জুনিয়রদের কাছে। গতবছর ফুসফুসে ইনফেকশান হয়ে এক বিতিকিচ্ছিরি অবস্থা, একটা পরীক্ষাও পিছাতে হল এর জন্য। সেই সময় খুব ভয় পেয়েছিলাম, মাসখানেক দূরে ছিলাম, কিন্তু এখন আবার সাহসী হয়ে গেছি।
সকাল থেকেই চিন্তা করছিলাম বাংলাদেশ এ কেন ক্যান্সার এর আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে গেছে এই নিয়ে একটা পোস্ট দিব। আমাদের ইন্ডাস্ট্রি গুলা কি পরিমান carcinogenic সাবস্টেন্স উৎপাদন করছে এবং সেগুলা পানি আর বাতাসে ফ্রী ফ্রী ছেড়ে দিচ্ছে, আমাদের পরিবেশ অধিদপ্তর কিভাবে দেখেও না দেখার ভান করছে, এই সব নিয়া গালাগালিগুলো বেশ গুছিয়ে আনার পর মনে পড়ল- আমি তো সিগারেট খাই।
নিভে গেল উৎসাহ। পোস্ট টা আর দেয়া হল না।
যেদিন ধুম্রপান ছেড়ে দিতে পারব সেদিন অবশ্যই লিখব। তার আগে যদি কেউ লিখে তো আরো ভাল।
গুরুর গীতাঞ্জলি পড়ছি তো ইদানিং ওখান থেকে একটা লাইন মেরে দিই-
মিল ছুটেছে তাহার সাথে
ধরা দিলেম তোমার হাতে,
যা আছে মোর এই জীবনে
তোমার দ্বারে এনেছি।
মেনেছি, হার মেনেছি
ঠেলতে গেছি তোমায় যত
আমায় তত হেনেছি।
(গীতাঞ্জলি ৬৩)
কিন্তু আমি আর হার মানতে চাই না তোমার কাছে।
[ তোমার= সিগারেট]
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।