আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাই ফাই থ্রিলারঃ সিমুলেশন, Season 1, Episode 4

কিচ কিচ কুচ কুচ কাচ কাচ কোচ কোচ!!!

৫ গ্র্যান্ড হলরুমটা আসলে গ্র্যান্ড। অনেক বড়। এপাশ থেকে ওপাশে দেখা যায় না। নিশুর মনে হয় হয়তো এ পুরোটাই স্ক্রিনে তৈরী করা বিভ্রম। কয়েকজন মাঝখানে বসে ইলেকট্রনিক তাস খেলছে।

দুই তরুণী মত্ত ভার্চুয়াল দাবায়। শক্তিশালী এক তরুণ বক্সিং করছে হলোগ্রাফিক ইমেজের সাথে। নিশু গিয়ে চুপচাপ একটা চেয়ারে বসল। একটু পরে তার সামনে এসে বসল বছর উনিশের এক তরুণ। তরুণ তার কমুনিকেটরের সাথে নিশুর কমুনিকেটর যুক্ত করল।

এতে করে উভয়ে উভয়ের ভাষা বুঝতে পারবে। তরুণ বলল, “হ্যালো”। নিশু উত্তর দিল, “হ্যালো”। তরুণ বলল, “তুমি কোন দেশের? ” নিশু বলল, “বাংলাদেশের। তুমি? ” তরুণ বলল, “অস্ট্রিয়া ।

আচ্ছা তুমি কি কি ট্রেনিং করেছ? ” “ট্রেনিং? ” “হ্যাঁ। সবাই তো করে। অনেক ট্রেনিং আছে, যেমন সারভাইভাল ট্রেনিং, নার্ভ কন্ট্রোল ট্রেনিং। এতে করে নিজের উপর কন্ট্রোল বাড়ে”। “না আমি করি নি”।

“কেন তোমাদের দেশে সিমুলেশন কোচিং করায় না? ” “কি? ” “সিমুলেশন কোচিং। করায় না? ” “সেটা আবার কি? ” “সিমুলেশনে আসার আগে ইচ্ছুক তরুণ-তরুণীরা ট্রেনিং পাবার জন্য কোচিংয়ে যায়। সেখান থেকে টপ পারফর্র্মারদেরই সিমুলেশনে আসার সুযোগ হয়”। “তারমানে তোমরা নিজের ইচ্ছায় সিমুলেশনে আসো? ” “অফ কোর্স! ” “তাতে তোমাদের লাভটা কি? ” “কেন, প্রথম দশজনের মধ্যে থাকলে আমি যে টাকা পাব তা দিয়েই বাকি জীবন পায়ের উপর পা তুলে কাটিয়ে দিতে পারব। আর কিছুই করতে হবে না জীবনে।

কেন তুমি কি স্বেচ্ছায় আসো নি? ” “না। মানে...হ্যাঁ”। “তোমার কি কোন বয়ফ্রেন্ড আছে? ” নিশু একটু ভেবে বলল, “না”। তরুণ বলল, “তাহলে এত টাকা দিয়ে তুমি কি করবে? ” নিশু হাসল, “জমাব”। “আচ্ছা ফার্স্ট সিমুলেশনে তুমি কত হয়েছ? ” নিশু বলল, “জানি না”।

“ও আচ্ছা তোমাকে বোধহয় এখনো বলে নি। যাকগে। আমি হয়েছি সেকেন্ড। যদিও ওরা বলে যে সিমুলেশনের কোন স্মৃতিই প্রতিযোগীদের মনে থাকে না। আমাদের কোচিং থেকে স্মৃতি চুরি করে আনার কিছু টেকনিক শিখিয়ে দেয়া হয়েছিল।

আমার যতদূর মনে পড়ে আমি ফার্স্ট এর মাথায় পিস্তল চেপে ধরেছিলাম”। নিশু অবাক হবার ভান করে বলে, “তারপর? ” “তারপর? তারপর আর কি? পিছন থেকে কে যেন গুলি করল আর প্রথম দেখি গুলি খেয়েও বোতাম টিপে দিল। ব্যস, সেকেন্ড হয়ে গেলাম”। “ও। স্ক্রিনে দেখেছি, এটা তাহলে তুমিই ছিলে”।

