© শিবলী
“ষ” এটা কি? প্রশ্নটা অদ্ভুত আসলেই অদ্ভুত এটা একটা বাংলা অক্ষর বা হরফ। আমি এইটাকে বলি “পেট কাটা মূর্ধন্য স”। এই অংশটুকু পর্যন্ত যারা পড়েছেন তাদের মনে হতে পারে এইটা আবার কোন জাতের রাম ছাগল ! বাংলা হরফ চেনাচ্ছে। আসল ঘটনাটা হল এই অক্ষর টাকে নিয়ে। তার আগে কিছু ফালতু বিষয় নিয়ে পোষ্টাকে পচাই।
খাগড়াছড়িতে আমার আসা হল প্রায় ৪ বছর আর এসেই আমি ভর্তি এই সরকারি স্কুলে। সরকারি স্কুল গুলোর অবস্থা যা হয় এটার অবস্থাও তাই ভালো খারাপ মিসিয়ে সব ছাত্র-ছাত্রী এর বেশীর ভাগই মিডিল ক্লাস ছাত্র-ছাত্রী। এই খানে আমি শত চেষ্টা করেও প্রথম হতে পারি নাই । তবে অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে হক আর যেই কারণেই হয় রোল ৫ এর মধ্যেই ছিল। আমার স্কুলে আমার একটা বড় পরিচয় হল “লম্বু কম্পিউটার বিজ্ঞানী” আর ভালো ছেলে ।
আমি সাইজে বেশ বড় এবং মাঝে মাঝে মারামরিও করি কিন্তু তারপরও ভালো শান্ত ছেলে হিসেবে শিক্ষকরা আমাকে চেনেন।
যাই হক সামনে ২০১২ সালে SSC পরীক্ষায় এইবার আমাদের ম্যাডাম ১০০% পাস এবং ৫০% A+ দেখতে চান তার ফলশ্রুতি হিসেবে কোচিং শুরু করলেন বেশ আগে থেকেই। মানে জানুয়ারির ২য় সপ্তাহ থেকেই নতুন ২ জন নতুন অনার্স মাস্টার্স টিচারও যোগ দিলেন তার মধ্যে বাংলায় একজন ম্যাডাম এবং ভৌত বিজ্ঞান এর একজন স্যার।
প্রথম দিকের কোচিং ক্লাস বেশ ভালোই কাটল এবং পরের সপ্তাহে নতুন ম্যাডাম ক্লাসে হাজির এসেই বাংলা ব্যাকরণ সম্পর্কে একটা জলময়ী বক্তিতা দিলেন ম্যাডামের বয়স কম (২২-২৪) কণ্ঠ সুন্দর তাই বক্তিতা শুনতে খারাপ লাগলো না। যদিও আনসারে পানসরে আমাদের বাংলা স্যারের এবং আমাদের চৌদ্দ গুষ্ঠি উদ্ধার করলেন কিছু জানানে বলে বলে।
হটাৎ করে আমাকে দাঁড়া করিয়ে বলেন, “বিষ বানান কর দেখি”। আমি দশম শ্রেণীর ছাত্র বিষ বানানে আটকানোর কথা নয় তাই বললাম, “ব’য়ে ই-কারে বি আর পেট কাটা মূর্ধন্য স” এই হল আমার জন্য কাল। উনি শুদ্ধ ব্রিটিশ উচ্চারণে বললেন “গেট আউট ফর্ম দ্যা ক্লাস”। আমার তো প্রথমে বিশ্বাস হল না। পরে বুঝলাম ক্লাস থেকে বের হয়ে যেতেই হবে।
আমার ক্লাস থেকে বের হয়ে যাবার সময় কারও কারও চোখে করুণা এবং কয়েক জনের চোখে কৌতুক ঝিলিক দিচ্ছে।
বাইরে এসে আমার ভুলটুকু আমি পরিষ্কার ভাবে বুঝতে পারলাম “পেট কাটা” বলাই হয়েছে আমার ভুল! ১৪ বছর বয়সী দশম শ্রেণীর কোন ছাত্র যদি এই ধরনের ভুল করে তবে কি তাকে এত বড় শাস্তি দেয়া যায়? উনার কি জানা নেই যে আমি বাংলায় অনার্স মাস্টার্স নই!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।