আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যৌন হয়রানির অভয়ারণ্য ও হকারদের দখলে ওভার ব্রিজ ও আণ্ডার পাসঃ ঢাকার ওভারব্রিজ ও আণ্ডার পাসের বর্তমান চিত্র

আমি সত্য জানতে চাই ঢাকা শহরের পথচারী অর্থাৎ যারা পায়ে হেটে চলাচল করেন তাদের জন্য বিশেষ করে রাস্তা পারাপারের জন্য নির্মান করা হয়েছে বেশ কিছু ফুটওভার ব্রিজ। পথচারীদের রাস্তা পারাপারের জন্য শুধু ওভারব্রিজ নয়, রোদ-বৃষ্টি থেকে রক্ষায় রয়েছে আন্ডারপাসও। ঢাকা সিটি করপোরেশনের সূত্র মতে, রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে নির্মান করা হয়েছে ৫১টি ওভারব্রিজ ও তিনটি আণ্ডার পাস। অভিযোগ রয়েছে, সঠিক ব্যবহার না হওয়া ২২ ফুট উচ্চতার এসব ওভারব্রিজ ও আণ্ডার পাস এখন ইভটিজারদের অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিত হয়েছে। তাছাড়া হকার ও ভিক্ষুকরাও দখলে রেখেছে এর অধিকাংশ জায়গা।

রাজধানীর প্রায় অধিকাংশ প্রধান সড়কে ওভারব্রিজ থাকা সত্ত্বেও জনসাধারণ রাস্তা পারাপার হচ্ছে ফুটওভারব্রিজের নিচ দিয়ে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে ওভারব্রিজের অবস্থান। পথচারী পারাপারে ওভারব্রিজ, আন্ডারগ্রাউন্ড ব্রিজ থাকলেও অনেকে তা ব্যবহার করেনা কারণ এর অব্যবস্থাপনা। জনগণ সাধারণত মোড়ের কাছের রাস্তা দিয়ে পার হতে চায়, যাতে সে যে কোনো ধরনের যানবাহন ধরতে পারে। কিন্তু অনেক জায়গায় ওভারব্রিজ দূরে থাকায় পথচারীরা নিচ দিয়ে পার হয়।

রাজধানীর গুলিস্তান, শাহবাগ, মতিঝিল, উত্তরা, বনানী, ফার্মগেট এবং মিরপুরে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ মানুষ ফুটওভারব্রিজ দিয়ে পারাপার না হয়ে ওভারব্রিজের নিচ দিয়ে পার হচ্ছে। ফলে প্রায় সময়ই দুর্ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে জনসাধারণকে। নগরীর বেশিরভাগ ওভারব্রিজ এখনও হকারদের দখলে। জনগণের চলার পথ যাতে সুগম হয় সে জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। অভিযোগ রয়েছে, নগরীর বিভিন্ন এলাকার ওভারব্রিজগুলো এখন ইভ টিজিংয়ের স্থান হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ওভারব্রিজ দিয়ে যাওয়ার সময় অনেক মেয়েই ইভ টিজিংয়ের শিকার হয়। এ জন্য কোনো মেয়ে একা ওভারব্রিজ পার হতে চায় না। ইভ টিজিংয়ের ভয়ে অনেক মেয়ে ফুটওভারব্রিজ দিয়ে রাস্তা পার হয় না। রাস্তা পার হতে তাই অনেকে বাধ্য হয়ে ওভারব্রিজের নিচ দিয়ে চলে। পাশাপাশি ওভারব্রিজের প্রায় অর্ধেকটা জুড়ে বাহারি পসরা সাজিয়ে বসেছেন হকাররা।

ফলে অনেকেই এসব ফুটওভারব্রিজ দিয়ে পার হতে ভয় পান। ওভারব্রিজের অর্ধেকটাই এখন হকার আর ভিক্ষুকদের দখলে। চাপাচাপি করে হাঁটতে হয়। এ কারণে হয়রানি এড়াতে ঝুঁকি নিয়ে হলেও নিচ দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছেন অনেকে। তাছাড়া অধিকাংশ রাস্তার মধ্যে রেলিং না থাকায় অতি সহজেই ঝুঁকি নিয়ে জনসাধারণ রাস্তা পার হচ্ছে।

অন্যদিকে রাস্তা পারাপারে ফুটওভারব্রিজ ব্যবহার না করে রাস্তা পার হলে যে জরিমানার আইন রয়েছে তার বিন্দুমাত্র প্রভাব জনসাধারণের মধ্যে পড়ছে না নগরীতে ৫১টি ফুট ওভার ব্রিজের মতো ৩টি আন্ডারপাস থাকলেও বেশিরভাগ জনগণ তা ব্যবহার করেন না। অথচ এগুলো নির্মাণের মূল লক্ষ্যই হলো পথচারীদের নিরাপদে রাস্তা পারাপার হওয়া নিশ্চিত করা। রাজধানীর কারওয়ানবাজার, গুলিস্থান ও গাবতীলতে তিনটি আন্ডারপাস থাকা সত্বেও সবসময় দেখা যায় রাস্তা দিয়ে অসংখ্য পথচারী পারাপারের দৃশ্য। এর মূল কারণ পাতালপথের পরিবেশ বেশ নোংরা। একশ্রেণীর ভাসমান মানুষ আন্ডারপাসের ভিতরে মল-মুত্র ত্যাগ করায় দুর্গন্ধে বিরক্তিতে পড়েন পথচারীরা এ কারণে ওখান দিয়ে যেতে চায়না।

অবশ্য কাওরান বাজারের পাতাল পথটি এখন আধুনিকায়ন করায় এর পরিবেশ বর্তমানে অনেক ভালো। গুলিস্তানের পাতালপথটি মূলত পাতালপথ না পাতাল মার্কেট তার বুঝবার উপায় নাই। গুলিস্তানের আন্ডারপাস এখন ইলেকট্রনিক মার্কেট হিসেবে পরিচিত। এসব দোকানের ক্রেতা ও মালামালের কারনে পথচারী পারাপারে বিঘ্ন ঘটে। রাজধানীর গাবতলী বাসষ্ট্যান্ড সংলগ্ন আন্ডারপাসটিতেও দেখা যায় অপরিচ্ছন্ন নোংরা পরিবেশ।

তাছাড়া বেশিরভাগ সময় এ আন্ডারপাসটি অন্ধকারচ্ছন্ন থাকায় পথচারীরা মুল সড়ক দিয়েই রাস্তা পার হন। এতেই প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার ঝুকি বাড়ায়। এক্ষেত্রে আইন আরও কঠোর হওয়া উচিত। আমাদের প্রশাসন যতদিন তৎপর হবে না ততদিন এ অবস্থার উন্নয়ন হবে না। তাই আইন আরওকঠোর হওয়া প্রয়োজন।

রেডিও, টেলিভিশন ও সংবাদপত্রের মাধ্যমে প্রচার বাড়াতে হবে। পাশাপাশি ছেলেবেলা থেকেই একজন নাগরিক যাতে এ ব্যাপারে সচেতন হয় সে জন্য একাডেমিক পড়াশোনার বিষয়টা অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। শুধু পথচারীদের শাস্তি দিলে সমস্যার সমাধান হবে না। এর সঙ্গে জড়িত যানবাহন, ট্রাফিক ব্যবস্থা সবকিছুই আইনের আওতায় আনতে হবে। তবে আইনটা আসতে হবে পর্যায়ক্রমে।

তাছাড়া ফুটওভারব্রিজে কো্ন অপরাধ বা যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সংশ্লিষ্ট ট্রাফিক পুলিশকে জানানো উচিৎ।  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।