“হ্যাঁ। আচ্ছা, তুমি পারো না স্মৃতি চুরি করতে? আমি কিন্তু তোমায় শিখিয়ে দিতে পারি”। “তাই? ” “হ্যাঁ। বিনিময়ে তিনবার হার্ডরক সেক্স চাই”। “কি? ! ? ” “আরে নাহ, দুষ্টুমি করলাম, এমনিই শিখিয়ে দেব যাও”।

এই সময় এক তরুণী এসে তরুণকে ডাক দিল। নিশু বলল, “ও কে? ” “আমার বোন”; উঠে চলে গেল তরুণ। নিশু হলরুমে হেঁটে বেড়াতে লাগল। সবাই নিজের কাজে ব্যস্ত। এরই মধ্যে আরেক তরুণকে শূণ্য টেবিলে বসে থাকতে দেখল সে।

নিশু সোজা গিয়ে তার পাশে বসে পড়ল। তরুণ তার দিকে ফিরেও তাকাল না। সে একমনে কিসব যেন ভাবছে। নিশু তার কমুনিকেটর তরুণের কমুনিকেটরের সাথে যুক্ত করল। তরুণ বলল, “কি সমস্যা? ” নিশু বলল, “কোন সমস্যা নেই।

তুমি কি ভাবছ? ” “তা দিয়ে তুমি কি করবে? ” “না কিছু না”। কিছুক্ষণ নীরবতা। তারপর নিশু বলে, “ফার্স্ট কে হয়েছে জানো? ” “তা আমি কি করে জানবো? ” “আমাকে এক মেয়ে তোমাকে দেখিয়ে বলল তুমি নাকি ফার্স্ট হয়েছ। সবাই নাকি তাই বলাবলি করছে”। তরুণ ভ্রূ কুঁচকে নিশুর দিকে তাকাল।

নিশু বলল, “তোমার চেহারায় কেমন একটা প্রত্যয় আছে। তুমি কোন দেশী? ” তরুণ দাঁতে দাঁত চেপে বলল, “জার্মান। এবং আমার কথা খুব ভালো করে শুনে রাখ, আমি এবার জিতব এবং সবাইকে হত্যা করব। তোমাকে সহ”। ৬ একদিন একদিন করে আটদিন চলে গেল।

পরের দিন দ্বিতীয় সিমুলেশন। নিশু প্রাণপনে চেষ্টা করছে টেনশন মুক্ত থাকতে। রাতের দিকে এলেন রাকিবিল হাসানাত। এখানে অবশ্য দিনরাত বোঝা যায় না। আসল পৃথিবীর সাথে সামঞ্জস্য রেখে কৃত্রিম আলো ও অন্ধকারের ব্যবস্থা করা হয়।

রাকিবিল হাসানাত বললেন, “কি অবস্থা? ” নিশু বলল, “ভালো”। “টেনশন হচ্ছে? ” “না”। “গুড। আচ্ছা, একটা ব্যাপার বোধহয় তোমার জেনে রাখা ভালো”। “কি? ” “আমাদের কাছে খবর আছে, যে জার্মান প্রফেসরের লেখা প্রোগ্রাম আমরা দ্বিতীয় সিমুলেশনে ব্যবহার করতে যাচ্ছি তার নিজের ছেলেই এবারের একজন প্রতিযোগী।

“তাই? ” নিশুর হঠাৎ মনে পড়ে জার্মান তরুণের কথা, এবং আমার কথা খুব ভালো করে শুনে রাখ, আমি এবার জিতব এবং সবাইকে হত্যা করব। তোমাকে সহ। “হ্যাঁ। আমরা জার্মান ছেলেমেয়ে দু’টোর প্রোফাইল ঘেঁটে দেখেছি। তাদের কারোর সাথেই প্রফেসরের সংশ্লিষ্টতা নেই”।

