আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রহস্য/ভূতুরে/ভৌতিক/অতিপ্রাকৃতিক গল্পঃ আহসান হাবীব সাহেব এবং আগুন্তুক

যে মুখ নিয়ত পালায়......। ।

আহসান হাবীব সাহেব বাসে আছেন। দীর্ঘযাত্রায় আরাম করে বসাটা গুরুত্বপূর্ন। তাই তিনি যথেষ্ট আরাম করে বসেছেন।

আরামে বসার কারণে আশপাশে ভাল করে তেমন দৃষ্টি দিতে পারছেন না। ঘুম ঘুম লাগছে। তার এই আরাম অবস্থার অবসান ঘটল এক নিদারুণ প্রশ্নে, ভাই ম্যাচ হইব, ম্যাচ? প্রশ্নকর্তা মধ্যবয়সী ভদ্রলোক। মুখে সাদা খোচা খোচা দাড়ি। মাথাত একরাশ লম্বা কোকড়ানো চুল।

মুখের মধ্যে বেনসন এন্ড হেজেস ব্র্যাণ্ডের একটা সিগারেট প্রবেশ করানো। শুধু জ্বলে উঠার অপেক্ষায়। আহসান হাবীব সাহেব কঠোর মুখে বললেন, জি না। এমন চোখ আর মুখ করে বললেন যাতে তিনি মোটামোটি নিশ্চিত ছিলেন লোকটি আর কথা বলবে না। কিন্তু অবাক করে দিয়ে লোকটি কথা বলল, জনাব মিথ্যা বলবেন না।

মিথ্যা বলা মহাপাপ। আহসান হাবীব সাহেব রেগে গেলেন। লোকটি তাকে মিথ্যাবাদী বলছে! কত বড় সাহস! তিনি রাগে কটমট করে বললেন, আমি মিথ্যা বলেছি আপনাকে কে বলল?আমার কাছে ম্যাচ দিয়াশলাই এসব নেই। আমি সিগারেট খাই না। মধ্যবয়সী লোকটি সিগারেট মুখ থেকে বের করে ধোয়াঁ ছাড়ার ভঙ্গি করল।

তারপর মুচকি হেসে বলল, জনাব, একটা মিথ্যা আরেকটার জন্ম দেয়। আপনিই সিগারেট খান। ক্লাস টেন এ আপনাকে স্কুলের বাথরুমে সিগারেট খাওয়ার জন্য তিনশ বার কানে ধরতে হয়েছিল। তবুও জিনিশটা ছাড়তে পারেন নি। সবই তকদির! আহসান হাবীব সাহেব লোকটির কথা শোনে একটু হোচট খেলেন।

পিলে চমকে উঠলে যে অবস্থা হয় তার একই অবস্থা। এই লোকটি এতসব জানল কীভাবে! তিনি আমতা আমতা করে বললেন, আপনি এতসব জানলেন কীভাবে? লোকটি আবার মুখ থেকে সিগারেট বের করে ধোয়াঁ ছাড়ার ভঙ্গি করল। হাসি হাসি মুখ করে বলল, জনাবের কপাল ভাল সিগারেট খাওয়া কমিয়েছিলেন। নাহলে ফুসফুসটা পুরোই শেষ ছিল। আহসান হাবীব সাহেব আরো অবাক হলেন।

গতবছর তার ফুসফুসের অপারেশন হয়েছিল। একটুর জন্য বেচেঁ গেছেন। কিন্তু এই লোকটি জানল কীভাবে! তার মুখে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমা হতে লাগল। এই লোকটি কে! তিনি যে অফিসের তিনলাখ টাকা সরিয়েছেন তা ও কি জানে! আহসান হাবীব সাহেব মরিয়া হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কে? তার প্রশ্নটা আর্তনাদের মত শোনাল। লোকটি আগের মতই হেসে বলল, অফিসের ব্যাপারটার কথা ভাবছেন? ওটা ছেড়ে দিন।

এখন আপনার পাঞ্জাবীর বাম পকেটে যে দেয়াশলাইয়ের প্যাকেটে ১২৯ টা কাটি আছে, ওইটা থেকে আমাকে একটা দিন। আহসান হাবীব সাহেব ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে মন্ত্রমুগ্ধের মত পকেট থেকে দেয়াশলাইয়ের প্যাকেট বের করলেন। লোকটির মুখ হাসি হাসি। সে আবার বলল, জনাব গুনে দেখুন ১২৯ টা হয় কি না। প্যাকেট খুলে আহসান হাবীব সাহেব দ্রুত গুনতে লাগলেন।

তার পাতলা পাঞ্জাবী ঘামে ভিজে গেছে। তার গোনা শেষ হল ১২৮ এ গিয়ে,গোনা শেষ হতেই তিনি পাশের সিটের দিকে তাকালেন। কিন্তু সেখানে কেউ নেই। শুধু নিচে দেখতে পেলেন সিগারেটের ছাই, পোড়া অংশ, এবং একটি অর্ধেক জ্বলে যাওয়া কাটি।


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।