বুধবার রংপুরের পীরগঞ্জে মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এক জনসভায় তিনি বলেন, তার বাবা পীরগঞ্জকে ভালবাসতেন। মাও ভালবাসেন। তিনি পীরগঞ্জের সন্তান। তাই এখানে বারবার ফিরে আসবেন।
রংপুরের আঞ্চলিক ভাষায় জয় বলেন, “মুই ফিরি আসিম, বারবার ফিরি আসিম।
”
পীরগঞ্জের উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “গতবার নির্বাচনের সময় আমি এখানে এসে ওয়াদা করেছিলাম আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে পীরগঞ্জের উন্নয়ন হবে। অনেকগুলো পূরণ হয়েছে। ”
বাকিগুলো পূরণ করার জন্য আবারো আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী তনয়।
এর আগে করতোয়া নদীতে নির্মিত ওয়াজেদ মিয়া সেতুসহ কয়েকটি স্থাপনা উদ্বোধনের জন্য ছেলে-মেয়ে ও নাতি-নাতনি নিয়ে রংপুরে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেতু উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী ও ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় পীরগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য দেন।
জনসভায় সজীবকে এবারের নির্বাচনে পীরগঞ্জে প্রার্থী করতে স্থানীয় নেতাদের দাবির মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “সময় হলে সব জানতে পারবেন তারা। আওয়ামী লীগ সব সময় রংপুরবাসীর পাশে আছে, জয়ও থাকবে। ”
বিয়ের পর স্ত্রী ক্রিস্টিনা ওভারমায়ারকে সঙ্গে নিয়ে রংপুরে গ্রামের বাড়িতে জয়ের এটাই প্রথম সফর। প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে সায়মা হোসেন পুতুল ও তার স্বামীও রংপুরে এসেছেন।
তাদের এই সফর উপলক্ষে পীরগঞ্জের ফতেহপুরে প্রধানমন্ত্রীর শ্বশুরবাড়ি মিয়া বাড়িকে সাজানো হয়েছে নতুন সাজে।
আশেপাশের এলাকায় নেয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তা।
হাসিনা জনতার উদ্দেশে বলেন, “আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন হয়। স্বাস্থ্যসেবা পায়, শিক্ষার হার বাড়ে। কৃষক উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য পায়, সার পায়। মঙ্গা হয় না।
আর বিএনপি ক্ষমতায় এলে হত্যা, লুট, ষড়যন্ত্র ও জঙ্গিবাদের উত্থান হয়। মানুষ না খেয়ে মরে। সার আনতে গিয়ে কৃষক গুলি খেয়ে মরে। ”
খালেদা জিয়ার দুই ছেলের দুর্নীতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তারা কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। আমরা তাদের ধরেছি।
বিচার শুরু হয়েছে। ”
হেফাজতে ইসলামের পেছনে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী রয়েছে দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, “যারা ইসলামকে হেফাজতের নামে মসজিদে আগুন দেয়, কোরআন শরীফ পোড়ায়, তারা কোন ইসলাম কায়েম করতে চায়?”
মসজিদে যারা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে তাদের প্রতিহত করারও আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্যদের বহনকারী হেলিকপ্টারটি বেলা সাড়ে ১২টার দিকে মিয়া বাড়ির কাছেই নির্মিত অস্থায়ী হেলিপ্যাডে অবতরণ করে। সেখান থেকে মোটর শোভাযাত্রা করে তারা বাড়ির ফটকে পৌঁছান।
বেলা ১২টা ৫৫ মিনিটে বাড়ি পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার দেয়া হয়।
সেখান থেকে পুত্র-পুত্রবধূসহ অন্য স্বজনদের নিয়ে তিনি স্বামী ওয়াজেদ মিয়ার কবর জিয়ারতে যান। পরে পাশের ফতেপুর কমিউনিটি ক্লিনিক পরিদর্শন করেন।
এরপর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শ্বশুর বাড়িতে যান। সেখানে জয় সদনে সজীব ওয়াজেদ জয়ের স্ত্রীকে সাদামাটাভাবেই বরণ করা হয়।
বাড়িতে বিশ্রাম নিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কুশল বিনিময় শেষে উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত ওই জনসভায় যোগ দেন তারা।
জনসভাস্থল থেকেই প্রধানমন্ত্রী কাঁচদহঘাটে করতোয়া নদীর ওপর নির্মিত ওয়াজেদ মিয়া সেতু, জেলা পরিষদ ডাকবাংলো এবং রংপুর নগরীতে নির্মিত আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস উদ্বোধন এবং কয়েকটি উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ভিত্তিস্থাপন করেন।
পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোতাহারুল হক বাবলুর সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু প্রমুখ বক্তব্য দেন।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ২০০৮ সালে রংপুর-৬ পীরগঞ্জ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বর্তমান মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর পীরগঞ্জে এটি তার তৃতীয় সফর। সর্বশেষ ২০১২ সালে ২০ সেপ্টেম্বর তিনি রংপুরের কাউনিয়ায় তিস্তা সেতুর উদ্বোধন করেন।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, ২০১১ সালে ৮ জানুয়ারি রংপুরে প্রথম সফরে এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৬টি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এর মধ্যে চারটি পূর্ণ বাস্তবায়ন হয়েছে এবং দুটির কাজ চলছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।