“তাই? ” “ঠিক তাই”। “তো এতে সে কি সুবিধা পাবে? ” “এখনও বোঝো নি? ” কেমন অধৈর্য শোনাল রাকিবিল হাসানাতের গলা, “হয়তো সে এখানে আসার আগেই প্রোগ্রামটায় ঢুকে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। হয়তো সিমুলেশনটার সব টিপস অ্যান্ড ট্রিকস তার নখদর্পণে চলে এসেছে। হয়তো সে এরই মধ্যে জেনে গেছে কি করলে তার হাতে অস্ত্র চলে আসবে আর কি করলে সে অন্য সবাইকে খুন করতে পারবে”। ব্যাপারটার গুরুত্ব বুঝে শিউরে উঠল নিশু।

তাহরে তো ব্যাপারটা অন্ধকারের মধ্যে অনেকগুলো মানুষের সাথে একটা হায়েনা ছেড়ে দেবার মত। যেখানে মানুষ অন্ধকারের হদিস পাবে না, যেটা থাকবে হায়েনার নখদর্পণে। দীর্ঘশ্বাস ফেলে রাকিবিল হাসানাত বললেন, “ঠিক তাই”। নিশু বলল, “এখন আমার কি করা উচিত? ” “কি করা উচিৎ? ” অনিশ্চিৎ মনে হল রাকিবিন হাসানাতকে, “একটা কাজই করতে পারো তুমি। মাথা ঠাণ্ডা রাখো।

এটাই তোমার প্লাস পয়েন্ট”। নিশু অপেক্ষা করতে লাগল। সময় মাত্র ছয় ঘন্টা। ৭ “আমার খুব ভয় করছে”। “ভয় করার কিছু নেই”।

“যদি ও সবাইকে মেরে ফেলে? ” “ফেললে ফেলুক। বাস্তবে তো তুমি মরছ না”। ‌ “এবারও যদি প্রথমজনের জন্য বিস্ফোরিত হবার মত দুর্ভাগ্য অপেক্ষা করে থাকে? ” “আরে বোকা, থাকুক না। পরাবাস্তবের কোন স্মৃতিই তোমার বাস্তবে আসবে না”। “আমার না ঐ পরাবাস্তবের আমার জন্য খুব মায়া লাগছে।

সে কত যন্ত্রণাই না সহ্য করেছে প্রথমবার”। “আহ! পাগলামি কোরো না। বললাম তো পরাবাস্তবে যা হবে সব পরাবাস্তবেই থাকবে। বাস্তবে তোমার কিছুই মনে থাকবে না”। নিশু বেশ অনিচ্ছার সাথে বিছানায় শুয়ে পড়ল।

তার হাতে একটা ইনজেকশন দেয়া হলে, সে টের পেল আস্তে আস্তে তার কেমন ঘুম ঘুম পাচ্ছে, কেমন যেন ভালে লাগার অনুভূতি হচ্ছে। জ্ঞান পুরোপুরি হারানোর আগে নিশুর আফসোস হল, “ইস, স্মৃতি চুরি করে নিয়ে আসার উপায়টা জানা হল না”। আর ঠিক তখনই তার মাথার পিছন দিয়ে ঘ্যাচ করে কি যেন ঢুকিয়ে দেয়া হল। প্রবল ব্যথায় জ্ঞান হারাল নিশু। ৮ চোখ খুলেই অ্যামান্ডা দেখল, সে বাথটাবের মত একটা পাত্রে শুয়ে আছে।

সে ডুবে আছে লালচে ধরণের একটা তরলের মধ্যে। তার হাত পিছন দিকে বাঁধা, পা-ও। হঠাৎ কানের কাছে একটা কণ্ঠ সচকিত হয়ে উঠল তার। সেই কণ্ঠ বলল, “হ্যালো অ্যামান্ডা"। অ্যামান্ডা চমকে উঠল।

যান্ত্রিক কণ্ঠ বলল, “তুমি হয়তো ভাবছ তুমি এখানে কেন। তুমি হচ্ছ ইন্টারপোলের আন্ডারকভার এজেন্ট অ্যামান্ডা। তোমার কাছে ইন্টারপোলের খুব গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য আছে। শত্রুরা যেই তথ্যটা তোমার কাছ থেকে বের করার জন্য প্রচণ্ড অত্যাচার করবে। কিন্তু তুমি কখনই সেটা বলবে না”।

তোমার চারপাশের ফ্লুইড লেভেল একটু পরেই আস্তে আস্তে বাড়তে শুরু করবে। এক সময় সেটা তোমার ফুসফুসে চলে যাবে। কিন্তু তোমার মনে রাখতে হবে, তুমি মৃত্যুযন্ত্রণা ভোগ করবে, তবু কোন তথ্য শত্রুদের দেবে না। এখান থেকে মুক্ত হতে সক্ষম হলে তোমার কাজ হবে অন্য এজেন্টদের হত্যা করা। কিছুতেই যেন তাদের মুখ থেকে তথ্যটা শত্রুরা না পায়।

সবাইকে হত্যা করে গোপনে তোমাকে পালিয়ে শত্রুপক্ষের বাঙ্কারে পৌঁছে শত্রুপক্ষের প্রধানকে পটিয়ে পাসওয়ার্ড বের করতে হবে। তারপর সেন্ট্রাল ডাটাবেস থেকে শত্রুদের সবার ডাটা মুছে দিতে হবে। ব্যস, মিশন সাকসেসফুল। একটা কথাই মনে রাখতে হবে তোমাকে। Do, even after you die।

গুড লাক”। যান্ত্রিক কণ্ঠের কথা হঠাৎ করেই থেমে গেল। অ্যামান্ডা টের পেল আস্তে আস্তে তার চারপাশের ফ্লুইড লেভেল বাড়ছে। অ্যামান্ডা হাত মোচড়ামুচড়ি করে বাঁধন খোলার চেষ্টা করল। সাথে সাথে কেউ একজন তার কপালে একটা পিস্তল চেপে ধরল।

সে বলল, “তুমি কে? ” অ্যামান্ডা কোন কথা বলল না। ফ্লুইড লেভেল বেড়ে অ্যামান্ডার নাকের কাছে চলে এল। “কে তুমি? এখানে কেন এসেছ? কি জানো তুমি? ” ফ্লুইড নাকের ভিতর প্রবেশ করতে শুরু করেছে। অ্যামান্ডা অনেক কষ্টে দম আটকে রেখেছে। “কিছু না বললে এভাবে আস্তে আস্তে পানি ঢুকবে তোমার ফুসফুসে।

তুমি কাশবে, কিন্তু তার বিনিময়ে আরো বেশি পানি ঢুকবে তোমার ফুসফুসে। ভয়াবহ কষ্টে মারা যাবে তুমি”। অ্যামান্ডা আরেকটু হলে বলেই দিচ্ছিল তার পরিচয়। এই প্রচণ্ড যন্ত্রণা সহ্য করার ক্ষমতা তার ছিল না। কিন্তু শেষমুহূর্তে যান্ত্রিক কণ্ঠের কথা মনে পড়ে যায় তার।

তুমি মৃত্যুযন্ত্রণা ভোগ করবে, তবু কোন তথ্য শত্রুদের দেবে না। অ্যামান্ডা বাতাস নেবার জন্য মুখ খোলে। ফ্লুইড সরসর করে তার ফুসফুসে চলে যায়। প্রচণ্ডভাবে কেশে ওঠে অ্যামান্ডা। ঠিক এই সময় একটা গুলির শব্দ হয়।

অ্যামান্ডার কপালে পিস্তল ধরা মানুষটা পড়ে যায়। একজন শতচ্ছিন্ন পোষাক পরা সামরিক অফিসার এসে বলে, “ইস, এরা কি হাল করেছে তোমার! তুমি তো আর একটু পরেই মারা যাবে। তাড়াতাড়ি তোমার মিশন পাসকোডটা বল, আমিই শেষ করব তোমার মিশন। তোমার মিশন শেষ করার দায়িত্ব ইন্টারপোল আমাকেই দিয়েছে। তাড়াতাড়ি, ওরা আসছে”।

অ্যামান্ডার ফুসফুস যেন পুড়তে শুরু করে। তার ফ্লুইড লেভেল চোখের উপর চলে আসে। জ্বালা করে প্রচণ্ড। অ্যামান্ডা দাঁতে দাঁত চেপে যন্ত্রণা সহ্য করে। সে কাউকেই বিশ্বাস করে না।

আন্ডারকভার এজেন্টদের রুল একটাই। সুপিরিয়র অফিসার ছাড়া আর কাউকে সে বিশ্বাস করবে না। পোড়ানো অনুভূতিটা এবার অ্যামান্ডার সারা শরীর অধিকার করে নেয়। প্রবলভাবে কাঁপতে থাকে তার সারা শরীর। ঠিক তখনই সে যেন দেখে এক রক্তাক্ত যুবক তার পাশে শুয়ে আছে, একটু পরেই আরেক রক্তাক্ত যুবতী এসে তার সাথে চুম্বনে লিপ্ত হল।

অ্যামান্ডার খুব পরিচিত মনে হয় যুবককে। খুব পরিচিত। আর তারপরেই, চোখ বুজে আসে তার। এটা কি তবে মৃত্যু? ভাবে অ্যামান্ডা। *** একটু পরেই ফ্লুইড লেভেল নেমে যায় অ্যামান্ডার চারপাশ থেকে।

আর ঠিক তখনই আরেকজন অ্যামান্ডা তার কপালের দিকে পিস্তল তাক করে। “Hasta la vista, babe! ” হঠাৎ কাশতে কাশতে জেগে উঠে অ্যামান্ডা। আরেক অ্যামান্ডার সাথে চোখাচোখি হয় তার। পিস্তলধারী অ্যামান্ডা বলে, You’re tough. ট্রিপার টিপে দেবার আগমুহুর্তে কোথা থেকে যেন আরেকজন অ্যামান্ডা এসে পিস্তলধারী অ্যামান্ডার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। দুজনের ধস্তাধস্তিতে অ্যামান্ডাকে রাখা পাত্রটা কাত হয়ে অ্যামান্ডা মাটিতে পড়ে যায়।

“শুট হার”, তৃতীয় অ্যামান্ডা প্রথম অ্যামান্ডাকে বলে। অ্যামান্ডা পড়ে থাকা পিস্তলটা তুলে নেয়। তারপর পিস্তল তাক করে তৃতীয় অ্যামান্ডার কপাল বরাবর। “কি করছ তুমি? আমি তোমাকে বাঁচিয়েছি, শুট হার! ” অ্যামান্ডার মনে পড়ে যায় যান্ত্রিক কণ্ঠের কথা। যান্ত্রিক কণ্ঠ তাকে বলেছিল, এখান থেকে মুক্ত হলে তোমার কাজ হবে অন্য এজেন্টদের হত্যা করা।

যাতে ওদের কাছ থেকে কোন তথ্য শত্রুরা না পায়। অ্যামান্ডা বলে, “Only one of us is to live.” তৃতীয় অ্যামান্ডা বলে, “মিথ্যা। This is a mission, remember? এটা আমাদের একসাথেই পার হতে হবে”। অ্যামান্ডা বলে, “তাহলে আমি তোমাকে না মেরে ওকে মারব কেন? ” তৃতীয় অ্যামান্ডা অধৈর্য হয়ে বলে, “তুমি বুঝতে পারছ না। ও অন্য সবাইকে খুন করে তোমাকে খুন করতে গিয়েছিল।

আমি বাঁধা না দিলে তুমিও মারা পড়তে”। অ্যামান্ডা শূণ্য দৃষ্টিতে ওদের দিকে তাকিয়ে থাকে। দ্বিতীয় অ্যামান্ডা বলে, “মিথ্যা আমি সবাইকে খুন করি নি। শুধু.....” অ্যামান্ডা পিস্তলের বাঁটের মোক্ষম গুঁতোয় দ্বিতীয় অ্যামান্ডাকে অজ্ঞান করে দিল। তৃতীয় অ্যামান্ডার চোখেমুখে অদ্ভুত একটা সারল্য আছে।

তাকে বিশ্বাস করা যায়। *** রাত। গহীন জঙ্গল। একটা গাছের নিচে গুটিসুটি মেরে শুয়ে আছে দুই অ্যামান্ডা। গল্পের প্রয়োজনে আমরা আগের সাথে তাল মিলিয়ে “প্রথম অ্যামান্ডা” ও “তৃতীয় অ্যামান্ডা” ব্যবহার করব।

প্রথম অ্যামান্ডা বলল, “আচ্ছা ওটা কি ছিল? ” তৃতীয় অ্যামান্ডা বলল, “কোনটা? ” “ঐ যে, ফ্লুইডটা। ওটা তো আমার ফুসফুসে গেল, তবু আমি মরলাম না কেন? ” “কারণ”, বলল তৃতীয় অ্যামান্ডা, “ওটা কোন সাধারন ফ্লুইড ছিল না। ওটা ছিল ডাই ক্লোরো ডাই ফ্লোরো কমপাউন্ড”। “ওটার বৈশিষ্ট্য কি? ” “ওটা মূলত অক্সিজেন ক্যারি করে। বাতাসের মত ওটা গ্রহণ ও ত্যাগ করেও শ্বাস নেয়া যায়”।

“তাই? ” “হ্যাঁ”। “দারুণ তো! এমন জিনিসও পৃথিবীতে আছে তা তো আমি জানতাম না”। “জানতে না! আচ্ছা, তোমার কি কোন সন্তান আছে? ” “না। কেন? ” “থাকলে বুঝতে। আচ্ছা এমনিই বুঝাই।

মানুষের বাচ্চা মায়ের পেটের ভিতর শ্বাস-প্রশ্বাসের কাজ চালায় কিভাবে এটা কি তুমি জানো? ” “কিভাবে? ” “অ্যামনিওটিক ফ্লুইডের মাধ্যমে। সেই ফ্লুইডের কাজটি হচ্ছে অক্সিজেন দেয়া ও কার্বনডাই অক্সাইড গ্রহণ করা। আর যেখান থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই এই অদ্ভুত যৌগ আবিষ্কৃত হয়েছে। “তাই? ” অবাক হয়ে যায় প্রথম অ্যামান্ডা। “ঠিক তাই”, বলে তৃতীয়জন, “এটা মূলত আবিষ্কার হয়েছিল শ্বাস নেবার জন্য বাতাসের অল্টারনেটিভ হিসেবে।

এখন এটার প্যাটেন্ট সামরিক বাহিনী নিয়ে নিয়েছে। এটা দিয়ে এখন অত্যাচার করে তথ্য করা হয়”। “কীভাবে? ” “কেন, একটু আগেই আমাদের সবার সাথেই তো এরকম করা হয়েছে। ফ্লুইড লেভেল বাড়তে থাকলে ভিকটিম মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে, মৃত্যুভয় তাকে আচ্ছন্ন করে ফেলে। নাক দিয়ে প্রথম যখন ফ্লুইড ঢোকে তখন ভিকটিম শিওর হয়ে যায় যে সে মারা যাচ্ছে।

মৃত্যু যন্ত্রণা থেকে বাঁচতে সে সুরসুর করে সব স্বীকার করে ফেলে”। “ডেঞ্জারাস তো! ” “হ্যাঁ, আসলেই ডেঞ্জারাস। তুমি আবার কিছু বলে দিয়েছ নাকি? ” “না তো”। “গুড”। কিছুক্ষণ তারা চুপ করে থাকে।

তারপর প্রথম অ্যামান্ডা বলে, “তোমার কোন আইডিয়া আছে শত্রুদের বাঙ্কার কোথায়? ” তৃতীয় অ্যামান্ডা বলে, “আছে”। প্রথম অ্যামান্ডা বলে, “কীভাবে? ” তৃতীয় অ্যামান্ডা বলে, “কারণ, আমি এই শত্রুশিবিরেই জন্মগ্রহণ করেছি। আমার বাবাকেই পটিয়ে পাসওয়ার্ড নিতে যাচ্ছি আমরা”। ***

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।